২০০৫-১৪ ভিসা পাননি কেন? মোদির সফরে আমেরিকার রাস্তায় হোডিং, কটাক্ষ বাইডেনকে

আমেরিকা সফরে গিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী(PrimeMinister) নরেন্দ্র মোদিকে(Narendra Modi)।নিউইয়র্কের রাজপথে পড়ল একের পর এক হোর্ডিং। নরেন্দ্র মোদি ছবি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ্য করে লেখা হলো, ২০০৫ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কেন আমেরিকায়(America) মোদিকে নিষিদ্ধ করা হয় ? উত্তর, ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করে দাঙ্গা লাগানোর জন‍্য। নীচে লেখা হয়েছে, মোদি-ই একমাত্র যাকে ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, সাম্প্রদায়িক অশান্তি পাকানোর দায়ে নিষিদ্ধ করা হয় এবং মার্কিন ভিসা দিতে অস্বীকার করা হয়। একেবারে শেষে লেখা হয়েছে হ‍্যাসট‍্যাগ ক্রাইম মিনিস্টার অব ইন্ডিয়া। পাশাপাশি ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ওয়াশিংটনে ন‍্যাশানাল প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সন্মেলন করে ইন্টার ন‍্যাশানাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম বা আইআরএফ এবং ইউএস কমিশন অন ইন্টারন‍্যাশানাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম বা ইউএসসিআইআরএফ। সব মিলিয়ে মার্কিন সফরে বেশ চাপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

আইআরএফ এর তরফে জানানো হয়েছে,মোদির আমলে ভারতে যে ভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতায় রাষ্ট্রের মদতে আঘাত হানা চলছে তাতে চুপ করে বসে থাকতে পারে না আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট মোদির সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলুন এবং মোদি সরকার এ ব‍্যাপারে কি পদক্ষেপ করছে তা জানতে চান। বস্তুত, গতকাল-ই ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দেন মার্কিন কংগ্রেসের ৭৫জন সদস‍্য। শুধু চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানানোই নয়, তাঁরা দাবি করেছেন মোদির সঙ্গে বৈঠকের সময় বিষয়টি তুলুন বাইডেন এবং আমেরিকা যে মানবাধিকার লঙ্ঘন, ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, বিরোধী মত দমনের মত বিষয় গুলির তীব্র নিন্দা করছে এবং তা বরদাস্ত করবে না তা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে লেখা চিঠিতে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে যে ভারতকে গোটা বিশ্ব চেনে সেখানে সাম্প্রতিক এমন কিছু ঘটনা ঘটছে যা অত‍্যন্ত উদ্বেগজনক এবং মানবাধিকারের ক্ষেত্রে বিপদজনক। ধর্মীয় স্বাধীনতা যা কিনা মৌলিক অধিকার বলে স্বীকৃত সেখানে অযাচিত হস্তক্ষেপ চলছে। একটি বিশেষ ধর্মের আগ্রাসন চলছে, যা বিপদজনক প্রবণতা। রাজনৈতিক পরিসর ক্রমশ সংকীর্ণ হচ্ছে, বিরোধী মতকে দমনের চেষ্টা চলছে, যা গণতন্ত্রের পক্ষে মোটেই স্বাস্থ‍্যকর নয়। এছাড়াও সংবাদমাধ‍্যম, যাকে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলে মনে করা হয় তার ওপর-ও আঘাত আসছে। সংবাদমাধ‍্যমকে অনেক সময় বাধ‍্য করা হচ্ছে বিশেষ ধরনের সংবাদ সম্প্রচার করতে, এখানেও সরকারবিরোধী সংবাদ পরিবেশনে বাধা দেওয়া হচ্ছে এমনকি সাংবাদিকদের ওপর হামলা হচ্ছে, তাদের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। সার্বিক ভাবে গত কয়েক বছরে এমন কিছু ঘটনা সামনে এসেছে যা ভারতের ভাবমূর্তির সঙ্গে সামঞ্জস‍্যপূর্ণ নয় এবং মানবাধিকারের পক্ষে অত‍্যন্ত হানিকর। এ ব‍্যাপারে আমেরিকা যে উদ্বিগ্ন তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট করুন এবং মোদি সরকার যাতে এ ব‍্যাপারে যথপোযুক্ত পদক্ষেপ করে তা নিশ্চিত করুন।

প্রসঙ্গত, গুজরাত দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক অশান্তি পাকানোর অভিযোগে মোদিকে ব‍্যান করে আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের অভিযোগ ছিল, গুজরাতের মুখ‍্যমন্ত্রী হিসাবে দাঙ্গা রোধে কোনও ব‍্যবস্থা নেননি তিনি। উল্টে তাঁর দল ভারতীয় জনতা পার্টি, আরএসএস এবং গুজরাতের প্রশাসন দাঙ্গায় মদত দিয়েছে। মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে। পরবর্তী সময়ে নিজের গায়ে লেগে থাকা সাম্প্রদায়িক তকমা তোলার চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। বরং ভারতে বাড়তে থাকা ধর্মীয় সন্ত্রাস ফের তাকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলল সেই আমেরিকাতেই।

Previous article৮০০ চেয়ে মিলল ৩১৫ কোম্পানি! পঞ্চায়েতে বাহিনী নিয়ে এবার বিজেপিকে তো.প তৃণমূলের
Next articleডা: প্রজ্ঞাদীপার অস্বাভাবিক মৃ.ত্যুতে গ্রেফ.তার লিভিং পার্টনার সেনাবাহিনীর চিকিৎসক কৌশিক