স্বামীর নামে সম্পত্তিতে সমান অধিকার গৃহবধূরও

সংসারে স্বামীর চেয়ে কোনওঅংশেই কম নন গৃহবধূরা।স্বামী রোজগার করে আনলেও বাড়ির সমস্ত কাজই করতে হয় গৃহবধূদের। তাই স্বামীর নামে কেনা সম্পত্তির অর্ধেক অধিকার গৃহবধূ স্ত্রীরও, রায় দিল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। ২১ জুনের এই রায়ে বিচারপতি কৃষ্ণন রামস্বামী বলেছেন, স্বামী নিজের নামে যত সম্পত্তি কিনবেন, তার অর্ধাংশের অধিকার গৃহবধূ স্ত্রীর থাকবে।

আরও পড়ুনঃ1:1 ফর্মুলায় যেতে রাজি নয় CPIM! সিমলা বৈঠকে ‘পার্টি লাইনে’র পক্ষে সওয়াল পরিকল্পনা ইয়েচুরির

আদালতের পর্যবেক্ষণ, গৃহবধূরা বাড়ির সমস্ত দায়দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে পারিবারিক সম্পত্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর উপরে বাড়ির খুঁটিনাটি ছেড়ে দিয়েই রোজগারের কাজে মন দেন স্বামী। সুতরাং সেই রোজগারে কেনা সম্পত্তিতে গৃহবধূর ন্যায্য অধিকার থাকে। এদিন বিচারপতি বলেন, ‘‘অনেক সময়েই দেখা যায়, সংসারের দিকে তাকিয়ে স্ত্রী চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। অথচ তার পর তিনি আবিষ্কার করেন, তাঁর নিজের বলতে কিছুই নেই।’’বিচারপতির রায়, সম্পত্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যাই হোক না কেন তা কেনা সম্ভব হয় যৌথ অবদানের ভিত্তিতেই।ফলে তার উপর স্বামীর যতটা অধিকার, স্ত্রীরও ততটাই অধিকার থাকবে।

জানা গিয়েছে, কান্নাইয়ান নায়ডু নামে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ১৯৬৫ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন বিদেশে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেই সময় দেশে থেকে গোটা সংসারের হাল ধরেন তাঁর স্ত্রী। কিন্তু কান্নাইয়ানের অভিযোগ, তাঁর উপার্জিত অর্থ দিয়ে যা সম্পত্তি কেনা হয়েছিল সেগুলি আত্মসাৎ করতে চাইছেন স্ত্রী। এমনকি সম্পত্তি হাতানোর জন্য অন্যদের সাহায্যও নিয়েছেন স্ত্রী, এমনটাই অভিযোগ আনেন কান্নাইয়ান।
২০০২ সালের দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে কান্নাইয়ানের স্ত্রী পালটা দাবি করেন, একা হাতে সংসারের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁর কেরিয়ার গড়া সম্ভব হয়নি। উলটে নিজের যাবতীয় গয়না ও সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়ে স্বামীর বিদেশযাত্রার খরচ জোগাড় করেছেন। স্বামীর উপার্জিত অর্থের পাশাপাশি তিনি নিজেও সেলাইয়ের কাজ করে রোজগার করেছেন। দু’জনের সম্মিলিত অর্থ দিয়েই সংসারের সম্পত্তি কেনা হয়েছে বলেই দাবি করেন তিনি। দুপক্ষের মতামত শুনে মাদ্রাজ হাইকোর্ট রায় দেয়, সংসারের যাবতীয় সম্পত্তিতে স্বামী এবং স্ত্রী দুজনেরই সমান অধিকার।