পঞ্চায়েত নির্বাচনে NHRC-র পর্যবেক্ষক নিয়োগ খা.রিজ, বিচারপতির ভ.র্ৎসনা আইনজীবীকে

রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে চেয়েছিল। সেই ব্যাপারে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও দেয় তারা। কিন্তু জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বক্তব্য ছিল, ২০১৮-র পঞ্চায়েত, ২০২১-র ভোট পরবর্তী সময়ে বাংলায় ভয়ঙ্কর ছবি দেখা গিয়েছিল। সেসব মাথায় রেখেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কিন্তু মানবাধিকার কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি ধুয়ে দিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবীকে। রাজ্য পঞ্চায়েত ভোটে তাদের দখলদারি নিয়ে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ,মহিলাদের উপর অত্যাচার সবচেয়ে বেশি হয় দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গে নয়।আইনজীবীকে বিচারপতি বলেন, আপনি কোথাও মহিলাদের উপর অত্যাচারের কথা উল্লেখ করেননি। কোনও এক সময় কি ঘটনা ঘটেছিল তাই নিয়ে আপনি কখনওই একটি রাজ্যকে কলঙ্কিত করতে পারেন না।

বিচারপতির প্রশ্ন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কী এর আগে অন্য কোনও রাজ্যে ভোটের সময় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে? জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যদি এইভাবে যে কোনও রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের কাজে বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে এটি গুরুতর নজির সৃষ্টি করবে।আপনি একটা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি।

বিচারপতি বলেন, প্রশ্নটা হল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কোনও সংস্থা বা সরকার দ্বারা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কুৎসা করার কাজে অপ‌ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা।আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আপনার রিপোর্টে কোনও ঘটনার উল্লেখ নেই শুধুমাত্র একটি মিডিয়া রিপোর্ট ছাড়া। এটা একটা ভয়ংকর নজির সৃষ্টি করবে যে এইভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ব্যবহার করা যেতে পারে! জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ব্যবহার করা হচ্ছে এরকম কোনও অনুমান না করা হলেও যেভাবে ক্ষমতার ব্যবহার হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে রাষ্ট্রের স্বশাসিত সংস্থাগুলো কোনভাবেই রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত না হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের আদালত হিসেবে সংবিধান রক্ষা করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট রাজ্যকে বদনাম করার জন্য কোনও সংস্থাকে যাতে ব্যবহার করা না হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। এখন দুটি কারণে অপব্যবহার করার স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। আপনি শুধুমাত্র ২০২১-এ এই রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কিছু ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন।অথচ যেখানে অন্য অনেক জায়গাতেই ভোটে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। আপনি ফ্রন্টলাইন নামে নির্দিষ্ট একটি ম্যাগাজিনের ধারণার ভিত্তিতে এটি করেছেন। ধারণার ভিত্তিতে বলছি কারণ, মিডিয়া ট্রায়াল হয়, এটা কোনও নির্ভুল প্রমাণ নয়।

হাইকোর্টে আবেদনে কমিশনের বক্তব্য ছিল, রাজ্য নির্বাচন কমিশন একটি স্বশাসিত সংস্থা। পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার হলে তারাই করবে। এখানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কোনওভাবেই তা করতে পারে না। নজরদারির কোনও এক্তিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নেই।

শুক্রবার বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে কমিশনের মামলার শুনানি ছিল। শুনানি শেষে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যকেই মান্যতা দেয় উচ্চ আদালত। জানিয়ে দেয়, নির্বাচনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে পারবে না। যার ফলে স্বস্তিতে নির্বাচন কমিশন।

Previous articleরুক্মিণীর জন্মদিনে তাঁর ‘অন্তঃসত্ত্বা’ লুক প্রকাশ্যে আনলেন দেব!
Next articleপ্রকাশিত একদিনের বিশ্বকাপের সূচি, কতগুলি ম‍্যাচ পেল ক্রিকেটের নন্দনকানন ইডেন?