Saturday, August 23, 2025

প্রতিবাদ করতে গিয়ে বা প্রতীকি বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।এমনকী, বিজেপির সঙ্গে কিছুটা দূরত্বও তৈরি হয়ে গেল বাংলার বিরোধী দলনেতার।জানা গিয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতীকি বিক্ষোভ, মামলা, প্রতিবাদ এই সব কিছু দল সমর্থন করলেও কমিশনের গেটে লাথি মারা দল সমর্থন করছে না। কেননা রাজ্যের নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। সেই সংস্থার গেটে লাথি মারা কার্যত সাংবিধানিক সংস্থাকে অপমান করারই সামিল বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও।

শনিবার শুভেন্দু নন্দীগ্রামে বসেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে হুমকি দিয়েছিলেন। তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল আগেই। বলেছিলেন দিল্লির কে কী ভাববে, অন্য কে কী বলবে জানার দরকার নেই৷ আমি একটা উদ্দেশ্য লক্ষ্য নিয়ে এসেছি৷ সেই লক্ষ্যে আমি অবিচল থাকব৷ তার জন্য আমাকে যা করতে হয়, করব৷ পতাকা নিয়ে বা পতাকা ছেড়ে, বাংলায় গণতন্ত্রকে বাঁচাতে আমি তাই করব৷’একই সঙ্গে বলেছিলেন সন্ধ্যা ৬টার সময়ে কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে তালা দিয়ে আসবেন।

কিন্তু সেই গোঁয়ার্তুমি দেখাতে গিয়ে কাঁটায় কাঁটায় ৬টায় না হলেও এদিন তিনি ৭টা নাগাদ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে যান। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বঙ্গ বিজেপির আরও ২ নেতা। সেই সময় কমিশনের গেটে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। যদিও সেই সময়ে কমিশনের কার্যালয়ের ভেতরে বেশ কিছু কর্মী ও আধিকারিক ছিলেন। তাঁরা কেন এসেছেন বা কার সঙ্গে দেখা করতে যান সেটাও সেখানে তাঁদের কেউ জিজ্ঞাসা করেননি। কমিশনের কোলাপ্সিবল গেটে আগে থেকেই একটি তালা কেউ বা কারা লাগিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। শুভেন্দু সেই সময় কিছুটা রেগে গিয়েই সেই গেটে লাথি মারেন ও গেট ধরে ঝাঁকাতে থাকেন। সেই সঙ্গে হুমকিও দেন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে।

শুভেন্দুর সেই কার্যকলাপ সংবাদমাধ্যমের দৌলতে রাজ্যজুড়ে মূহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। মজার কথা শুভেন্দুর সঙ্গে থাকা বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কাউকেই কিন্তু কমিশনের গেটে লাথি মারতে দেখা যায়নি বা গেট ধরে ঝাঁকাতে দেখা যায়নি। এমনকি তাঁরা কোনওরকম হুমকি ধমকিও দেননি। কার্যত সেই সময় তাঁরা ইচ্ছাকৃত ভাবেই শুভেন্দুরবাবুর থেকে যেন কিছুটা দূরত্ব তৈরি করে রেখেছিলেন। তাঁদের শরীরের ভাষাই বলে দিচ্ছিল ওই ভাবে কমিশনের গেটে লাথি মারা, গেট ধরে ঝাঁকানো বা কমিশনকে উদ্দেশ্যকে করে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তাঁরা পছন্দ করছেন না। ঘটনাটি যে বড়সড় বিতর্কের জন্ম দিতে চলেছে সেটা বুঝেই সম্ভবত তাঁরা গোটা বিষয়টিকে থেকে নিজেরা দূরত্ব তৈরি করে নেন। সেই ঘটনা আবার শুভেন্দুর চোখ এড়ায়নি। তাই একসময় দেখা যায় তিনি তাঁদের ওপরেও চেঁচামেচি জুড়ে দিয়েছেন।

সবমিলিয়ে যা পরিস্থিতি প্রতিবাদ দেখাতে গিয়ে শুভেন্দু যা করেছেন তা কার্যত সমর্থন করছে না তার দল। এটা বুঝতে পেরে খোদ বিরোধী দলনেতাও এবার মেপে পা ফেলার কথা বলেছেন ঘনিষ্ঠ মহলে।

 

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...
Exit mobile version