‘‘নন্দীগ্রামে ২ ঘণ্টা আলো বন্ধ করে দিয়ে কী হয়েছিল ভুলে গেলেন’’! বিধানসভার অধিবেশনে নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Shubhendu Adhikari) ধুয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার, পঞ্চায়েত ভোটে সংঘর্ষ ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী দল বিজেপির (BJP) আনা মুলতুবি প্রস্তাবের উপর বিধানসভায় আলোচনার অনুমতি দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banejee)। এর পরে তাঁর জবাবি ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেখানেই নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তুমুল আক্রমণ করলেন তিনি।

এদিন, দুপুরে বিধানসভা অধিবেশনে বক্তব্য রাখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে (Nandigram) ভোট গণনায় কারচুপির প্রসঙ্গ তুলে নাম না করে বিরোধী দলনেতাকেই নিশানা করেন মমতা। বলেন, ”নন্দীগ্রামের ঘটনা ভুলে গেলেন?” নন্দীগ্রামে ২ ঘণ্টা লোডশেডিং করে ফলাফল বদলানো হয়েছে। হারিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সেসব ঘটনা কি ভুলে গেলেন বিরোধী দলনেতা?

একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পঞ্চায়েত ভোটে ৭ জায়গায় অশান্তি হয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গায় নাম ছড়ানো হচ্ছে। মমতা প্রশ্ন তোলেন, ভোট যদি লুটই হয়, তাহলে বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধীরা জিতলেন কীভাবে? রাজ্যকে বদনাম করার চেষ্টা চলেছে বলে অভিযোগ করেন মমতা।

মুখ্যমন্ত্রীর কথার জবাব দিতে না পেরে, ভাষণের মাঝেই গোলমাল করেন বিজেপি বিধায়করা। এরপরই অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন তাঁরা। এদিন বিধানসভায় কার্যত বিজেপির হাটে হাঁড়ি ভেঙেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাকে অশান্ত করার বিজেপির গোপন পরিকল্পনা ফাঁস করে দিলেন বিধানসভার অন্দরে। দিল্লিতে আরএসএসের সঙ্গে বাংলার তিন বিজেপি নেতার গোপন বৈঠকে যেসব পরিকল্পনা করা হয়েছে সেই সব গোপন তথ্য হাতে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর। তা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১. জাতি এবং ধর্মের ভিত্তিতে বাংলার সমাজকে ভাগ করে দাও। তাতে আমরা আগামী নির্বাচনগুলিতে ফয়দা নিতে পারি। ২. মহিলা ও তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধকে বেশি করে হাইলাইট করতে হবে। যাতে তাদের সমবেদনা পাওয়া যায়। ৩. এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যাতে বাংলার সরকারের অবস্থা খুব খারাপ হয়। ৪. রাজবংশী, আদিবাসী, গোর্খা, মতুয়া এই বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করো। গন্ডগোল বাধাও। ৫. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে হবে। যাতে ২০২৪-এ এর ফয়দা তুলতে পারি আমরা। ৬. এমন দলকে ফান্ডিং করো যারা তৃণমূলের ভোট ভাগ করতে পারবে।

বিজেপির এই ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা ফাঁস করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এরা বাংলায় আগুন জ্বালাতে চাইছে। তাঁর সংযোজন রাজ্যে ১০টি কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে স্টিং অপারেশন করার চেষ্টা করছে বিজেপি। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্বের মনোনয়ন, নির্বাচন ও তার পরবর্তী অধ্যায়ের তথ্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের আশীর্বাদে আমরা জিতেছি। ওরা হার মানতে না পেরে কুৎসা করছে।
