বিরোধীদের অমত সত্ত্বেও লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাশ দিল্লি অর্ডিন্যান্স বিল!

রাজ্যসভার ভোটাভুটিতে (পক্ষে ১৩১-বিপক্ষে ১০২ ভোট) হেরে গেলেও দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চল শাসন সংশোধন বিল নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ তুলে ধরল ইন্ডিয়া জোট। সোমবার রাজ্যসভায় দুপুর ২টোর পর দিল্লি বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। মোট ৩৪ জন সাংসদ আলোচনায় বক্তব্য রাখেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিলটি পেশ করার পর প্রথম বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তৃণমূলের তরফে বক্তব্য রাখেন রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায়।

দিল্লি বিলে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার বা মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব করে আমলাতন্ত্রের গুরুত্ব বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। বিল নিয়ে যে সব দল কেন্দ্রকে সমর্থন করেছে তাদের সতর্ক করে দিয়ে কংগ্রেসের সিংভি বলেন, আজ যারা সমর্থন করছেন কাল তাঁদের উপরেও আঘাত আসতে পারে। এই বিল সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক। এই বিল দিল্লির মানুষ, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও বিধানসভাভিত্তিক গণতন্ত্রের ওপর আঘাত। দুই আমলার হাতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়ার তীব্র নিন্দা করেন তিনি।

তৃণমূলের তরফে মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় তুলে ধরে এই বিলের বিরোধিতা করেন। এই বিলকে সংবিধানবিরোধী বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই বিল অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর হাতে কোনও ক্ষমতা থাকবে না। অথচ গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলেন। সবার ওপরে মানুষ সত্য তাহার ওপরে নাই। ফলে মানুষের ইচ্ছাই সব। তিনি আরও বলেন, মানুষের ইচ্ছার প্রকাশ হয় নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে। সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব করে মানুষের ইচ্ছাকে লঘু করে দেওয়া হয়েছে। আপ সাংসদ রাঘব চাড্ডা বলেন, প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবানি দিল্লিকে পূর্ণ রাজ্যের স্বীকৃতি দিতে বিল এনেছিলেন। এই বিল তার উপর আঘাত। তাঁর প্রশ্ন, এমন কী হল, যার জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে যেতে হল?

বিলের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবং রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য রঞ্জন গগৈ-এর বক্তব্য চলাকালীন ‘মি টু’ আন্দোলনে গগৈয়ের নাম জড়ানোয় ওয়াকআউট করেন তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব, সপা সাংসদ জয়া বচ্চন, উদ্ধব ঠাকরে শিবিরের প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এবং এনসিপির বন্দনা চৌহান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, মোদিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বেড়ে উঠেও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংস করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোসুলভ আচরণ করছেন না। এদিন ফের রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাদানুবাদ হয় ডেরেকের। বিলের বিপক্ষে ভোট দিতে সোমবার হুইলচেয়ারে করে সভায় আসেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং।

আরও পড়ুন- অ.সুস্থতার কারণ দেখিয়েও মিলল না রেহাই! ফের আদালতে খারিজ অনুব্রতর আবেদন

Previous articleঅ.সুস্থতার কারণ দেখিয়েও মিলল না রেহাই! ফের আদালতে খারিজ অনুব্রতর আবেদন
Next articleহাওড়ার কুলগাছিয়ায় মর্মান্তিক পথ দু.র্ঘটনা! লেন ভেঙে গাড়িতে ধা.ক্কা ট্রেলারের, মৃ.ত ৩