২৪-এ এখান থেকে আমিই ভাষণ দেব: লালকেল্লাকে ভোট প্রচারের মঞ্চ বানালেন মোদি

‘মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়'(মোদি থাকলে সবই সম্ভব)। হ্যাঁ সত্যিই সম্ভব। না হলে স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চ লালকেল্লা হয়ে উঠতো না নরেন্দ্র মোদির ভোট প্রচারের মঞ্চ। দেশের উন্নয়ন ও আগামীর রূপরেখা তৈরির পরিবর্তে স্বাধীনতার ৭৭ তম বর্ষে লালকেল্লায় মোদির ভাষণের পরতে পরতে ছিল ক্ষমতার দম্ভ, আসন্ন ২৪-এর নির্বাচনকে নজরে রেখে প্রতিশ্রুতির বন্যা, এবং বিরোধীদের আক্রমণ, পরিবারবাদের কুফল ব্যাখ্যা। সবমিলিয়ে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ এই দিনে লালকেল্লাকে আপাদমস্তক নির্বাচনী প্রচার মঞ্চ বানিয়ে ফেলতে দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। ক্ষমতার মোহে অন্ধ নরেন্দ্র মোদি লালকেল্লা থেকে এদিন ঘোষণা করে দিলেন, “আগামী বছর ফের লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেব আমিই।”

লালকেল্লার মঞ্চ থেকে মঙ্গলবার পরিবারবাদ তুষ্টিকরণ ও দুর্নীতি ইস্যুতে বিরোধীদের তোপ দাগার পাশাপাশি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তিনিই যে প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন তা স্পষ্টভাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০১৯ সালে আপনারা আমায় সুযোগ দিয়েছিলেন। আমি এই পাঁচ বছর কঠোর পরিশ্রম করেছি। দেশ সর্বপ্রথম এটাই মাথায় রেখে আমি কাজ করেছি। আগামী পাঁচ বছর অভূতপূর্ব উন্নয়নই লক্ষ্য। ২০৪৭ এর স্বপ্নকে সাফল্যমন্ডিত করতে আগামী পাঁচ বছর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের আমি এখান থেকে জানিয়ে যাচ্ছি, আগামী বছর এই লালকেল্লা থেকে আমিই ভাষণ দেবো। দেশের উন্নয়নকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাব।” স্বাধীনতা দিবসের মন্ত্র থেকে মোদির এহেন বার্তাকে ঔদ্ধত্য ও ক্ষমতার আস্ফালন হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। একই সঙ্গে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দেন আগামী পাঁচ বছরে দেশকে বিশ্বের সেরা তিন অর্থনীতি দেশ হিসেবে গড়ে তুলবেন তিনি।

পাশাপাশি চেনা অঙ্কে মঙ্গলবার বিরোধীদের তোপ দাগতে পরিবারবাদ, তুষ্টিকরণ ও দুর্নীতিকে হাতিয়ার করেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, দেশের উন্নতির লক্ষ্যে সবচেয়ে বড় বাধা এই তিনটি বিষয়। এতকাল ধরে দেশে রাজনৈতিক দলগুলি পরিবারবাদ চালিয়ে গিয়েছে। দেশের উন্নয়নে এতকাল ধরে যা বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই বাধা সরাতে হবে। পাশাপাশি তুষ্টিকরণের রাজনীতি, দুর্নীতি না রুখতে পারলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে জানান মোদি। একইসঙ্গে মোদি বোঝান বিরোধীরা এই ৩ বিষয়ের উপর রাজনীতি করে। তবে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার মঞ্চকে এভাবে রাজনীতির মঞ্চ বানানোয় ক্ষুব্ধ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তাদের অভিযোগ, যে পরিবার বাদ নিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরব। এই পরিবার বাদ বিজেপির ভেতরে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে। নরেন্দ্র মোদি নিজে নিজের নেতাদের দেখুন, পরিবারবাদ সেখানে কতখানি। খোদ অমিত শাহের ছেলে জয় শাহর বিপুল সম্পত্তি বৃদ্ধি ও গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে থাকা পারিবারিক তুষ্টিকরণের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। আর দুর্নীতির কথাই যদি হয় তবে মোদির নীতি দুর্নীতির বিরোধিতা নয়, দুর্নীতিগ্রস্তদের নিজের দলে টেনে এনে তাদের দুর্নীতির কাজে ব্যবহার করা। দেশের সব বিরোধীদল গুলি থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের ডেকে নিজের দলে ভরেছেন উনি।

Previous articleনদিয়ায় কংগ্রেস সমর্থকদের বাড়ি লক্ষ্য করে গু*লি! আহ*ত শিশু -সহ ১৫ জন
Next articleশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং রুখতে কড়া মনোভাব মুখ্যমন্ত্রীর, জারি একগুচ্ছ নির্দেশিকা