Thursday, December 18, 2025

বেছে বেছে বিলকিসের গণধ*র্ষকদের মুক্তি কেন? গুজরাট সরকারের কাছে সওয়াল করল সুপ্রিম কোর্ট

Date:

Share post:

কেন সময়ের আগে বিলকিস বানোর গণধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হল? কিসের ভিত্তিতেই বা অভিযুক্তদের মুক্তি দেওয়া হল? এ প্রসঙ্গ নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতেও এই একই প্রশ্নের মুখে পড়ল বিজেপি শাসিত গুজরাট সরকার। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের কী ভাবে মুক্তি দেওয়া হল প্রশ্নে সঠিক উত্তর দিতে না পারায় সুপ্রিম কোর্টের কাছে কার্যত মুখ পুড়েছে মোদি-শাহের গুজরাট সরকারের।

আরও পড়ুনঃ বিলকিসের ধর্ষ.কদের মালা পরানোকে সমর্থন মোদি সরকারের ASG-র! তীব্র নিন্দা সবমহলে
এদিন শীর্ষ আদালত গুজরাট সরকারের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন, ‘‘অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়েছে। ১৪ বছর জেল খাটার পরই তাঁদের কী ভাবে ছেড়ে দেওয়া হল? অন্য বন্দিদের কেন ছেড়ে দেওয়া হল না? কেন এই অপরাধীদেরই (বিলকিস মামলায়) বেছে বেছে ছাড়া হল?’’ গুজরাট সরকারের কাছে সুপ্রিম কোর্ট আরও জানতে চায়, ‘‘জঘন্য অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যাঁরা, ১৪ বছর পর তাঁদের সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই নীতি কি বাকি বন্দিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? ভুল সংশোধন করার সুযোগ তো সকলেরই প্রাপ্য। এই সুযোগ কত জন পেয়েছেন? জেলগুলি কি উপচে পড়ছে? পরিসংখ্যান দিন।’’

বিলকিসের অপরাধীদের জন্য কিসের ভিত্তিতে জেল উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করা হয়েছিল, তা-ও গুজরাট সরকারের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে আদালত। মামলার শুনানি সেখানে না-হওয়া সত্ত্বেও গোধরা আদালতের মতামত চাওয়া হল কেন, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। গুজরাট সরকারের হয়ে সওয়াল করেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু। তিনি জানান যে, আইন মেনেই সকল অপরাধীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। রাজু আরও জানান যে, যে হেতু বিলকিসের ধর্ষকেরা ২০০৮ সালে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, তাই ১৯৯২ সালের নীতি বিবেচনা করা হয়েছে।

গত বছরের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাট সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী রাধেশ্যাম শাহ। আবেদনপত্রে তিনি জানিয়েছিলেন যে, ১৫ বছর চার মাস জেল খেটেছেন তিনি। তাই তাঁর সাজা মকুব করা হোক। এর পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য গুজরাট সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। ওই অপরাধীর সাজা মকুব করা হবে কিনা, সেই ব্যাপারে দু’মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পরই সব অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাট সরকার। কেন মেয়াদ শেষের আগে ১১ জন ধর্ষক এবং খুনিকে ছাড়া হল, এই নিয়ে বিতর্ক বাধে। বিতর্কের মধ্যেই গুজরাট সরকার জানায় যে, জেলে ওই ১১ জন ধর্ষক এবং খুনি ‘ভাল আচরণ’ করেছেন, সে কারণেই তাঁদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে। যদিও প্রতিপক্ষ দাবি করে, ওই ১১ জন বিভিন্ন সময় প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যখন জেলের বাইরে ছিলেন, তখনও তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছিল। ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম একাধিক আবেদন জমা পড়েছে। শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিলকিসও।

spot_img

Related articles

মানহানির অভিযোগে প্রাক্তন স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ কুমার শানু

সংগীতজগতে দীর্ঘ চার দশকের সাফল্যের কাহিনি থাকলেও ব্যক্তিগত জীবনের বিতর্কে ফের শিরোনামে কিংবদন্তি গায়ক কুমার শানু। প্রাক্তন স্ত্রী...

বড়দিন ও বর্ষবরণে আইনশৃঙ্খলা আঁটসাঁট, পুলিশের ছুটিতে নিষেধাজ্ঞা রাজ্য জুড়ে 

বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়ে গেল বড়দিনের উৎসব। কলকাতার অ্যালেন পার্ক থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের...

বাজেয়াপ্ত যুবভারতীর সিসিটিভি ফুটেজ, নজরে শতদ্রু ঘনিষ্ঠরা

যুবভারতীতে মেসি(Messi) ইভেন্ট চরম বিশৃঙ্খলায় তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য সরকার গঠিত সিট(SIT)। যুবভারতীর (Yubha bharati) যাবতীয় সিসিটিভি ফুটেজ...

সিইও দফতরের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী, শুক্রবার থেকেই মোতায়েন

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর নিরাপত্তায় এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী (central security force) মোতায়েন করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে...