বিলকিসের ধর্ষ.কদের মালা পরানোকে সমর্থন মোদি সরকারের ASG-র! তীব্র নিন্দা সবমহলে

২০০২ সালে গণহ*ত্যার সময় যখন বিলকিসের উপর এই নির্যা*তন হয়, তখন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি, যিনি আজ প্রধানমন্ত্রী।

“জেল থেকে ছাড়া পাওয়া একজনকে ফুল-মালা দিয়ে সংবর্ধনা দিলে সমস্যা কোথায়?” বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) ধর্ষকদের পক্ষ নিয়ে নির্লজ্জ সওয়াল মোদি সরকারের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু (ASG SV Raju)। গুজরাট সরকারের (Gujrat Government)  বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া নিয়েই প্রবল বিরোধিতা হয় দেশজুড়ে। তার মধ্যেই মালা পরিয়ে ধর্ষকদের বরণ করা হয়। ধর্ষকদের মুক্তির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের কোনও প্রভাব আইনি সিদ্ধান্তে ফেলবে না বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি বিভি নাগারত্ন ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়া। আইন আইনের পথেই চলবে। এই ‘সংবর্ধনা’র পক্ষ নিয়ে আদালতেই সওয়াল করলেন মোদি সরকার অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল। প্রশ্ন তুললেন, ধর্ষকদের মালা পরালে সমস্যা কোথায়? এই মন্তব্য নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে।

গত বছর ১৫ অগাস্ট ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে গুজরাট সরকার মুক্তি দেয়। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের জেল থেকে আগাম ছেড়ে দেওয়ার পর তাদের মালা পরিয়ে স্বাগত জানানো নিয়ে যাওয়া তীব্র সমালোচনায় সরব হয় নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলি। এই দৃশ্য নারী নিরাপত্তার পক্ষে তা কতটা বিপজ্জনক না নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়। কিন্তু নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় গুজরাট প্রশাসন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। বিচারপতি বিভি নাগর এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চে মামলার শুনানিতে জানান হল, গণ আন্দোলনে বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হবে না। আর সেই মামলাতেই কেন্দ্রে তরফে রাজু বললেন, “জেল থেকে ছাড়া পাওয়া একজনকে ফুল-মালা দিয়ে সংবর্ধনা দিলে সমস্যা কোথায়?” কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের এই মন্তব্য বিজেপি তথা মোদি সরকারের ঘৃণ্য মানসিকতার পরিচয় দেয় বলে মত বিরোধীদের।

শুনানিতে বিলকিস বানোর আইনজীবী শোভা গুপ্তা অভিযোগ করেন, এভাবে ধর্ষকদের আগাম মুক্তি সমাজের উপর কী প্রভাব ফেলেছে, তা বিবেচনাই করেনি বিজেপি সরকার। দোষীদের সামান্য অনুশোচনা পর্যন্ত দেখা যায়নি। অভিযোগকারীদের পক্ষের আরেক আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং বলেন বিলকিস বানোর ধর্ষকদের শুধু মালা পরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়াই নয়, এও বলা হয়েছে, ওরা ব্রাহ্মণ। তাঁরা এমন কোনও অপরাধ করতেই পারে না। অর্থাৎ এই জঘন্য অপরাধকেও অস্বীকার করা হচ্ছে। এর পরই এস ভি রাজু প্রশ্ন করেন, জেল থেকে কেউ ছাড়া পেলে তাকে মালা পরানো হলে ভুল কোথায়? সওয়াল-জবাবে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, গণ বিক্ষোভ বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে না। তারা শুধু আইনি প্রক্রিয়াকেই দেখবে। বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দেখে এগোব না। গণ বিক্ষোভ মানেই কি সিদ্ধান্ত ভুল পাল্টা প্রশ্ন তোলে আদালত।

গুজরাটের বিজেপি সরকার বিলকিস বানোর ১১ ধর্ষককে শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মুক্তি দেয়। তাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও আছে। ২০০২ সালে গণহত্যার সময় যখন বিলকিসের উপর এই নির্যাতন হয়, তখন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি, যিনি আজ প্রধানমন্ত্রী। এই ১১ ধর্ষককে ছেড়ে দেওয়ার আর্জিতে সম্মতি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক থেকেই চিঠি যায় গুজরাট সরকারের কাছে। ফলে কেন্দ্র চাইবে যেভাবেই হোক ধর্ষকদের আগাম মুক্তির নির্দেশই বহাল রাখতে। আর সেটা করতে যে কোনও রকম ন্যাক্কারজনক মন্তব্য করতেও মুখে আটকাচ্ছে না কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের।


 

 

 

 

Previous articleকান্তি আর “কাছের নয়”, ৪৪ বছর পর সিপিএম নেতার গড়ে পঞ্চায়েত দখল তৃণমূলের
Next articleপক্ষপাতিত্বের অভিযোগ, ধনকড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার পরিকল্পনা INDIA জোটের