চাঁদে ল্যান্ডার কিন্তু বিক্রমের মৃ.ত্যু আজও রহস্য!

জয়িতা মৌলিক: চন্দ্রযান-৩ মিশনের সাফল্য কে নেবে- তা নিয়ে জোর কাড়াকাড়ি। একদিকে মোদি সরকার। আবার একদিকে ইসরোর (ISRO) প্রতিষ্ঠার সময় থেকে দীর্ঘ বছর পর্যন্ত কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার। চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পর থেকেই বিজ্ঞানীদের ছাপিয়ে কৃতিত্বের ভাগ নেওয়ার দড়ি টানাটানি পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক দলের মধ্যে। অথচ যে বিক্রম সারাভাইয়ের (Vikram Sarabhai) নামে এই ল্যান্ডার চাঁদে নামল তাঁর মৃত্যু আজও রহস্যাবৃত। নির্জন বিচ রিসর্টে উদ্ধার হয় ইসরোর জনক বিক্রম সারাভাইয়ের দেহ। কিন্তু কোনও সরকারই তাঁর মৃত্যুর তদন্তের প্রয়োজনীয়তা বোধ করল না।

চন্দ্রযান-৩ মিশনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ল্যান্ডার বিক্রম। ইসরোর জনক বিক্রম সারাভাই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে মহাকাশ বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাবেন। তার নামেই এই ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৩০ ডিসেম্বর কোভালাম বিচে তাঁর প্রিয় রিসর্টের ঘরে রহস্যজনক ভাবে মারা যান এই মহাকাশ বিজ্ঞানী। এই মৃত্যুর কোনও তদন্ত হয়নি। অথচ বিক্রমের উপর যে হামলা হতে পারে তার আগাম খবর ছিল। বিজ্ঞানীর ঘনিষ্ঠ পদ্মনাভ জোশী জানিয়েছিলেন, বিক্রমের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বিমানে তাঁর সংরক্ষিত আসনের পাশের আসন ফাঁকা রাখা হত। রেলযাত্রার সময় একটা গোটা কুপ ওনার জন্য খালি রাখা হত। তাহলে কেন রিসোর্টে নিরাপত্তা জোরদার ছিল না!

যে সন্ধেয় বিক্রম মারা যান সে সন্ধের কিছু আগে বিখ্যাত স্থপতি চার্লস কোরিয়াকে সমুদ্র স্নান করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন তিনি। পরে অন্য বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করে, পরিবারের সঙ্গে ইংরাজি নববর্ষ পালন করতে আহমেদাবাদ যাবেন বলে পরিকল্পনা করেন। SLV ডিজাইন নিয়ে তিনি আলোচনা করেন আর এক বিজ্ঞানী এ পি জে আব্দুল কালামের সঙ্গে। তখনও অবশ্যই তিনি রাষ্ট্রপতি হননি। এই টেলিফোনিক কথাবার্তার এক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় বিক্রমের। ঘরেই উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ। শারীরিকভাবে একেবারেই সুস্থ ছিলেন বিক্রম সারাভাই। আপাতদৃষ্টিতে দেহে ছিল না আঘাতের চিহ্ন। তাহলে কেন মৃত্যু? তদন্ত হল না!

আমেরিকা ও রাশিয়া ওনার উপর নজর রাখছে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন বিক্রম। যে কথা তাঁর মৃত্যুর পর জানান আহমেদাবাদ আইআইএমে বিক্রমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কমলা চৌধুরী। বিক্রমের কন্যা এবং বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী মল্লিকা সারাভাই সে সময় সতেরো বছরের তরুণী। মুম্বইতে একটি শুটিং চলাকালীন বাবার মৃত্যুর খবরটা পান। তিনি ভেবেছিলাম তাঁর বাবা বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। কারণ বিক্রমের কোনও অসুখ ছিল না। কিন্তু মাত্র ৫২ বছর বয়সে এক প্রতিশ্রুতিবান বিজ্ঞানীর রহস্যমৃত্যু হয়। আর কেন্দ্রীয় সরকার একটা তদন্ত পর্যন্ত করেনি। ইসরোর সাফল্যের পিছনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল নিজেদের অবদানের কথা বলে বেড়াচ্ছে অথচ কেন বিক্রম ছাড়া ভাইয়ের মৃত্যু তদন্ত হল না সে বিষয়ে কোনও শব্দ নেই। আগের সরকারের আমলের অনেক বিষয়েরই তদন্ত করে পরবর্তী সরকার। কিন্তু বিক্রম সারাভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে কোন হেলদোল নেই কারও। মহাকাশের নানা রহস্যের মধ্যে এই মৃত্যুও এক রহস্য।

আরও পড়ুন:পথদু.র্ঘটনায় মৃ.ত্যু মায়ের,খবর পেতেই আত্ম.ঘাতী ছেলে

 

 

Previous articleপথদু.র্ঘটনায় মৃ.ত্যু মায়ের,খবর পেতেই আত্ম.ঘাতী ছেলে
Next articleমাদুরাই অ*গ্নিকাণ্ডে গ্রে*ফতার ট্যুর অপারেটর