কসবায় স্কুলছাত্রের রহস্যমৃ*ত্যুতে এ বার শিক্ষকদের তলব পুলিশের

কসবার স্কুলে ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় এ বার শিক্ষকদের তলব করল কসবা থানার পুলিশ। সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক সহ চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৃত ছাত্রের বাবা। সেই সূত্রেই জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সাক্ষী হিসাবে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে কসবা স্কুলের বেশ কয়েক জন শিক্ষককে। তবে বুধবার সকাল ৮টায় তাঁদের তলব করা হলেও নির্ধারিত সময়ে থানায় পৌঁছননি ওই শিক্ষকরা। স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক কী, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা।

আরও পড়ুনঃ কসবার স্কুলে ছাত্র মৃ*ত্যু, আজই যাচ্ছে শিশু সুরক্ষা কমিশন
গত সোমবার কসবার রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুলের বিল্ডিয়ের নীচ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্র শেখ শানের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। এর পরেই মৃত ছাত্রের বাবা শেখ পাপ্পু কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্কুলের প্রধানশিক্ষক, সহকারী প্রধানশিক্ষক এবং আরও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর ছেলেকে ‘মানসিকভাবে হেনস্তা’ করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষকরা। তাতেই মৃত্যু হয়েছে তার। এমনকি, স্কুল কর্তৃপক্ষ বছরখানেক আগে তাঁকে ‘চিনে রাখার’ হুমকি দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন মৃত ছাত্রের বাবা। যদিও মঙ্গলবার প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনায় খুনের প্রমাণ পাননি বরং আত্মহত্যারই ইঙ্গিত পেয়েছেন। বুধবার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কসবার ওই স্কুলে এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে যেতে পারে পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই চিকিৎসকই মৃত পড়ুয়া শানের দেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন। ঘটনাটি যেখানে ঘটেছিল,সেই জায়গাটি তিনি পরীক্ষা করে দেখবেন বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত,মঙ্গলবার সকাল থেকেই কসবার ওই স্কুলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল। সেখানে ঘটনাটির পুনর্নির্মাণও করা হয়। মাপজোক করেও দেখেন গোটা এলাকা। অন্যদিকে, ছাত্রের মৃত্যুর তদন্তের ঘটনায় আরও একটি তথ্য প্রকশ্যে আসে।পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এফআইআর দায়ের হওয়ার আগে সোমবার স্কুলের প্রিন্সিপাল একটি ইমেল পাঠিয়েছিলেন কসবা থানার ওসিকে। ওই ইমেলে বলা হয়েছিল, ‘‘একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। একটি ছাত্র ঝাঁপ দিয়েছে স্কুলের বারান্দা থেকে।’’ কেন ঝাঁপ তার কারণও জানানো হয়েছিল ইমেলে। তাতে লেখা ছিল, ‘‘ছাত্রদের অঙ্কের প্রজেক্ট দেওয়া হয়েছিল। সোমবার সেই প্রজেক্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। শেখ শান নামের এক ছাত্র প্রজেক্ট জমা না দেওয়ায় তার বাবাকে বিষয়টি জানানোর কথা বলেন শিক্ষক। পাল্টা সে শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এর পরে তাকে নিজেদের বিশ্রাম নেওয়ার ঘর স্টাফ রুমে ডেকে আনেন শিক্ষক। বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। ২ মিনিট পরে তাকে ক্লাসে চলে যেতে বলার পরেই ছাত্রটি হঠাৎ ঝাঁপ দেয়।’’
তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে তারা দেখেছে, স্কুলবাড়ির ছ’তলায় যেখানে বারান্দায় গ্রিল বসানোর কাজ চলছিল সেখানকারই করিডোরে সোমবার দুপুরে শেষ বার দেখা গিয়েছিল শানকে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই স্কুলের নীচে মেলে তার রক্তাক্ত দেহ। এই ঘটনায় তদন্তের যতই অগ্রগতি হচ্ছে ততই ছাত্র মৃত্যুর বিষয়টি আরও জটিল হচ্ছে।

 

Previous articleপার্থর জামিনের আবেদন শুনেই পিছিয়ে দিল হাইকোর্ট
Next articleস্ত্রীকে ছাড়াই জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে দিল্লি আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট