৩৪ বছরের সেই বাংলা বদলে গিয়েছে: রাজ্যের শিল্পপতিদের দেখিয়ে লগ্নির আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

 


কুণাল ঘোষ
মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী

বার্সেলোনা: ৩৪ বছরের বাম জমানা এখন ইতিহাস। আমূল বদলে গিয়েছে বাংলা। এখানে আজ শিল্পবান্ধব পরিবেশ। সবরকম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় রাজ্য সরকার। মাদ্রিদের সফল শিল্প বৈঠক সম্মেলন সেরে রবিবার বার্সেলোনায় প্রবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পপতিদের বাংলায় লগ্নির আহ্বান জানিয়ে বদলে যাওয়া বাংলার ছবি তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে সফররত বাংলার শিল্পপতিদের সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললেন, এঁদেরই জিজ্ঞাসা করুন, রাজ্যে শিল্প করতে এঁদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না! একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবার থেকে বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে দেওয়া হবে ‘বিশ্ববাংলা পুরস্কার’। বার্সেলোনার দুর্গাপুজোয় চাইলে ‘বিশ্ববাংলা লোগো’ ব্যবহার করতে পারেন প্রবাসী বাঙালিরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিখ্যাত গণিতজ্ঞ কেশবচন্দ্র নাগের প্রপৌত্র নিজের পরিচয় দিতেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে প্রশ্ন করেন, কলকাতায় তোমাদের ওখানে যে কেউ থাকে এতদিন আমি সেটাই বুঝতে পারিনি। তোমরা হেরিটেজের জন্য অ্যাপ্লাই কর না কেন? সেই বাড়ি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছেই। কেশব নাগের বাড়ির হেরিটেজ স্বীকৃতির জন্য কলকাতা পুরসভার কাছে আবেদন করার পরামর্শ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, আমি সব ভাষাকে সম্মান করি। পাহাড় থেকে জঙ্গলমহল, আদিবাসী ভাষা, সাঁওতালি ভাষা- সমস্ত ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। বাংলায় বিভিন্ন বর্ণ-ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষ সৌহার্দ্যের পরিবেশে থাকেন। যেমন এক একটা অঙ্গ নিয়ে সম্পূর্ণ মানবদেহ তৈরি হয়, তেমনই বিভিন্ন ভাষাভাষী- সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়েই সম্পূর্ণ আমাদের বাংলা।

বার্সেলোনার বেঙ্গলি কালচারাল কমিউনিটির সভাপতি সঞ্জয় দাশগুপ্ত মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, তাঁরা বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানে দুর্গাপুজো চালু করেছেন। নিজেদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ধরে রাখার পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্মকে বাংলা সম্পর্কে জানাতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। মুখ্যমন্ত্রী সেই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ঘোষণা করেন, চাইলে তাঁরা বিশ্ববাংলার লোগো ব্যবহার করতে পারেন। একইসঙ্গে জানান, এবার বিশ্বের নানা প্রান্তে বিশ্ববাংলা সম্মান চালু করবে রাজ্য সরকার। ঘোষণামাত্রই হাততালিতে ফেটে পড়ে বার্সেলোনার ব্যাঙ্কোয়েট।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রবাসীদের সুবিধের জন্য চালু করা হয়েছে ‘আপন’ অ্যাপ। তার মাধ্যমে প্রবাসী বাঙালিরা যোগাযোগ করতে পারবেন রাজ্যের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, কোনও অসুবিধা হলে প্রবাসীরা যেন দূতাবাস এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

বাংলার সংস্কৃতি নিয়ে নানা কথার ফাঁকে প্রবাসী বাঙালিদের অনুষ্ঠানে ওঠে প্রিয় মিষ্টির প্রসঙ্গও। আর বাঙালির মিষ্টিসুখের কথা বললে রসগোল্লাকে বাদ দিয়ে তা হয় নাকি? সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরেরবার যখন আসব, আপনাদের জন্য রসগোল্লা নিয়ে আসব। এবং সেই সূত্র ধরেই বাংলায় মিষ্টি হাব এবং মিষ্টান্ন শিল্পে সরকারি সহায়তার কথা জানান মমতা।

আরও পড়ুন- বার্সেলোনায় প্রবল জনপ্রিয়তা মুখ্যমন্ত্রীর, মমতাকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ সম্বোধন সঞ্চালকের

Previous articleবার্সেলোনায় প্রবল জনপ্রিয়তা মুখ্যমন্ত্রীর, মমতাকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ সম্বোধন সঞ্চালকের
Next articleBreakfast news : ব্রেকফাস্ট নিউজ