মোহভঙ্গ! বিজেপি ত্যাগের ঘোষণা শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নন্দীগ্রামের সেই প্রলয়ের

প্রলয় পাল জানিয়েছেন, দলত্যাগের কথা শুভেন্দু অধিকারী কিংবা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বলার প্রয়োজন মনে করেননি তিনি। শুধু জেলা সভাপতিকেই জানিয়েছেন তিনি। ফলে বুঝতে সমস্যা নেই, শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতিও দলত্যাগের অন্যতম কারণ

নদীগ্রামে খেলা শেষ প্রলয়ের। সক্রিয় রাজনীতির প্রতি মোহভঙ্গ শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতার। শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করলেন নন্দীগ্রামের পরিচিত বিজেপি নেতা প্রলয় পাল। আগামিকাল, শনিবার সকাল ১০টার তিনি জেলা সভাপতি তাপস মণ্ডলের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিতে যাবেন বলেও সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রলয়। তাঁর কথায়,”একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে দলে অনেকে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের জন্য পদ ছেড়ে দিতে হবে। তাই পুরনো হিসাবে সরে যাওয়া উচিত বলেই আমি মনে করছি।” অর্থাৎ, প্রলয়ের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট বিজেপির ‘আদি’ বনাম ‘নব্য’ লড়াইয়ের জেরেই রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। প্রলয় আজকের দিনেও বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি। সদ্যই এই জেলায় বিজেপির নতুন সভাপতি হয়েছেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। বিজেপিতে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত তাপসী গতকাল, বৃহস্পতিবারই নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করেছেন। সেই কমিটিতে সহ-সভাপতি পদেই রয়েছেন প্রলয়। তবে বিজেপির ‘আদি’ নেতাদের দাবি নতুন জেলা কমিটিতে নতুনদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রলয়কে পদে রাখলেও তাঁকে গুরুত্বহীন করে রাখার চেষ্টা চলছে। সেটা বুঝেই সম্মান থাকতে থাকতে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা করলেন প্রলয়।

প্রলয় পাল আরও জানিয়েছেন, দলত্যাগের কথা শুভেন্দু অধিকারী কিংবা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বলার প্রয়োজন মনে করেননি তিনি। শুধু জেলা সভাপতিকেই জানিয়েছেন তিনি। ফলে বুঝতে সমস্যা নেই, শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতিও দলত্যাগের অন্যতম কারণ। কিন্তু বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর অন্যতম সেনাপতি ছিলেন এই প্রলয়।

প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় প্রচারের আলোয় চলে আসেন প্রলয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন নন্দীগ্রামে তৃণমূল প্রার্থী। সেই সময় প্রলয়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী এক সময়ে তৃণমূলে থাকা প্রলয়কে ফোন করার কথা নিজেই জানিয়ে দেন। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েই ২০২১ সালের ৩০ মার্চ তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন, ‘‘মনে রাখবেন, প্রার্থী হিসেবে আমি কারও কাছে আর্জি জানাতেই পারি যে আপনার ভোটটা আপনাকে দেবেন। যখন নরেন্দ্র মোদি তৃণমূলের লোকেদের ফোন করেন, তখন দোষ হয় না? উনি তো পঞ্চাশটা করে ফোন করেন! আমি যদি নন্দীগ্রামের এক জন ভোটারের অনুরোধে তাঁকে ফোন করি, অন্যায়টা কোথায়? এ রকম ফোন আমি অনেক করব। আমি জনগণের সেবা করি। কেউ কিছু জানতে চাইলে, তাকে জানানো আমার কর্তব্য। সে যদি কথা রেকর্ড করে, ভাইরাল করে, তার শাস্তি হওয়া উচিত। আমার নয়। কথা রেকর্ড করে ভাইরাল করা অপরাধ। এটা প্রতারণা। করা যায় না।’’

উল্লেখ্য, আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘‘ভাল থেকো রাজনীতি। আর নয়। দাও বিদায়’ লিখে পোস্ট করেছেন। এর পরেই জল্পনা তৈরি হয় প্রলয় কি শুধুই রাজনীতি ছাড়ছেন না কি তাঁর এক সময়ের দল তৃণমূলে ফিরে যাবেন? প্রলয় বলেন, ‘‘আমি রাজনীতি ছাড়তে চাই। অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়ার কথা তো বলিনি।’’

আরও পড়ুন- সবারে করি আহ্বান: কথায়-গানে দুবাইয়ে প্রবাসী-মঞ্চ মাতালেন মমতা

Previous articleসবারে করি আহ্বান: কথায়-গানে দুবাইয়ে প্রবাসী-মঞ্চ মাতালেন মমতা
Next articleআগামিকাল আইএসএল-এর অভিযান শুরু করতে চলেছে মোহনবাগান, প্রথম ম‍্যাচে প্রতিপক্ষ পাঞ্জাব