Sunday, November 16, 2025

প্রাক্তন RBI গর্ভনর উর্জিতকে ‘সাপ’ বলেছিলেন মোদি, দাবি গর্গের

Date:

ক্ষমতায় আসার পরপর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার(RBI) দু’জন গভর্নর সঙ্গে সাপে নেউলে সম্পর্ক তৈরি হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi)। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে আরবিআই গভর্নর রঘুরাম রাজন এবং উর্জিত প্যাটেল(Urjit patel) দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। জানা গিয়েছিল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে নিজের কুক্ষিগত করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। অবশেষে ৫ বছর পর তা আরও স্পষ্ট হল প্রাক্তন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ তাঁর সদ্য প্রকাশিত বই ‘উই অলসো মেক পলিসি’ থেকে। যেখানে গর্গ লিখছেন, একটি বৈঠক প্রধানমন্ত্রী মোদি উর্জিতকে সাপের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘লোকটা টাকার থলির উপর সাপের মতো বসে আছেন।’

প্রাক্তন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ তাঁর বইতে বছর পাঁচেক আগের সেই সংঘাতের কারণ ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারত সরকার আরবিআইয়ের কাছে দুই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা চেয়েছিল। নির্বাচনের আগে নানা প্রকল্পে ওই টাকা খরচ করা হত। কিন্তু আরবিআইয়ের তৎকালীন গভর্নর তা দিতে রাজি হননি। শীর্ষ ব্যাঙ্কের অন্য কর্তারাও এই ব্যাপারে গভর্নরের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আচার্যের কথা অনুযায়ী, পরিস্থিতির চাপে প্রথমে উর্জিত, পরে রঘুরাম রাজনও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। নির্বাচনের আগে এহেন পরিস্থিতিতে চাপে পড়ে রীতিমতো চাপে পড়ে মোদি সরকার। ২০১৮ সালে আরবিআই গর্ভনর ও প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে পৌঁছয়। এরমাঝে উর্জিত সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তিক্ততা আরও বেড়ে যায়। বিরোধের মূলে ছিল সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির উপর দখলদারি নিয়ে। আরবিআই-কে পাশ কাটিয়ে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্ষমতা খর্ব করতে চাইছে বলে অভিযোগ তোলেন উর্জিত।

বইতে প্রাক্তন অর্থসচিব গর্গ আরও লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পথ ধরে উর্জিতের উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে চারদফা দাওয়াইয়ের কথা বলেছিলেন উর্জিত। যেখানে, দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভকর প্রত্যাহার, রাজকোষ ঘাটতি মেটাতে বিলগ্নিকরণের লক্ষ্য বাড়ানো, এআইআইবি এবং এনডিবি-র মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভারত সরকারের বন্ড কিনতে উৎসাহ দেওয়া এবং ছোট শিল্পকে দ্রুত কেন্দ্রের টাকা মেটানোর ব্যবস্থা। যদিও এই সবকে ‘অবাস্তব’ তকমা দেন জেটলি। এরইমাঝে মোদি উর্জিতকে তোপ দেগে বলেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাতে বিপুল অর্থের ভাড়ার থাকলেও তা ভাগ না করে তার উপর সাপের মতো কুণ্ডলী পাকিয়ে বসে রয়েছেন উর্জিত।” পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছয় যে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন প্রিন্সিপাল সচিব পিকে মিশ্র ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলতেন না উর্জিত। তবে তখন উর্জিতকে দুষলেও পরে তাঁর বেশকিছু প্রস্তাব গ্রহণ করেন মোদি। উর্জিত পদ ছাড়ার পর নিজের পছন্দের শক্তিকান্ত দাসকে গর্ভরনর পদে বসান নরেন্দ্র মোদি।

Related articles

কলকাতা দর্শন: ডিসেম্বরেই শহর ভ্রমণে নতুন উদ্যোগ! চালু হচ্ছে বিশেষ পর্যটন বাস পরিষেবা

শীতের মৌসুমে কলকাতার পর্যটন শিল্পকে তেজ দিতে নতুন পদক্ষেপ নিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। ডিসেম্বরের শুরু থেকে চালু হতে...

কাপড়ের ব্যবসা করে জীবন কাটাচ্ছেন ধর্ষণের দায়ে জেল খাটা বলিউড নায়ক!

বলিউডের (Bollywood) একসময়ের নামকরা হিরো এখন রিয়েল লাইফে জিরো। 'গ্যাংস্টার'-এর মতো সুপারহিট সিনেমায় অভিনয়ের পর ধর্ষণের দায়ে সাত...

ডিসেম্বরেই সম্পন্ন হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া! এসএসসির তালিকা প্রকাশ হতেই জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

কারা ডাক পেলেন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ইন্টারভিউ তালিকায়, এবার সেই নাম প্রকাশ করল এসএসসি। শনিবার ২০ হাজার নামের এক...

চলতি মাসেই কাজ শেষের লক্ষ্য! এসআইআর ফর্ম সংগ্রহে কড়া নির্দেশ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের

রাজ্যের সমস্ত ভোটদাতার কাছ থেকে এসআইআর ফর্ম সংগ্রহের কাজে আরও গতি আনতে নির্দেশ দিলেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ...
Exit mobile version