মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের নিয়ে কুৎসা, ভুঁইফোঁড়দের ‘উত্তম-মধ্যম’ দিলেন কুণাল

সফরসঙ্গী হওয়ার জন্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। তবে সেই আমন্ত্রণ পত্রে উল্লেখ ছিল, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের যাতায়াতের বিমান ভাড়া থেকে হোটেল খরচ সবকিছুই বহন করতে হবে নিজেদের

বিজেপির দালালি করতে গিয়ে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কৃৎসা, অপপ্রচার, মিথ্যাচার এবং মুখ্যমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়ে স্পেন ও দুবাইয়ে যাওয়া একঝাঁক প্রতিষ্ঠিত ও স্বনামধন্য সাংবাদিকের সামাজিক সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন কিছু ভুঁইফোঁড় স্বঘোষিত সাংবাদিক। সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করে কুৎসাকারী সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবিলম্বে নিজের অভিযোগ প্রমাণ অথবা প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার জন্য আগেই আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া ৮ জন জনপ্রিয় সাংবাদিক। মঙ্গলবার ফের বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন সাংবাদিক কুণাল ঘোষ।

কুৎসাকারীদের জবাব দিতে গিয়ে এদিন কুণাল ঘোষ মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হওয়া একজন সাংবাদিক হিসেবে বিষয়টি নিয়ে খুলে বলেন। তিনি জানান, সফরসঙ্গী হওয়ার জন্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। তবে সেই আমন্ত্রণ পত্রে উল্লেখ ছিল, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের যাতায়াতের বিমান ভাড়া থেকে হোটেল খরচ সবকিছুই বহন করতে হবে নিজেদের। এক্ষেত্রে সরকার কোনও ব্যয়ভার নেবে না। কুণাল ঘোষ দাবি করেন, যাঁরা বলছেন সরকারের টাকায় সাংবাদিকরা বিদেশে গিয়েছে গিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আদালতে সমস্ত নথি পেশ করা হবে।

স্বঘোষিত সাংবাদিকদের কটাক্ষ ছুঁড়ে কুণাল ঘোষ বলেন, হাতে একটা মোবাইল থাকলেই সাংবাদিক হওয়া যায় না। সাংবাদিকতা একটা অধ্যবসায়, সাংবাদিকতা একটা সাধনা। যাঁরা কিছু ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুৎসা করছেন তাঁদের নূন্যতম সাংবাদিকতার জ্ঞান নেই। মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে আলোচনা বিশ্লেষণ হতেই পারে, কিন্তু মিথ্যা, অপপ্রচার কেন হবে? এরপর যাঁরা কুৎসা করছেন বা যাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে না বুঝে অনেকে শেয়ার করে বাজার গরম করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন কুণাল ঘোষ। একইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে কুণালের আর্জি, কোনও কিছু না জেনে বা না বুঝে এইসব কুৎসাকারীদের পোস্ট যেন সকলে শেয়ার না করেন।

সম্প্রতি, বাংলায় বিনিয়োগ আনার লক্ষ্যে স্পেন এবং দুবাই সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর কভার করার জন্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম তাদের প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সফর সঙ্গী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও কুৎসা
করেন সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় নামের এক ভুঁইফোঁড় ব্যক্তি। তারপাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের নামে ব্যক্তি কুৎসা ও অপপ্রচার করে।
সাংবাদিকদের অশালীন বিশেষণ করার পাশাপাশি সন্ময়ের দাবি ছিল, এই সাংবাদিকরা নাকি রাজ্য সরকারের টাকায় বিদেশে ফুর্তি করতে গেছেন। যা আনতে সর্বৈব মিথ্যা বলে দাবি করে আইনি নোটিশ পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফর কভার করতে যাওয়া বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

মাদ্রিদে অথবা বার্সেলোনাতে মুখ্যমন্ত্রী যে যে হোটেলে ছিলেন সেখানে থাকেননি পেশার তাগিদে বিদেশ যাওয়া এই সফরের কোনও সাংবাদিকরা। তাঁরা নিজেদের সংস্থার টাকায় বিভিন্ন হোটেলে ছিলেন। শুধুমাত্র সাংবাদিকরাই নন, মুখ্যমন্ত্রীর স্পেন ও দুবাই সফরে রাজ্য সরকারের যে সমস্ত আধিকারিক গিয়েছিলেন তাঁদের ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর সফরে যাওয়া কোন শিল্পপত্তি অথবা অন্য কারও জন্য এক নয়া পয়সা খরচ করনি রাজ্য সরকার। প্রত্যেকেই নিজের টাকায় বিমানের টিকিট থেকে শুরু করে হোটেল বুকিং এর যাবতীয় খরচ বহন করেছেন

আইনজীবী নীলাদ্রি ভট্টাচার্যর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর সফর কভার করতে যাওয়া ৮ সাংবাদিক, যাঁদের মধ্যে ৭ জন সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক পদমর্যাদার এই আইনি নোটিশ পাঠান।

সম্ময় শুধু এই সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত কুৎসা করেননি, দেশের সমাজ ব্যবস্থায় সংবাদ মাধ্যমকে চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, সেই সংবাদ মাধ্যমকে সামগ্রিকভাবে কলঙ্কিত করারও চেষ্টা করেছেন ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে। এই ধরনের কুৎসিত প্রচার বন্ধ করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মিথ্যে প্রচার সম্বলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিলিট করতে হবে এবং প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন অন্যথায় সন্ময়ের বিরুদ্ধে মানহানি ও ফৌজদারি মামলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে আইনি নোটিশে।

 

 

Previous articleভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে বাংলার যুবকের মর্মা.ন্তিক পরিণতি! খু.নের অভিযোগ পরিবারের
Next articleলড়াই করেও হার, মহামেডানের কাছে ২-০ গোলে হারল DHFC