“থিয়েটার সমাজের এক্স রে”,ষষ্ঠ জাতীয় নাট্য উৎসবের উদ্বোধনে কেন্দ্রের উদাসীনতা নিয়ে খোঁ.চা ব্রাত্যর

ব্রাত্য বসু বলেন, টেলিভিশন, সিনেমা, ডিজিটাল মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার দাপাদাপির মাঝেও সঙ্ক*ট কাটিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছে বাংলা থিয়েটার। এই ফেস্টিভ্যালে এর আগে নাসিরুদ্দিন শাহ থেকে শুরু করে পরেশ রাওয়াল অভিনয় করে গেছেন।

নাটক আসলে সমাজের দর্পণ (Theatre is a mirror of society)। সেখানে চারপাশের ঘটনার প্রভাব প্রতিফলিত হয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলা থিয়েটারের (Bengali thetre )উন্নতি সাধনে মন দিয়েছেন। সংস্কৃতির আদান প্রদানে থিয়েটারের একটা আলাদা ভূমিকা রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল (National Theatre Festival)শুরু করেছে বাংলার সরকার (Government of West Bengal)। মাঝে কোভিডের কারণে দুবছর এই উৎসব হয়নি। তবে এই বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দফতর ও মিনার্ভা নাট্য সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের উদ্যোগে কলকাতার রবীন্দ্র সদন (Rabindra Sadan)চত্বরে শুরু হল ষষ্ঠ জাতীয় নাট্য উৎসব ২০২৩। আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত এই থিয়েটার ফেস্টিভাল চলবে বলে জানা যাচ্ছে। রবীন্দ্র সদন ছাড়াও মধুসূদন মঞ্চ ও গিরিশ মঞ্চে এই উৎসব চলবে। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি, গুজরাটি, মারাঠি ভাষার নাটকও এই উৎসবে পরিবেশিত হবে। এদিন বৃষ্টি ভেজা বিকেলে এই নাট্য উৎসবের উদ্বোধন করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu), মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন (Indranil Sen)। ছিলেন বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব সতীস আলেকর (Satish Alekar)। দর্শকাসনে ছিলেন শিল্পী শুভাপ্রসন্ন সহ একাধিক সংস্ক্রিতিমনস্ক ব্যক্তিত্ব।

এদিনের সন্ধ্যায় কলকাতার রবীন্দ্রসদনে ফিরহাদ হাকিম বলেন নাটকের মাধ্যমে মানুষের নানা অনুভূতির প্রসার ঘটে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে এই দিকগুলিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তাতে বাংলার সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এটা একটা অনন্য উদ্যোগ বলে জানান মেয়র। মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ব্রাত্য বসুর মতো নাট্য ব্যক্তিত্ব বাংলায় থাকায় বাংলা থিয়েটার আরও এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে।

মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে শুরুতেই পূর্বতন দুই বক্তার প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে দেশে আর কোন জায়গায় এই ধরণের উৎসব হচ্ছে না। এই থিয়েটার ফেস্টিভ্যালের আয়োজন সহজ কাজ নয়। খরচ আনুমানিক ৯০ লক্ষ টাকা। সবটাই করছে রাজ্য সরকার। মিনার্ভা নাট্য সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্রের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ১০ জন বিচারক ১৪টি নাটক চূড়ান্ত করার পর আজ থেকে আগামী ৬ তারিখ পর্যন্ত এই থিয়েটার দেখানো হবে, প্রবেশ অবাধ। থিয়েটার আসলে সমাজের এক্স রে, এই সংস্কৃতির মাধ্যমেই সমাজকে চেনা যায়। ব্রাত্য বসু বলেন, টেলিভিশন, সিনেমা, ডিজিটাল মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ার দাপাদাপির মাঝেও সঙ্কট কাটিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছে বাংলা থিয়েটার। এই ফেস্টিভ্যালে এর আগে নাসিরুদ্দিন শাহ থেকে শুরু করে পরেশ রাওয়াল অভিনয় করে গেছেন। মন্ত্রী মনে করান যে এই মহান কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলার নাটক আজ অন্য রাজ্যে ছড়িয়ে দেন শিল্পীরা, অন্য রাজ্যের নাটককে এই রাজ্যে দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে আকবর ছাড়া যেমন তানসেন হয় না, বিক্রমাদিত্য ছাড়া যেমন কালিদাস হয় না, সেভাবেই বৃহত্তর লক্ষ্যে থিয়েটারের সংস্কৃতি এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে , ৫ হাজার বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ এই থিয়েটারকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা সর্বত হওয়া দরকার। সরাসরি নাম না করে কেন্দ্রকে খোঁচাও দেন তিনি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা আর উদ্যোগকে কুর্নিশ জানান শিক্ষামন্ত্রী।

Previous articleসুন্দরবনে ক্যামেরাব.ন্দি দক্ষিণ রায়, উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা
Next articleরাস্তা ফেরত চেয়ে ‘সুর নরম’! ফের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি বিশ্বভারতীর উপাচার্যের