তৃণমূল নেতৃত্বকে দিল্লিতে হেনস্থার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। এটিকে গণতন্ত্রের ‘কালো দিন’ বলে আখ্যা দিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এর আগে দিল্লিতে দাঁড়িয়েও একে ভারতের গণতন্ত্রের ইতিহাসে ‘কালো দিন’ বলে আখ্যা দেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)।

কৃষি ভবনে সময় দিয়েও কেন্দ্রীয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ৪০ জন তৃণমূল (TMC) প্রতিনিধিতে সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি দেখা না করায় কৃষিভবনেই শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলেন তাঁরা। আচমকা সাংসদ-মন্ত্রী-বিধায়কদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণ করে অমিত শাহর পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী। টেনে হিঁচড়ে তাদের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। রেয়াত করা হয়নি মহিলা সাংসদ, মন্ত্রীদেরও। এই ঘটনায় চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিষেক। মুক্ত হওয়ার পরেই দিল্লিতে (Delhi) দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, বীরবাহা হাঁসদা একজন আদিবাসী বনবাসী মহিলা মন্ত্রী, তাঁকে টেনেহিঁচড়ে তোলা হয়েছে। মহুয়া মৈত্র একজন সাংসদ, তাঁকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতিমা মণ্ডল একজন তপশিলি মহিলা, তাঁকে জোর করে ভ্যানে (Van) তোলা হয়েছে। ভারতের ইতিহাসকে কালিমা লিপ্ত করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রের ‘কালো দিন’।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা রাত ১১টা ৪৫ নাগাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “আজ গণতন্ত্রের জন্য একটি কালো দিন। বাংলার জনগণের প্রতি ঘৃণা, গরিবেদের অধিকারের প্রতি বিজেপির অবজ্ঞা প্রকাশ পেয়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলার দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ গুরুত্বপূর্ণ তহবিল আটকে রেখেছে তারা। আমাদের প্রতিনিধিরা যখন দিল্লিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করতে এবং জনগণের দুর্দশার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল, তখন তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রথমে রাজঘাটে এবং পরে কৃষিভবনে। বিজেপির হাত হিসাবে কাজ করা দিল্লি পুলিশ নির্লজ্জ ভাবে আমাদের প্রতিনিধিদের হেনস্থা করেছে। তাদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের মতো পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ, তারা ক্ষমতার সামনে সত্যি বলার সাহস দেখিয়েছিল। এই ঔদ্ধত্যের কোনও সীমা নেই। অহংকার ওদের অন্ধ করে দিয়েছে। বাংলার কণ্ঠস্বরকে দমন করতে তারা এখন সব সীমা অতিক্রম করেছে!” শেষে রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে তৃণমূল সভানেত্রী লেখেন, “আমরা ভয় করব না ভয় করব না, দু’বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না।”

Today is a dark, sinister day for democracy, a day when @BJP4India revealed their disdain for the people of Bengal, their disregard for the rights of the poor and a complete abandonment of democratic values.
First, they callously withheld crucial funds meant for the poor of…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) October 3, 2023
অভিষেক বলেন, “যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে দিল্লিতে হেনস্থা করা হয়েছে। এর জবাব আগামী দিন বাংলার মানুষ দেবে। সবটাই ক্যামেরাবন্দি করা আছে। এই লেঠেল বাহিনীর ব্যবস্থা বাংলার মানুষ করবে। আমরা আগামী দু মাসের মধ্যে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”

এরপরই রাজ্যের বাম জমানোর কথা স্মরণ করে অভিষেক বলেন, “২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৬ সালে মমতাকে যেভাবে CPIM চুলের মুঠি ধরে টেনেছিল, তেমনই ঘটল এখানে। তৃণমূলের ২২ জনকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হল। গণতন্ত্রে মানুষ শেষ কথা বলে। শাসক নয়। বাংলা তা দেখিয়েছিল। এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন অবসম্ভাবি। প্রায় ১০ হাজার পুলিশ নামিয়েছে। যেখানে আধাসেনা নামানো দরকার, সেখানে কাপুরুষ নরেন্দ্র মোদির সরকারের তা করার ক্ষমতা নেই। নরেন্দ্র মোদির ৫৬ ইঞ্চি ছাতি ৬ ইঞ্চিতে পরিণত হয়েছে।”