Monday, August 25, 2025

বাংলার বকেয়া আদায়ে অভিষেকের ল.ড়াইয়ে সামিল ‘বাংলা অধিকার রক্ষা মঞ্চ’

Date:

Share post:

একশো দিনের কাজ সহ একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। আর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছে বাংলার বঞ্চিতরা। শনিবার তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বে বিগত ৩ দিন ধরে চলা অবস্থান মঞ্চে এসে এদিন কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব বলেন বাংলা অধিকার রক্ষা মঞ্চের সদস্যরা। একযোগে কেন্দ্রের মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার বার্তা দেন সকলেই।

অভিষেকের নেতত্বে চলা অবস্থান বিক্ষোভের মঞ্চে এদিন আসেন সমীর পুততুন্ডু। তাঁর সম্পর্কে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই সমীরবাবু আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু মানুষের জন্য আমরা লড়াই করছি তাতে সামিল হয়েছেন তিনি। এরপরই বিজেপিকে আক্রমণ করে সমীরবাবু বলেন, কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে সরাতে আমরা সম্মেলন করবো ঠিক করেছিলাম। আমরা আজ ঠিক করি, আপনাদের আন্দোলন মঞ্চে উপস্থিত হবো। দীর্ঘ বিরতির পর আমি ফের তৃণমূলের কোনও আন্দোলন মঞ্চে আসতে পেরে ভালো লাগছে।তবে দেখে খারাপ লাগছে, এমন একটি ইস্যুকে কন্দ্রে করে বাংলার সমস্ত রাজনৈতিক দল কেন বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে পারছে না। যারা বিজেপি বিরোধী বলে নিজেদের দাবি করে, তারা কেন দাবি করতে পারে না ১০০দিনের কাজের পাওনা দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ইন্ডিয়া জোটের ছোটবড় দলগুলি যখন দেশজুড়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে, আমি আশাবাদী এখানে তৃণমূল আর কংগ্রেস দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে। সিপিএমকে কটাক্ষ করে সমীরবাবু বলেন, ওদের নিয়ে আমি আশাবাদী নই। কারণ, তারা ইডি সিবিআই দফতরে গিয়ে বিজেপির সুরে বলছে কেন তৃণমূল নেতৃত্বকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তাই সিপিএম, বিজেপি বিরোধী হতে পারে না। যার বিজেপি বিরোধী বলে দাবি করে, তাদের একমাত্র বিরোধিতা করা উচিত বিজেপির। কিন্তু তা না করে তৃণমূলকে গালমন্দ করছে। এটা সেই সময় নয়। এখন একজোট হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আমি আশাবাদী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই লড়াই আরও তীব্র ও সফল হবে।

বাংলা অধিকার রক্ষা মঞ্চের তরফে অরূপ শংকর মৈত্র বলেন, কাজ করিয়ে টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। যে টাকা না দেয় সে চোর। ইংরেজদের মতো আচরণ করছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। ২০ লক্ষ মানুষের টাকা মেরে দিয়েছে। এই গরিব শ্রমজীবী মানুষগুলি খাবে কী? এই টাকা আদায় করে ওই মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে
অধ্যাপক দীপঙ্কর দে বলেন, এবার প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। এই আন্দোলন মঞ্চে এসে আমি গর্বিত। এই বাংলা ধান উৎপাদনে দেশে প্রথম, সবজি উৎপাদনে দ্বিতীয়। সেই কৃষককে ভাতে মারতে যারা চাইছে, তাদের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে যোগ দিতে না পারলে আমরা আগামীর প্রজন্মের সামনে মুখ দেখাতে পারবো না। তৃণমূল নেতৃত্বকে আমি ধন্যবাদ জানাই।

মুখ্যমন্ত্রী প্রশংসা ও বিজেপিকে কটাক্ষ করে বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, আমি মার্কসবাদে বিশ্বাসী ছিলাম। কিন্তু ১৯৯০ সালে দেখলাম এক মহিলা লড়াই করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূল ও যুবসমাজ যে আন্দোলন করছে, তা এক অন্য উচ্চতায়। দিল্লির আন্দোলনেই তা প্রমাণ হয়েছে। ভারতবর্ষের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই গড়ে উঠেছে, তা দেশে আমি গর্বিত। ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে অমিত শাহ নিজেই বলছে জুমলা। তাহলে তো মোদির জেলে যাওয়া উচিত। দুর্নীতি ছিল আছে থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই দুর্নীতিতে লাগাম টানতে পেরেছেন। ভারত সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুয়ারে সরকারকে সেরার সেরা বলছে, আবার দুর্নীতি হয়েছে বলছে। তাহলে ভারত সরকার যাঁরা চালাচ্ছেন নিজেদের কে নিজের প্রশ্ন করছেন? এই দানবদের দেশের মাটি থেকে উৎখাত করতে হবে। আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ এই লড়াইয়ের পাশে থাকবো।

প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তীব্র কটাক্ষ করে এদিনের মঞ্চ থেকে সিদ্ধার্থ গুপ্ত বলেন, মোদি সরকারটিকে বেশকিছু বাংলা প্রবচনে ব্যাখ্যা করা যায়। ওরা চুরির কথা বলছে। ব্যাপম থেকে নীরব মোদি মেহুল চোকসীদের মাফ করে দিল। এরাই আবার দুর্নীতির কথা বলে। চালুনি বলে সূচ কেন ফুটো? মোদিবাবু সার্কাসের জোকার। একসময়ে এক এক রকম পোশাক। ছোটবেলায় যা যা করার শখ ছিল এখন তাই তাই করছে। এতবড় মিথ্যাচারী, অপদার্থ প্রধানমন্ত্রী দেশ আগে দেখেনি। যেভাবে মোদি তৃণমূলের গলা টিপে ধরেছেন, সেটা ফ্যাসিবাদ ছাড়া আর কিছু নয়। মোদি হিটলারের পথেই চলছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে সামনের নির্বাচনে আমরা মোদি সরকারকে উৎখাত করতে তৃণমূলকে সহযোগিতা করবো।

তৃণমূলের এই লড়াইয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়ে এদিন প্রদীপ্ত গুহঠাকুরতা বলেন, আপনাদের লড়াই বাংলার মাথাকে আরও উঁচু করে দিয়েছে। আজকে যাঁরা কেন্দ্রের মসনদে বসে আসেন তাঁরা নিজেদের রাজা ভাবছেন, আমাদের নাগরিক নয় প্রজা হিসেবে দেখছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আপনার দিল্লি গিয়েছেন ১০০দিনের কাজের ন্যায্য পাওনা আদায় করতে। যা দেখে গর্বে আমার বুক ফুলে উঠছে। এই টাকা যারা এখন আটকে রাখছেন, ভবিষ্যতে সেটা আত্মসাৎ করতে পারেন। মানুষের জন্য যারা কাজ করেছেন, তাদের প্রতি বঞ্চনা করছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বাংলার মানুষকে ব্ল্যাকমেল করছেন। আপনারা ভুল করছেন, আপনারা বাংলাকে চেনেননি। বাংলার মাটিকে চেনেননি।

রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এদিন সুমন ভট্টাচার্য বলেন, দিল্লিতে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে ইউএপিএ ধারা দেওয়া হয়েছে। কোনও রাজ্যপাল কোনও নির্বাচিত রাজ্যকে এড়িয়ে কিছু করতে পারেন না। আমাদের করের টাকা কেন আটকে দেওয়া হবে।

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারতে উৎখাতের ডাক দিয়ে দেবপ্রিয় মল্লিক বলেন, সারা দেশ ও জাতি বিপন্ন। তাই আজ আমাদের ফের রাস্তায় নামতে হয়েছে। তৃণমূলের লড়াইয়ের মঞ্চে আমরা বিভিন্ন পেশার অরাজনৈতিক লোকেরা এসেছি, কারণ এটা কোনও নির্বাচনী প্রচারের লড়াই নয়। এটা বাংলার গরিব মানুষের স্বার্থে লড়াই। আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইকে কুর্নিশ জানাই। প্রধানমন্ত্রী মোদিকে সরাতে হবে। এই লড়াই অধিকারের লড়াই। মোদিকে হটানোর জন্য বাংলায় এক ইঞ্চি জমি ছাড়া যাবে না। একমাত্র লক্ষ্য হোক মোদিকে উৎখাত। দিল্লির তানাশাহী ভাঙতে হবে। তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মোদি সরকারের একটি কাজও ঠিক নয়। এরা জনবিরোধী সরকার। এটা গণশত্রু। এটা শুধু তৃণমূলের আন্দোলন নয়, গোটা বাংলার সমস্ত মানুষের আন্দোলন হোক।

আরও পড়ুন- তিস্তাবাজারে দুর্গ.তদের প্রতিটি ত্রাণ শিবির পরিদর্শন অরূপের

 

spot_img

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...