কার্যত “জেদি” অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপের কাছে নতিস্বীকার। অবশেষে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজভবনে সাক্ষাৎ করতেই হল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। ১০০দিনের কাজ করে টাকা না পাওয়া ও আবাস যোজনায় বঞ্চিদের পক্ষে সওয়াল করে রাজভবনের সামনে ভুক্তভোগীদের নিয়ে ধর্ণায় বসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, রাজ্যপাল রাজভবনে এসে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করা পর্যন্ত এই ধর্ণা চলবে।

প্রত্যাশিতভাবেই রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর পাঁচদিনের ধর্না কর্মসূচিতে ইতি টানলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে আন্দোলন যে এখানেই শেষ হচ্ছে না, ফের সেটা স্পষ্ট করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।রাজ্যপালের ‘সৌজন্য’র প্রশংসার পাশাপাশি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের উদ্দেশে অভিষেকের হুঁশিয়ারি, “২ মাস পর ৫০ হাজার লোক যাবে দিল্লিতে। পারলে আটকে দেখিও। ট্রেলারটা দেখালাম। পিকচার আভি বাকি হ্যায়!”

অনেক আগেই জননেতার তকমা পেয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বয়সে যা দেশের মানচিত্রে বিরল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নবজোয়ার কর্মসূচি অভিষেককে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিল। অদম্য জেদ ও হার না মানা মানসিকতাকে সামনে রেখে অক্টোবরে দিল্লি থেকে কলকাতার বুকে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সংঘটিত করলেন অভিষেক তা এককথায় অভূতপূর্ব।

গত, ৫ অক্টোবর থেকে একটানা পাঁচদিন রাজভবনের উত্তর গেটের সামনের রাস্তায় বসে ধর্ণা দিলেন অভিষেক। রাজ্যপাল দাবি মানার পরই সেই ধর্ণায় ইতি টানলেন। প্রথমদিন রবীন্দ্র সদন থেকে রাজভবন পর্যন্ত যে মিছিল করেছিলেন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তৃণমূলেরই একুশে জুলাই বাদ দিলে এমন জনজোয়ার কেউ দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। তাও মাত্র ২৪ ঘন্টার নোটিশে। সেইদিন থেকে আজ ধর্ণা শেষ হওয়া পর্যন্ত রাজভবনের সামনে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। অভিষেক আবেগের কক্ষপথে আবর্তিত হয়ে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ, কলকাতা থেকে জঙ্গলমহল দলে দলে কর্মী-সমর্থকরা যোগ দিয়েছিলেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ যোগদান করেছেন। তাঁদের মধ্যে যে সকলেই তৃণমূল ছিলেন এমনটাও নয়। অফিস ফেরত থেকে পথ চলতি সাধারণ মানুষ, ছাত্রযুব সকলের যোগদান ছিল দেখার মতো। সবমিলিয়ে পাঁচদিন জনজোয়ারে ভাসতে ভাসতে ধর্ণা কর্মসূচি শেষ করলেন অভিষেক।

আরও পড়ুন- এখনও স্পষ্ট নয়! বকেয়া আদমশুমারি নিয়ে অনীহা কেন্দ্রের
