Wednesday, November 12, 2025

পায়ে শি.কল, কাপড়ে বাধা মুখ!অদ্ভূত রূপে পূজিত হন রঘুনাথগঞ্জের ‘পেটকাটি দুর্গা’

Date:

Share post:

পুরাণে দেবী দুর্গার নানা রূপের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়৷ কিন্তু পেটকাটি দুর্গার কোনও উল্লেখ পুরাণেও পাওয়া যায় না৷ যদিও মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে গদাইপুরের পেটকাটি দুর্গার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক ভিন্ন ইতিহাস। পুরাণ এখানে স্থানীয় ইতিহাসের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। এই জেলার অন্যতম প্রাচীন ও বনেদি বাড়ির পুজোর মধ্যে একটি হল এই পেটকাটি দুর্গার পুজো। কয়েকশো বছরের প্রাচীন এই পুজো আজও একই রীতি মেনে হয়ে আসছে। প্রাচীন ঐতিহ্য মেনেই আজও একচালার মূর্তি তৈরি হয় ঠাকুর দালানে। তবে এখনও মা পেটকাটির মুখে একটুকরো কাপড় লাগানো থাকে। পায়ে থাকে শিকল।

এ নিয়ে রয়েছে এক কাহিনীও।কথিত আছে, বহু বছর আগে এক সন্ধ্যায় তৎকালীন সেবায়েতের এক কন্যা লাল শাড়ি পরে সন্ধ্যাপুজো দিতে যায়। তারপর থেকেই মেয়েটিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। উদ্বিগ্ন সেবায়েত মেয়ের মঙ্গল কামনায় মাকে ডেকে চলেন। কথিত রয়েছে সেদিন রাতেই সেবায়েতকে স্বপ্নাদেশ দেন দেবী। তিনি জানান যে সেবায়েতের মেয়েকে ভক্ষণ করেছেন তিনিই। এরপরে তার পেট কেটে যেন মেয়েকে উদ্ধার করেন ওই সেবায়েত, এমন নির্দেশই দেন। তারপর থেকেই শুরু পেট কাটি মায়ের আরাধনা।

ঐতিহ্য মেনে পেট কাটি মায়ের পুজোর সূচনা হয় রথের দিনেই। প্রতিপদ থেকেই পূজিত হন মা। সপ্তমীর সকালে কলা বৌ স্নান থেকে মায়ের ভোগ, সন্ধি পুজো, প্রাচীন প্রথা মেনেই হয় মায়ের আরাধনা। গ্রাম বাংলার পুজোর ঐতিহ্য আর পৌরানিক কাহিনী নিয়ে পেটকাটি মায়ের পুজো যেন এক অদ্ভুত পরিবেশের সৃষ্টি করে। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তদের সমাগমে জমজমাট হয়ে ওঠে মায়ের মন্দির।প্রচুর মানুষের সমাবেশ ঘটে এখানে। নবমীর দিন পা ফেলার জায়গা থাকে না। প্রতি বছর রথের দিন থেকে শুরু হয় দেবীর কাঠামো তৈরির কাজ।

পুজোর সময় বদলে যায় মায়ের রূপ। কখনও রাগী কখনও আবার শান্ত। তবে কথিত আছে ভক্তের প্রার্থনা মা ফেরান না। প্রতি বছর পুজোর সময় গদাইপুর ছাড়াও দূরদূরান্তের বিভিন্ন জায়গা থেকেও ভক্তের সমাবেশ ঘটে ‘পেট কাটি মা’ দর্শনের জন্য।দশমীর দিন আখরি নদীতে নৌকায় চাপিয়ে দেবীকে নিয়ে আসা হয় রঘুনাথগঞ্জের সদর ঘাটে। ভাগীরথী নদীর তীরে সদর ঘাটের দুই প্রান্তে মেলা বসে। সেখানে শহরের সমস্ত ঠাকুর আনা হয়। একাদশীর দিন বেলা এগারোটা নাগাদ পেটকাটি দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হয় জঙ্গিপুর শ্মশান ঘাটে।

spot_img

Related articles

দেশে প্রথমবার সেমিস্টার পদ্ধতিতে ফাজিল! ফলপ্রকাশের পরে সফল পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম মাদ্রাসার দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হয়েছে সেমেস্টার পদ্ধতিতে। উচ্চ মাধ্যমিকের মতো মাদ্রাসার ফাজিল ২০২৬-এর পরীক্ষা...

অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্ক কী, কাদের নিয়ে পরিবার? খোলাখুলি উত্তর পার্থর

শিক্ষক নিয়োগ মামলায় তাঁর গ্রেফতার হওয়ার পরেই গ্রেফতার হন তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukharjee)। জামিন পেয়ে বাড়ি...

ডবল ইঞ্জিনের গোয়ায় কোটি টাকার চাকরি কেলেঙ্কারি! জড়িত বিজেপি মন্ত্রিসভার সদস্য ও উচ্চপদস্থ আমলা

ফের ডবল ইঞ্জিন সরকারের দুর্নীতি ফাঁস। কোটি কোটি টাকার 'চাকরির বিনিময়ে নগদ' কেলেঙ্কারির এক মূল অভিযুক্ত গোয়ার (Goa)...

এখনও গুটখা-তামাকযুক্ত পান মশলা বিক্রি নিষিদ্ধ বাংলায়, মেয়াদ চলবে কতদিন

আরও এক বছর গুটখা ও তামাকযুক্ত পান মশলা (Pan Masala) বিক্রির নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমবঙ্গে (West Banegal)। গত ৭ নভেম্বর...