লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব: বকেয়া আদায়ে ৩০ জুন অবধি সময় চাইলেন অভিষেক

১০০ দিনের কাজের টাকা আদায়ে পুজোর পর বড় পরিসরে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছেন তৃণমূলের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhisekh Banerjee)। এবার এই লড়াইয়ে মানুষের কাছে ৬ মাসের সময় চেয়ে নিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিলেন, এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব। হয় কেন্দ্রের থেকে টাকা আদায় করে আনব, নাহলে রাজ্যসরকার আপনাদের প্রাপ্য বকেয়া টাকা দেবে।

বৃহস্পতিবার সাতগাছিয়া ও বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বস্ত্রবিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অভিষেক জানান, “বকেয়া আদায়ের লড়াইয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা রাজ্যপালকে সময় দিয়েছি। যদি কোনও সুদুত্তর আমরা না পাই সেক্ষেত্রে ১ তারিখ থেকে বড় আন্দোলনে নামছি আমরা। আমি কথা দিয়ে কথা রাখার ছেলে। আপনারা দেখেছেন কীভাবে এজেন্সি দিয়ে বার বার ওরা আমায় আক্রমণ করেছে। কিন্তু মাথা নত করিনি আমি। আপনারা আড়াই বছর অপেক্ষা করেছেন, আমায় আর ৬ মাস দিন। এখন উৎসব মরশুম চলছে। ফলে ৬ মাস সময় দিন ৩০ জুন অবধি। হয় টাকা কেন্দ্রের থেকে লড়াই করে আদায় করব, অন্যথায় বাংলার সরকারের থেকে এই টাকা আপনাদের দেওয়া হবে। যদি মমতা ৩৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেয়, তবে ২১ লক্ষ ৭৫ হাজার জব কার্ড হোল্ডারকে তাঁদের প্রাপ্য ৮ হাজার কোটি টাকা দেবে বাংলার সরকার। কিন্তু এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়ব আমি। ওরা বাড়ির টাকা বন্ধ করে রেখেছে। কেন্দ্রকে ১১.৩৬ লক্ষ প্রাপকের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। বলেছিল ১ মাসের মধ্যে টাকা ছেড়ে দেব। আজও বাঙালি সেই টাকা পায়নি।” এছাড়াও রাজনৈতিক স্বার্থে এজেন্সির ব্যবহারের প্রসঙ্গে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, “২-৩ জন বাঙালিকে নিয়ে ভাবছে ইডি-সিবিআই দিয়ে টাইট করব। কিন্তু ওরা জানে না যত ইডি সিবিআই লাগাবে তত আমরা শক্তিশালী হব। বিশুদ্ধ লোহাকে যত পোড়াবেন, তত শক্তিশালী হবে। আমরা মানুষের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছি।”

এর পাশাপাশি একদা জ্যোতি বসুর কেন্দ্র সাতগাছিয়া প্রসঙ্গে অভিষেক আরও বলেন, “এই কেন্দ্রে জিতে জ্যোতি বসু জিতে ২৬ বছর মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। কী করেছেন সাতগাছিয়ার জন্য? ৪০ বছর এই লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম ছিল। কী করেছে? আমরা আসার পর বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পাঠানোর জন্য ১৫০০ কোটি টাকা খরচে জল প্রকল্প শুরু হয়েছে। এই এলাকার রাস্তাঘাতের কী অবস্থা ছিল আমি এসে দেখেছি। আমি আসার পর ৯ বছরে ৬০০ কোটি টাকার বেশি রাস্তা করেছি সাতগাছিয়া বিধানসভায়। আমার সাংসদ তহবিলের টাকা আমি প্রতিবছর হিসেব দিয়েছি এখানে। লকডাউনের সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার দিয়ে এসেছি। পরে ২১ টা কমিউনিটি কিচেন করেছি এখানকার ৩ লক্ষ মানুষের মুখে খাবার তুলে দিয়েছি। ২৬ কোটি টাকা দিয়ে অডিটরিয়াম করেছি। শীঘ্রই তা উদ্বোধন হবে। হাসপাতালে ২ কোটি টাকা দিয়ে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। যেখানে আমি সাংসদ তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়েছি। আমতলা গ্রামীণ হাসপাতাল, বাইপাস রাস্তার কাজ চলছে, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এক একটা বিধানসভা যা কাজ হয়েছে ভারতবর্ষে দেখাতে পারবেন না।” এরসঙ্গেই অভিষেক যোগ করেন, “আপনার যা লাগবে বলবেন। আর আমার যা লাগবে আমি আপনাদের থেকে চেয়ে নেব। নিজের অধিকারকে সামনে রেখে লড়াইয়ে নামতে হবে। যে আপনার পাশে আছে, তাঁর পাশে থাকতে হবে। ভোট পাখিদের পাশে নয়। যে কটা আবর্জনা আছে ঝাঁটিয়ে বিদায় করতে হবে।”

Previous articleবাংলাদেশের বিরুদ্ধে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেন হার্দিক, বল হাতে বিরাট
Next articleভারতে এসে কেমন অভিজ্ঞতা পাকিস্তান দলের? মুখ খুললেন বাবর