গৈরিকিকরনের পথে হেঁটে এবার সরকারি আমলাদের মাধ্যমেও প্রচার পেতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিভিন্ন মন্ত্রক ও বিভাগের আমলাদের সারা দেশজুড়ে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার কাজে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার।

‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’ নামে এই প্রচারাভিযান শুরু হবে ২০ নভেম্বর এবং চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে , দেশজুড়ে একদম গ্রাম স্তর থেকে অফিসার নিয়োগ করে, বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা নামে রোড শোয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে হবে।
২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসা বিজেপি দুই বারের মেয়াদে, বিগত নয় বছরে কী কী সাফল্য অর্জন করেছে, মূলত সেটাই এই কর্মসূচির মাধ্যমে যে প্রচার করা হবে, তা নিশ্চিত। সারা দেশের মোট ২.৭ লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই প্রচারাভিযান চলবে। কেন্দ্রীয় সরকারের যুগ্ম সচিব, ডেপুটি সচিব পর্যায়ের আধিকারিকদের জেলা রথ প্রভারি পদে নিযুক্ত করবে মোদি সরকার।আমলাতন্ত্রের এই রাজনীতিকরণ নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে ।

আরও পড়ুন- দুর্গোৎসব শেষে দলের সাংসদ-বিধায়ক-নেতা-সহ বিশিষ্টদের শুভেচ্ছা বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

এই সিদ্ধান্ত নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, “প্রশাসন যন্ত্রকে রাজনীতির বাইরে রাখা আবশ্যিক কর্তব্য।” তবে শুধু আমলাদের নয় গত ৯ অক্টোবর প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে সেনা বাহিনীর জওয়ানদের ছুটিতে যেতে বলা হয়। সেনা দূত হিসেবে তাঁদের সরকারের কাজের প্রচারে সামিল করার নির্দেশ দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। দুটি বিষয়ই তুল ধরেছেন খাড়গে। তাঁর বক্তব্য, সেনা বাহিনীকে রাজনীতির আওতার বাইরে রাখা উচিত। তাঁরা কেবলমাত্র সংবিধান এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধ। এইভাবে সেনা বাহিনীকে সরকারের প্রচারের নামে রাজনীতির কাজে ব্যবহার করা মারাত্মক প্রবণতা বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি। তৃণমূল সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় সরকারে দেড় দশক কাজ করা অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার জহর সরকার বলেন, “মোদি ভীতি। সেই কারণে যুগ্ম সচিব, ডেপুটি সচিবের মতো উচ্চ পদস্থ আমলাদের জেলা রথ প্রভারি স্পেশাল অফিসার পদে বহাল করা। দেশের মতো ৭৬৫টি জেলার ২.৬৯ লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতে এই নিয়োগ। মোদি সরকারের ৯ বছরের কাজ সম্পর্কে প্রচার করবেন তাঁরা। প্রশাসন যন্ত্রকে এভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার একবারেই অপ্রত্যাশিত।”
