ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় স্থল বাহিনী পাঠিয়ে এবং স্থল, সমুদ্র ও আকাশ পথে জোরালো আক্রমণ শুরুর মাধ্যমে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা করেছে। শনিবার রাতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আক্রমণ এখন আরও ব্যাপক ও তীব্রতর হবে। ইজরায়েল যুদ্ধে জয়ী হবে। যে কোন মূল্যে হামাসকে নির্মূল করতে ইজরায়েল বদ্ধ পরিকর।

ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষের তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। গত ২১ দিনে উভয় পক্ষের নয় হাজারের বেশি নিহত হয়েছেন। ইজরায়েলে হামাসের হামলায় ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এরপর থেকে গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলি বিমান হামলায় প্রায় সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইজরায়েলের কারাগারে বন্দি প্যালেস্তিনীয়দের মুক্তি দিলে হামাসও পণবন্দি ইজরায়েলিদের ছেড়ে দেবে, এমনটাই দাবি করেছে প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী। হামাসের অন্যতম মুখপাত্র আবু ওবেদিয়া একটি টেলিভিশন সম্প্রচারে এই ঘোষণা করেছেন। ঘোষণায় বলা হয়েছে, শত্রুপক্ষের যে বিপুল সংখ্যক মানুষ আমাদের হাতে বন্দি, তাঁদের মুক্তির জন্য মূল্য দিতে হবে ইজরায়েলকে। তাদের কারাগার খালি করতে হবে। ইজরায়েলের কারাগারে যত প্যালেস্তিনীয় বন্দি আছেন, তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তবেই আমরাও ইজরায়েলি বন্দিদের ছেড়ে দেব।
অবশ্য নিউইয়র্ক সিটির বিখ্যাত ‘গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল টার্মিনাল’-এর প্রধান কমপ্লেক্সে যুদ্ধবিরতির দাবিতে শ’য়ে শ’য়ে বিক্ষোভকারী স্লোগান দিতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ব্যবস্থা নেয় এবং প্রায় ২০০ আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন শনিবার বলেছেন যে তিনি ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষের মধ্যে গাজায় তার টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।। টুইটারে পোস্টে ম্যাককেইন লিখেছেন যে ‘গাজায় আমাদের দলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। গাজায় সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় আমি সকল মানবিক কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা একটা টার্নিং পয়েন্টে আছি। মানবতা বজায় রাখতে হবে।

প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ‘গাজায় গণহত্যা’ বন্ধে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।এদিকে, সৌদি আরব ইজরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযানের নিন্দা করেছে। এর ফলে প্যালেস্তাইনি নাগরিকদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে বলে সৌদি আরবের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

ইজরায়েল তুরস্ক থেকে তাদের দূতাবাসের কর্মীদের ফিরিয়ে নেবে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান গাজায় তাদের সামরিক অভিযানের সমালোচনা করার পর বলেছেন যে তারা তুরস্ক থেকে তাদের কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করছে।
