বিরাটের দিনেও ‘ফোকাসে’ শামি! ওয়াংখেড়েতে কিউই ব.ধ করে বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত

ভারত ৩৯৭/৪ (৫০ ওভার)
নিউজিল্যান্ড ৩২৭ (৪৮.৫ ওভার)

১২ বছর আগে এই মাঠেই বিশ্বজয় করেছিল টিম ইন্ডিয়া। আজ সেই ওয়াংখেড়েতে সেমি-ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৭০ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করল ভারত। কপিল দেব, মহেন্দ্র সিং ধোনির পর এবার ইতিহাস রচনার দোরগোড়ায় রোহিত। তবে বিরাট-শ্রেয়সের দিনে এদিন সব লাইট ছিনিয়ে নিলেন মহম্মদ শামি একাই। মহম্মদ শামির সাত উইকেটে, ম্যানচেস্টারের ধূসর স্মৃতি বদলে গেল মুম্বইয়ের রঙিন ক্যানভাসে।

আইসিসি ইভেন্টে নিউজিল্যান্ড চিরকালীন কাঁটা ভারতের। ইংল্যান্ডে ২০১৯-এর সেমিফাইনালে এই দলের কাছে ভারত হেরেছিল ১৮ রানে। কিন্তু ওয়াংখেড়েতে বুধবার রোহিত আর শুভমন যে মেজাজে শুরু করেছিলেন, তাতে উইলিয়ামসনদের কেমন যেন গুটিয়ে থাকতে দেখা গেল। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক অবশ্য টসের পর বলছিলেন, আমরা আগে ব্যাট করতে চেয়েছিলাম। রোহিত ২৯ বলে ৪৭ রান করে ফিরে গেলেন। গাভসকর বলেছেন, রোহিত নিঃস্বার্থ ক্রিকেটার। হিটম্যানের সংক্ষিপ্ত ইনিংস সেটাই বোঝাল। তিনি শুরু করেছিলেন বোল্ট, সাউদিদের উড়িয়ে। শেষও করলেন নিজের মেজাজে।

৫০তম সেঞ্চুরির পর বিরাট যে লাফটা দিলেন, সেটাই বুধবারের সেরা মুহূর্ত। একশো হয়ে গেল সেটা দৌড়ানোর মধ্যে বুঝেছিলেন। তখনই ব্যাট আকাশের দিকে। অতঃপর মাথা নোয়ালেন নির্দিষ্ট একজনকে লক্ষ্য করে। শচীন রমেশ তেন্ডুলকর তখন হাসিমুখে হাততালি দিচ্ছেন। বক্সে থাকা অনুষ্কার দিকেও ব্যাট দেখালেন কিং কোহলি। তিনিও হাসি ছড়ালেন। এই ম্যাচের অতিথি ডেভিড বেকহ্যাম অবশ্য বিরতিতে মাঠেই জড়িয়ে ধরলেন ১১৩ বলে ১১৭ রান করা বিরাটকে।

ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে শচীনের ৪৯তম সেঞ্চুরিকে ছুঁয়েছিলেন বিরাট। দশদিনের মধ্যে আইডলকে টপকে গেলেন। বিরাট পরে যেটা বললেন, সেটাই ঠিক। তিনি নিজেকে অনেক গুটিয়ে রেখেছিলেন যাতে পরের দিকের ব্যাটারদের ভরসা জোগাতে পারেন। এদিন তাঁর পাশে ৭০ বলে ১০৫ রান করে গিয়েছেন শ্রেয়স আইয়ার। দু’জনের জুটিতে উঠেছে ১৫৬ রান। পরের দিকে কে এল রাহুল নট আউট থেকে যান ৩৯ রানে। এঁদের জন্যই ৫০ ওভারে ৩৯৭/৪ উঠে এসেছে।

নিউজিল্যান্ড কিন্তু ৩৯ রানে দু’জনকে হারিয়ে বসেছিল। কনওয়েকে (১৩) যখন শামি ফেরালেন, বোর্ডে রান ৩০। ৯ রান হতে না হতেই রাচিন রবীন্দ্রও (১৩) শামির শিকার হলেন। অদ্ভুতভাবে উইলিয়ামসন ও মিচেলের মধ্যে ১৮১ রানের পার্টনারশিপের পর শামিই আবার ম্যাচে ফেরালেন ভারতকে। তিনি পরপর তুলে নিলেন উইলিয়ামসন (৬৯) ও লাথামকে (০)। নিউজিল্যান্ড ২২০/২ থেকে দুই বলের মধ্যে ২৩০/৪।
এই ধাক্কাটাই আর নিতে পারল না নিউজিল্যান্ড। বুমরা ১০ ওভারে ৬৪ রানে একটি উইকেট নিয়েছেন। কুলদীপ ও জাদেজার ১০ ওভারে রান যথাক্রমে ৫০ ও ৬৩। জাদেজা উইকেট না পেলেও কুলদীপ চ্যাপম্যানকে ফিরিয়েছেন। শামি বেশি উইকেট নিলেও নিউজিল্যান্ডকে চাপে রেখেছিলেন বুমরা ও কুলদীপ। তবে দ্বিতীয় স্পেলে এসে শামি যেভাবে কিউয়ি ব্যাটিংকে খতম করেছেন, তা অনবদ্য। রাতের দিকে মুম্বইয়ের উইকেট শিশিরে স্লো হয়ে যায়। শামি সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন। সে যাই হোক, বুধবার রাত আনন্দের রাত। ১২ বছরের খাটনি অবশেষে সফল হল। ফাইনালে টিম ইন্ডিয়া। ২০০৩, ২০১১ সালের পর আবার ২০২৩ সালে।

আরও পড়ুন- ‘বিরাট’ ইনিংসে মাতল বলিউড! ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তারকার মেলা, ফাইনালে ভারত

Previous article‘বিরাট’ ইনিংসে মাতল বলিউড! ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তারকার মেলা, ফাইনালে ভারত
Next article‘জিততেই হবে, স্বপ্ন সত্যি করার এর থেকে বড় সুযোগ আর পাব না’: শামি