Friday, November 14, 2025

জগদ্ধাত্রী পুজো: বৈচিত্রের মধ্যে ঐ.ক্যের মেলবন্ধন চন্দননগরের কুণ্ডুঘাটের পুজোয়

Date:

Share post:

ইফতারে একসঙ্গে বসে খেতে দেখা যায় ভানু, অর্পণদের। আবার কখনও ভানুরা বিপদে পড়লে ছুটে আসেন আব্দুল, শেখ আইনুর, শেখ ইসলামরা। এ ভাবেই একে অপরের সঙ্গে নানা আনন্দে মাতেন ওঁরা। প্রায় ৪৭ বছর ধরে একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে এ ভাবেই রয়েছেন চন্দননগরের কুণ্ডুঘাট উত্তর পূর্বাঞ্চল সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো সমিতির সদস্যরা। সাবেক ফরাসডাঙায় আলোর উৎসবে এই পুজো ঠিক যেন বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের ভিতকে মজবুত করেছে।

চন্দননগর ও চুঁচুড়া দুই শহরের সীমানায় কুণ্ডুঘাট। অনেক বছর ধরেই সেখানে হিন্দু ও মুসলিম পরিবারের বসবাস। সেই সুবাদেই প্রায় ৪৭ বছর আগে এই পাড়ার হিন্দু বাড়ির সদস্যরা জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করার কথা ভেবেছিলেন। তা জানাজানি হতেই এগিয়ে আসেন পাড়ার মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরাও। হিন্দু ও মুসলিম পরিবারেরা উভয়েই পুজোর খরচ তোলার জন্য চাঁদা দেওয়া শুরু করেন। একই সঙ্গে বাড়ি বাড়ি ঘুরে পুজোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন। পুজোর কাজেও মুসলিমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ভাসানের সময় বড় প্রতিমা ট্রাকে তোলার কাজেও কাঁধে কাঁধ মেলান সবাই। সেই রেওয়াজ এখনও চলে আসছে।

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এ বছর পুজো কমিটির ২০ জন সদস্যের মধ্যে ১২ জন মুসলিম। মাসিক কিস্তিতে পুজোয় অনুদান দেন পুজো কমিটির হিন্দু-মুসলিম সকল সদস্য। এ বার পুজো কমিটির সম্পাদক অমরগৌতম দত্ত। কোষাধ্যক্ষ্য শেখ বাবু। দু’জনেই এক সুরে দাবি করেন, বাবা-কাকাদের দেখানো পথ অনুসরণ করেই আমরা সম্প্রীতির জগদ্ধাত্রী পুজো করে আসছি।

নমাজ পাঠ করেই প্রতিমার চক্ষুদানে হাজির হয়ে শেখ বাবু বলেন, ‘আমদের সব কিছুই এক সঙ্গে হয়। সারা বছর আড্ডা দেওয়া, খাওয়া দাওয়া, পুজোর চাঁদা তোলা চলে।’ পুজোর সম্পাদক অমরগৌতম দত্ত বলেন, ‘ওঁদের কেউ মারা গেলে আমরা যাই। আবার ওঁরাও আমাদের কেউ মারা গেলে আমাদের সঙ্গে শ্মশানে যান। এখানে ধর্মের থেকে মানুষ বড়।’

আরও পড়ুন- বিশ্বকাপে ‘দশে দশ’ পাওয়া ভারত ফাইনালে হার, কোথায় ব‍্যর্থ হলো রোহিতরা?

 

spot_img

Related articles

গণমাধ্যমই সাঁটিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশী তকমা! জবাব দিতে তৈরি বাংলা

পেশায় শ্রমিক। পেটের দায়ে তারা নানা জায়গায় ছোটেন। কাজের তাগিদে অন্যত্র গেলেই একশ্রেণির মিডিয়া চিৎকার করে ওঠে, ওই...

বিহারের ফলাফলে বাংলা নিয়ে মোদির স্বপ্ন ‘সেগুড়ে বালি’: ধুইয়ে দিল তৃণমূল

একদিকে যখন বিহারে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে, তখন বাংলার বিজেপি নেতারা হঠাৎই আবির খেলা, মিষ্টিমুখে মেতে উঠেছেন। ফলাফল...

SIR আতঙ্কে মৃত্যু: পরিবারের পাশে তৃণমূল নেতৃত্ব

SIR–এর আতঙ্কে প্রায় এক সপ্তাহ আগে আত্মঘাতী হন মুর্শিদাবাদের কান্দি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাগডাঙা এলাকার বাসিন্দা মোহন...

দিল্লি বিস্ফোরণের জের: রাজ্যের বিশেষ বিশেষ স্থানে ঢেলে সাজছে নিরাপত্তা

রাজধানীতে গোয়েন্দা ব্যর্থতা স্পষ্ট। সেই সঙ্গে অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দিল্লি পুলিশও। দিনভর ঘাতক গাড়ি ঘুরে বেড়ালো, অথচ...