বিশ্বকাপে ‘দশে দশ’ পাওয়া ভারত ফাইনালে হার, কোথায় ব‍্যর্থ হলো রোহিতরা?

না হলো না। ২০০৩ এর বদলা ২০২৩ এ হলো না। ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল নির্ধারিত হতেই, আপামর ভারতবাসী চেয়েছিলেন ২০০৩ একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বকাপের বদলা নিতে। রবিবার রোহিতরা নামলেন, কিন্তু পারলেন না। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ব‍্যাটিং-বোলিং সব কিছুতেই কেমন ধরাশাই হয়ে গেল ২০২৩ বিশ্বকাপে এক ম‍্যাচেও না হারা টিম ইন্ডিয়া। ফাইনালে কার্যত দাপট দেখাল প‍্যাট কামিন্সের দল। বিশ্বকাপে দাপট দেখানো ভারতের কোথায় গলদ হলো ফাইনালে? কোথায় ব‍্যর্থ? খুঁজতে গিয়ে উঠে এলো একাধিক কারণ। চলুন একবার দেখে নেওয়া যাক ম‍্যাচ হারার কারণ।

*) রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনালেই সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখে ভারতের ব‍্যাটিং অর্ডার। মিডল অর্ডার-লোয়ার মিডল অর্ডারের ব‍্যর্থতা। রোহিত শর্মা ৪৭ রানে আউট হয়ে যাওয়ার পর বড় রানের পার্টনারশিপ কেউ গড়ে উঠতে পারেনি। বিরাট কোহলি-রাহুল দু’জনই অর্ধশতরান করলেও, পার্টনারশিপ জমে ওঠেনি এই দুই ক্রিকেটারের। পার্টনারশিপ বাড়লে ভারতের রান সংখ‍্যাও বাড়ত। তবে লড়াই করার জায়গায় থাকত। যেই কথা ম‍্যাচ শেষে শোনা যায় রোহিতের মুখেও। ওপরদিকে ব‍্যর্থ ভারতের লোয়ার মিডল অর্ডার। রবীন্দ্র জাদেজা এবং সূর্যকুমার যাদব। দু’জনই ব‍্যাট হাতে ব‍্যর্থ। ম্যাচের আগে এই বিষয়টিকে খামতি হিসাবে ধরা হয়েছিল। সেটা খামতিই থেকে গেল। জাদেজা মোটে ৯ রান করলেন। আর সূর্য করেন মাত্র ১৮। এদিন সূর্যকুমারের ব‍্যাট আবার তুলল একাধিক প্রশ্ন। যেই খেলা দেখে বিরক্ত ছাড়া আর কিছুই লাগছিলো না। একজন টি-২০ ক্রিকেটের নায়ক একদিনের ক্রিকেটে ডাহা ফেল।

*) ভারতের কাছে ব‍্যাটিং-এ ছিল না কোন বিকল্প পরিকল্পনা। চলতি বিশ্বকাপে ভারতের সেমিফাইনাল-সহ অন্যান্য ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময় একটা দ্বিতীয় পরিকল্পনা ছিল। ক্রিজে দুই ওপেনার থাকার সময় একজন ধরে খেলছিলেন, আর একজন আক্রমণ করছিলেন। কেউ আউট হলে নতুন যিনি নামছিলেন তিনি ধরে খেলছিলেন, অপরজন মারছিলেন। কিন্তু ফাইনালে দেখা গেল না সেই ছবি। ভারতের ব্যাটিংয়ে কোনও দ্বিতীয় পরিকল্পনা চোখে পড়েনি। কিছুটা দেখা গিয়েছে কোহলি এবং রাহুলের জুটি। এছাড়া সবাই ব‍্যর্থ।

*) ফিল্ডিং-এ প্রচুর রান দেওয়া। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ফিল্ডিংয়ে খুব কম করে হলেও রান বাঁচিয়েছে ৪০-৪৫। অসাধারণ ফিল্ডিং করেছে তারা। ইনিংসে অতিরিক্ত মোট রান দিয়েছে ১২। সেখানে ভারতের ফিল্ডারেরা যথেষ্ট বল গলালেন। সহজ বলও পায়ের তলা দিয়ে গলিয়ে দেন রাহুল। সেই ছবি ফাইনালে ধরা পরেছে একাধিকবার। শামি এতটা বাইরে বল করলেন যে রাহুল ঝাঁপিয়েও ধরতে পারলেন না। এরকমই প্রচুর রান ফিল্ডিংয়েই গলিয়ে দিল ভারত। ফলে অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়া করা আরও সহজ হয়ে যায়।

*) ভারতের বোলিং। যশপ্রীত বুমরাহ-মহম্মদ শামি-মহম্মদ সিরাজরা উইকেট নিলেও, লাবুশানে-হেডের জুটি ভাঙতে ব‍্যর্থ হয় ভারতীয় বোলাররা। অজি এই দুই ক্রিকেটার ম‍্যাচের ভিত গড়ে দিয়ে যায়। ৪৭ রানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ৩টি উইকেট তোলার পরও আর উইকেট নিতে পারলো না  ভারতীয় বোলাররা। ধার কমে যায় বোলিং ভাগে। কাউকে এনেই সাফল্য পাওয়া যাচ্ছিল না। এর জন্যেও পরিস্থিতি দায়ী। পিচ থেকে এক ফোঁটা সাহায্য পাওয়া যায়নি। যদিও এই পিচে অশ্বিনের কথা উঠছিল বারবার। মনে করা হচ্ছিল সিরাজকে বসিয়ে অশ্বিন নামানো হবে। কিন্তু উইনিং জুটি ভাঙতে চাননি রোহিত। এই পিচে অশ্বিনের না থাকাটাও বড় ফ‍্যাক্টর হয়ে দাঁড়াল।

আরও পড়ুন:ফাইনালে অজিদের কাছে হেরে কী বললেন রোহিত?

 

 

Previous articleফাইনালে অজিদের কাছে হেরে কী বললেন রোহিত?
Next articleBreakfast news : ব্রেকফাস্ট নিউজ