দু’হাজারের নোটে কার লাভ? সংসদে প্রশ্ন উঠতেই এড়িয়ে যাচ্ছে মোদি সরকার

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাধের দু’হাজারি নোটের আয়ু শেষ মাত্র সাত বছরেই! মোদির হঠকারী সিদ্ধান্তের মাশুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নোট বন্দির পর চালু হয়েছিল দু’হাজার টাকার নোট। খরচ প্রায় ১৮ হাজার কোটি। যার পুরোটাই সাধারণ মানুষের করের টাকা। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যদি নোট বাজারে রাখতেই না হয়, তাহলে এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের মানে কী? সেই সময় প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, জাল নোটে বাজার ছেয়ে গিয়েছে বলেই আচমকা নোট বাতিলের পদক্ষেপ। আর তারপরই দু’হাজার টাকা চালুর সিদ্ধান্ত। কিন্তু কালো টাকা ও জাল নোটের রমরমা বন্ধ করতে ব্যর্থ মোদি সরকার।

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধী দল তৃণমূলের সাংসদ-অভিনেতা দীপক অধিকারীর (দেব) এমনই প্রশ্ন তুলেছিলেন। উত্তরে অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী লিখিতভাবে জানিয়েছেন, ‘শুধু দু’হাজার টাকার নোট ছাপতেই খরচ হয়েছে ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাঙ্ক অব বরোদা, ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার মতো ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে দু’হাজার টাকার নোট সাজাতে (রিক্যালিব্রেট) খরচ হয়েছে ৩২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। ২০২৩ সালের ১৯ মে সিদ্ধান্ত হয় দু’হাজারের নোট বাজার থেকে তোলার। এ পর্যন্ত ৮৯ শতাংশ নোটই ব্যাঙ্কে ফিরে এসেছে। তবে বাজারে এখনও রয়েছে ৯ হাজার ৭৬০ কোটি টাকার দু’হাজারি নোট।’

২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর আচমকা নোট বাতিল ঘোষণা করেন নরেন্দ্র মোদি। অথচ, সরকারের ঘরে ৫০০ ও হাজার টাকার নোট ফিরে এসেছিল প্রায় পুরোটাই। তাহলে কালো টাকা গেল কোথায়? আদৌ কি কালো টাকা ছিল? তাহলে কেন নোট বাতিল হল? দু’হাজারের নোট কেন এল, আর কেনই বা তুলে দেওয়া হল? এই স্বল্পমেয়াদি নোটের জন্য কে বা কারা সুবিধা পেল? মোদি সরকারের তথ্য প্রকাশের পর থেকেই এই প্রশ্নগুলো মাথাচাড়া দিয়েছে।

তৃণমূলেরই আরেক সাংসদ মালা রায় প্রশ্ন করেন, ‘দেশের রিয়েল এস্টেটে কত কালো টাকা ঘুরছে? সরকার তার জন্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে?’ অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী গোড়াতেই জানিয়ে দিয়েছেন, ‘রিয়েল এস্টেট কেন, গোটা দেশে কত পরিমাণ কালো টাকা ঘুরছে, তার কোনও হিসেব সরকারের কাছে নেই।’ সবমিলিয়ে মোদি সরকার এড়িয়ে যাচ্ছে দেশে কালো টাকার পরিমাণ কত? এবং দু’হাজারের নোটে সত্যিই কার লাভ হল? এই দুই প্রশ্ন!

Previous articleআজ রাত ১০টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ দ্বিতীয় হুগলি সেতুর হাওড়াগামী দুটি লেন
Next articleশহরে সলমন, চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে যোগ দিতে কলকাতায় হাজির সুপারস্টার