Thursday, August 28, 2025

বেনজির,১২ বছর পর আইনজীবী হয়ে খু.নির তকমা মুছলেন উত্তরপ্রদেশের অমিত

Date:

এ যেন সিনেমার চিত্রনাট্য। যা আপনাকে বেঁচে থাকার নতুন করে রসদ দেবে।ঘটনার সূত্রপাত বারো বছর আগে। অমিত চৌধুরীর বয়স ছিল ১৮। উত্তরপ্রদেশের মীরাটে দুই কনস্টেবলকে হত্যার দায়ে চাপিয়ে দেওয়া হয় তাঁর কাঁধে। এমনকী জুটে যায় ‘গ্যাংস্টার’-এর তকমা। উত্তরপ্রদেশে সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মায়াবতী। তাঁর নির্দেশে গ্রেফতার করা হয় অমিতকে। রাতারাতি অমিতের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।

ঘটনার সময়ে অমিত তাঁর বোনের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের শহর শামলিতে ছিলেন। তবুও কনস্টেবল হত্যায় অভিযুক্ত ১৭ জনের মধ্যে তাঁর নাম জুড়ে দেওয়া হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধি ও জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অমিতের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগ আনা হয়েছিল। যদিও এই খুন করেছিল কুখ্যাত কালী গ্যাং। অমিতের দু’বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু চুপ করে থেমে থাকেননি অমিত।জেলেই শুরু করেন আইন নিয়ে পড়াশোনা।শেষ পর্যন্ত প্রমাণ করে দেন যে, তাঁর কোনও দোষই নেই।

কৃষক পরিবারের অমিত বলছেন, ‘মুজাফফরনগর জেলে কুখ্যাত গ্যাংস্টার অনিল দুজানা ও ভিকি ত্যাগী (দু’জনেরই এনকাউন্টার হয়) আমাকে ওদের দলে টানার চেষ্টা করেছিল অপরাধমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে। তবে জেলর ছিলেন ভালো মানুষ। তিনি বুঝতে পারেন। আমাকে পাঠান ব্যারাকে। যেখানে গ্যাংস্টাররা ছিল না।’ অমিত বদ্ধপরিকর ছিলেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য। যাতে তাঁর পরিবারের লোক মাথা তুলে সমাজে বাস করতে পারে। যাবতীয় প্রতিকূলতার মধ্যেই বিএ, এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন অমিত। বার কাউন্সিলের পরীক্ষাও পাশ করেন। অমিত বলেন, ‘সেই সময়ে কোনও বিবৃতি নথিভুক্ত না করেই, আমরা মামলাটি শামুকের গতিতে চলছিল৷ ততক্ষণে, আমি আইনজীবী হিসাবে বারে যোগদানের জন্য যাবতীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করে ফেলি।

আইনজীবী হিসাবে যখন নিজেই নিজের মামলা লড়ছিলাম, তখন কাগঠড়ায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা আধিকারিকরাও আমাকে চিনতে পারেননি। বিষয়টি বিচারককে বিভ্রান্ত করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন যে, আমাকে ভুলভাবে ফাঁসানো হয়েছে। কনস্টেবল হত্যার মূলচক্রী সুমিত কালী, নীতু ও ধর্মেন্দ্রর ছিল আলাদা ললাটলিখন। কালীকে ২০১৩ সালে এনকাউন্টার করা হয়। নীতুর আজীবন কারাদণ্ডের সঙ্গেই ২০ হাজার টাকার জরিমানা হয়। সে কনস্টেবলের বন্দুকও কেড়ে নিয়েছিল। ধর্মেন্দ্র বিচারের আগেই ক্যানসার ধরা পড়ে।

অমিত আরও বলছেন, ‘প্রস্তুতি নিয়েও আমার সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্নভঙ্গ হয়। তবে ২০১১ সালের ওই কালো রাত আমার জীবন বদলে দিয়েছে। আমি ফৌজদারি বিচার নিয়ে পিএইচডি করতে চাই। আমি মনে করি ঈশ্বর আমাকে বাকি হতভাগ্যদের জন্য লড়াইয়ের জন্য বেছে নিয়েছেন। এটাই এখন আমার নিয়তি।’ অমিতের এই লড়াই আগামী দিনে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

 

Related articles

ওয়াক ফর প্যারালিম্পিকসে হাঁটলেন একাধিক বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন অ্যাথলিটরা

প্রতিবছরের মতো এই বছরও হয়ে গেল সিভিলিয়ান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে walk for paralympics পদযাত্রা। এই পদযত্রা শুরু হয়েছিল...

পদপিষ্ট হওয়ার প্রায় ৮৪ দিন পর নীরবরতা ভাঙল RCB

আরসিবির(RCB) বিজয়োল্লাসের সেই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটার পর প্রায় ৮৪ দিন পর  নীরবতা ভাঙল রয়্যাল চ্যালেঞ্জারেস বেঙ্গালুরু। সেই ঘটনার...

আমাকে স্টেনগান-পাইপগান নিয়ে তাড়া করেছিল: গায়ে কাঁটা দেওয়া অভিজ্ঞতা শোনালেন তৃণমূল সভানেত্রী

তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) প্রতিষ্ঠা দিবস। আর বৃহস্পতিবার সেই সমাবেশে বক্তব্য রাখতে উঠে স্মৃতি মেদুর তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো...

এখনও চুপ মোদি! শুল্ক লাগুর পরেও ভারত নিয়ে কুকথা ট্রাম্পের পারিষদদের

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে বারবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ তিনি থামিয়েছিলেন। তখন চুপ করেছিলেন...
Exit mobile version