দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে ফের ইজরায়েলি ট্যাঙ্কের আ.ক্রমণে মৃ.ত্যু মিছিল

বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে প্রচন্ড শব্দ এবং ঘন সাদা ধোঁওয়ায় শহর ঢেকে গিয়েছিল

ইজরায়েলি ট্যাঙ্কগুলি ফের দক্ষিণ গাজা উপত্যকার প্রধান শহরে আক্রমণ চালাল। বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে রাতের তীব্র লড়াইয়ের পর খান ইউনিসের মধ্য দিয়ে ট্যাঙ্কগুলি প্রথমে উত্তর-দক্ষিণ দিকে পৌঁছায়।একই সঙ্গে পূর্ব দিক থেকে ইজরায়েলি যুদ্ধবিমান ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছিল।

বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে প্রচন্ড শব্দ এবং ঘন সাদা ধোঁওয়ায় শহর ঢেকে গিয়েছিল। মূলত ওই এলাকায় ছিটমহলের অন্যান্য অংশ থেকে পালিয়ে চলে আসা কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। সিটি-সেন্টার থানার কাছে সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেশিনগানের ক্রমাগত শব্দ শোনা যায়।গাজা শহর থেকে বাস্তুচ্যুত এবং খান ইউনিসে আশ্রয় নেওয়া চার সন্তানের বাবা  বলেছেন, এটি ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রাতগুলির মধ্যে একটি। আমরা গুলির শব্দ এবং বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম যা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে। তিনি প্রতিশোধের ভয়ে পরিচয় প্রকাশ করতে অস্বীকার করেন।

যা পরিস্থিতি, রাতারাতি বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া খান ইউনিসের বাড়িটির ধ্বংসস্তূপে মৃতদের স্বজনরা পরিজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন। একের পর এক মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে।হাতেগোনা যে কজন বেঁচে আছেন, তারা বলছেন যে, আমরা রাতের নামাজ পড়লাম এবং ঘুমাতে গিয়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠে খোঁজা শুরু করেছি ‘কে বেঁচে আছে?!

গাজার হামাস শাসকদের সহযোগী জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ বলেছে যে তাদের যোদ্ধারা ওই এলাকায় ইজরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে।এদিকে ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে তারা খান ইউনিসে ভূগর্ভস্থ টানেল শ্যাফ্টে বোমাবর্ষণ করেছে এবং ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের একটি স্কোয়াডকে আক্রমণ করেছে।গাজার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন, ইজরায়েলি হামলায় অন্তত ১৭ হাজার ৭০০ জন নিহত হয়েছে। আরও হাজার হাজার নিখোঁজ এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে মৃত বলে মনে করা হচ্ছে।গাজার সিংহভাগ বাসিন্দাকে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। ইজরায়েল বলেছে যে তারা তাদের রক্ষা করার জন্য যা করতে পারে তা করছে।

কাতারের রাজধানী দোহায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করেছিল, যাতে ১০০ জনেরও বেশি পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছিলেন।কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বলেছেন, যুদ্ধের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের পুরো একটি প্রজন্ম জেহাদি মনোভাবাপন্ন হয়ে উঠতে পারে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির আবেদনে ‘হাল ছাড়বেন না’। তিনি বলেছেন, “আমি নিরাপত্তা পরিষদকে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে চাপ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি এবং আমি একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার জন্য ফের আবেদন করেছি।” ইজরায়েল যুদ্ধ বন্ধের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন যে তিনি ফ্রান্স, জার্মানি এবং অন্যান্য দেশের নেতাদের বলেছেন, যুদ্ধ শেষ করার জন্য আমাদের চাপ দিতে পারবেন না। হামাসকে নির্মূল করা হবে।

 

Previous articleএক ফ্রেমে দুই কিংবদন্তি: চুটিয়ে আড্ডা দিলেন আশা-সচিন!
Next articleমুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তার রাতারাতি ভোলবদল