বিধানসভায় বাড়ছে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা, স্পিকারের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত

নিরাপত্তাকর্মী বাড়ানো থেকে বিধায়কদের সঙ্গে আসা অতিথিদের ঢোকা-বেরোনোর নিয়মে আনা হয় বেশ কিছু বদল।

বিধানসভা ভবন

১৩ ডিসেম্বর সংসদে হামলার (Parliament security breach) পরই বিধানসভার নিরাপত্তা বাড়ানো নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা। মঙ্গলবার বিধানসভা ভবনে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছিলেন বিধানসভার সচিবালয়ের অধিকারিক, নিরাপত্তা আধিকারিকরাও। পরে অধ্যক্ষ জানান, বিধানসভার নিরাপত্তা পর্যালোচনা করে বেশ কিছু শৈথিল্য ধরা পড়েছে। তা দূর করা হবে। বিধানসভায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করতে পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছে। বেশ কিছু নতুন বিধিনিষেধ চালু করা হচ্ছে। সেগুলি বুলেটিন আকারে প্রকাশ করা হবে। সর্বদল বৈঠক ডেকে সমস্ত সদস্যদের তা জানানো হবে।

সূত্রের খবর, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে মন্ত্রী, বিধায়ক, বিরোধী দলনেতার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীদের বসার জন্য আলাদা জায়গা করা হচ্ছে। l পাশাপাশি বিধানসভায় বাহিনী বৃদ্ধি করার জন্য পুলিশকেও বলা হয়েছে।

কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, বিধানসভার নিরাপত্তায় আমরা সবসময় কড়া নজর রাখি। নিয়মিত পর্যালোচনা করা হয়। লোকসভার ঘটনার থেকে শিক্ষা নিয়ে বিধানসভার নিরাপত্তায় কড়া নজর রাখা হচ্ছে। আমাদের স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে রিজার্ভ ফোর্স, স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় রেখে কাজ করে। তবে যে কোনও নতুন ঘটনা আমাদের অনেক কিছু শেখায়।

বর্তমানে বিধানসভা নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে ২৫ জন। আরও ২০ জন নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানো হবে। তাঁদের একাধিক শিফটে (shift) মোতায়েন করা হবে। এছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে ১০ জন নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানোর সুযোগ রাখা থাকবে।

২২ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত বিধানসভায় প্রতি বছরের মতো পুষ্পমেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেই মেলাতেও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী ও দর্শকদের জন্য আকাশবাণীর সামনের গেট খোলা রাখা হবে। অংশগ্রহণকারীদের বিশেষ পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রদর্শনীর সময় যাতে বহিরাগত কারও জন‌্য বিধানসভার নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়, তার জন‌্য কড়া নজরদারির বন্দোবস্ত করা হচ্ছে বলে বিধানসভা সূত্রে খবর। বিধানসভার পুষ্প প্রদর্শনীতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমজনতারও প্রবেশাধিকার থাকে। তার জন‌্য আকাশবাণীর উলটোদিকে তিন নম্বর ফটক খোলা থাকবে। এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী বা আমজনতা, যাঁরাই এই কদিন আসবেন, বিধানসভার ক্ষেত্রে তাঁরা প্রত্যেকেই বহিরাগত। সে কথা মাথায় রেখে এবার গোটা প্রদর্শনীপর্বই থাকবে কড়া প্রশাসনিক নজরদারি। সাদা পোশাকে নজরদারি বলয় জোরদার করা হচ্ছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে বিধায়কদের পরিচয়পত্র রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের গাড়িতে স্টিকার (sticker) না থাকলে গাড়ি ভিতরে ঢুকতে পারবে না। সেক্ষেত্রে গাড়ি বাইরে রাখতে হবে। বিধায়ক, মন্ত্রী, বিরোধী দলনেতার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীদের (personal security) আলাদা বসার জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বিধায়কদের অতিথিরা বিধায়কদের সঙ্গে একসঙ্গে ঢুকতে পারবে না। কোনও দর্শক দুঘণ্টার বেশি বিধানসভার ভিতরে থাকতে পারবেন না। দুঘণ্টা পেরিয়ে গেলে বেরোনোর সময় নিরাপত্তাকর্মীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। প্রত্যেক দর্শকের ছবি তুলে রাখা হবে। তার জন্য প্রত্যেক গেটে বসবে ওয়েবক্যাম (webcam)। দর্শকরা শুধুমাত্র বিধানসভার পশ্চিম গেট দিয়েই ঢুকতে পারবেন।

অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিধানসভার নিরাপত্তা নিয়ে সর্বদল বৈঠক (all party meeting) হবে। তবে নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা সব দল এবং বিধায়কদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

Previous articleদশম শ্রেণীতে দেশে ড্রপআউটের হার ২০.৬ শতাংশ, তালিকায় শীর্ষে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রীর রাজ্য
Next articleবাংলার গরিব মানুষকে বঞ্চনা কেন্দ্রের, ব্রিগেডে মোদির গীতাপাঠের খরচ ৫কোটি!