“কাশ্মীরের পরিণতি গাজার মত হতে পারে”, আশঙ্কা ফারুকের

কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স সাংসদ ফারুক আবদুল্লাহ। প্রতিবেশী পাকিস্তানের কথা উল্লেখ করে তিনি জানালেন, সমস্যার সমাধান না হলে গাজা ও প্যালেস্টাইনের মতো পরিণতি হতে পারে কাশ্মীরের।

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না পেলে ভারত গাজা ও প্যালেস্টাইনের মতোই পরিণতি পেতে পারে কাশ্মীরের। আমরা যদি আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ থাকি তবে উভয়ই উন্নতি করবে।” তিনি ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের নেতাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আবেদন জানিয়ে বলেন, “অটল বিহারী বাজপেয়ী (প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী) বলেছিলেন আমরা আমাদের বন্ধু বদলাতে পারি কিন্তু প্রতিবেশী নয়। আমরা যদি আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ থাকি, তাহলে উভয়ই উন্নতি করবে।” এছাড়াও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নরেন্দ্র মোদিও বলেছেন যে যুদ্ধ এখন বিকল্প নয় এবং বিষয়গুলি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।”

ভারত সরকার পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় আগ্রহী নয় এমন অভিযোগ করে আবদুল্লাহ বলেন, “নওয়াজ শরীফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন এবং তারা বলছেন যে তারা ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত, কিন্তু আমরা কথা বলতে প্রস্তুত নই কেন? আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করুন, যদি আমরা তা না করি, গাজা এবং প্যালেস্টাইনের মতো একই পরিণতি হবে কাশ্মীরের।” সাম্প্রতিক সময়ে জম্মু-কাশ্মীরে লাগাতার জঙ্গি হামলার ঘটনার মাঝে ফারুক আব্দুল্লাহর এই বক্তব্য নিশ্চিতভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ।

গত সপ্তাহে পুঞ্চে অতর্কিত হামলায় পাঁচ ভারতীয় সেনা সৈন্য নিহত হয়েছিল, বারামুল্লা মসজিদের ভিতরে একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনার তরফে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে স্থানীয়কে আটক করার পর তাদের মধ্য থেকে তিনজন সাধারণ মানুষের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই পরিস্থিতিতে ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রসঙ্গ তুলে ফারুক বলেন, ” সব স্বাভাবিক আছে বলে চিৎকার করে বা পর্যটকদের আগমনকে শান্তি বলে প্রচার করে সন্ত্রাস শেষ হবে না। কেন্দ্র এবং শাসক দল বিজেপি দাবি করছিল যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ (২০১৯ সালে) বাতিলের সাথে সন্ত্রাসবাদ শেষ হয়েছে। কিন্তু চার বছর ধরে, সন্ত্রাস এখনও আছে এবং আমরা ইতিবাচক চেষ্টা না করা পর্যন্ত শেষ হবে না।”

তিনি বলেন, “সেনা অফিসারদের মৃত্যুর ঘটনায় আমরা মর্মাহত। যারা স্বাভাবিকতার দাবি করছে তারা কিন্তু নীরব… তারা মূল কারণটি সমাধান না করেই ক্ষত সারানোর চেষ্টা করেছে। সাধারণ মানুষের বোঝা উচিত যে আমরা আমাদের সৈন্য, অফিসারদের হারাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সরকারকে বুঝতে হবে শুধুমাত্র নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ শেষ হবে না। আমরা ভারতের অংশ ছিলাম এবং চিরকাল থাকব। যদি আমাদের সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটাতে হয়, তবে আমাদের এমন উপায় খুঁজে বের করতে হবে যার মাধ্যমে এটি শেষ করা যেতে পারে।”