কেন্দ্রের কালা কানুনের বিরুদ্ধে উত্তাল দেশ, যোগী রাজ্যে ট্রাক চালকদের উপর পুলিশের গুলি

অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও। ট্রাক চালকদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদে ব্যাপক গণ্ডগোল উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, ছত্তিশগড়, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড সহ বিভিন্ন রাজ্যে

আইন দেশের মানুষের ভালোর জন্য হওয়া উচিত। আইন কোনদিন নিপিড়নের মাধ্যম হওয়া উচিত নয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার যে বিল এনেছে তার তীব্র প্রতিবাদে উত্তাল গোটা দেশ। দেশের মানুষের উপর নিপীড়ন হয়ে উঠবে এই আইন। কায়েম হতে পারে পুলিশি রাজ। এই স্বৈরাচারী কালো
আইনের মধ্যে যদি কোন পথ দুর্ঘটনা হয়ে কারও মৃত্যু হয় তাহলে ট্রাক ড্রাইভারদের ১০ বছর জেল ও ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। তার জন্যই দেশজুড়ে ট্রাক চালকরা পথ অবরোধ করছে।

অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও। ট্রাক চালকদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদে ব্যাপক গণ্ডগোল উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, ছত্তিশগড়, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড সহ বিভিন্ন রাজ্যে। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে আরও খারাপ হতে পারে।এর মধ্যে উত্তর প্রদেশ থেকে ব্যাপক গণ্ডগোলের খবর আসছে। ধর্মঘটীরা পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়তে থাকে। পাল্টা পুলিশের দিক থেকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে।

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দু’দিনে ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি’ সংশোধন করে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ আইন নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ সংহতি ১০৪ (২) ধারায় পথ দুর্ঘটনা সংক্রান্ত নয়া বিধানের সংযোজন করেছে কেন্দ্র ৷ সেখানে বলা হয়েছে, গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে অভিযুক্ত চালক নিজে পুলিশকে ফোন করে সেই কথা জানাবে ৷ তা না-করে চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলে, তার বিরুদ্ধে ‘হিট অ্যান্ড রান’ মামলায় অভিযোগ দায়ের হবে ৷ সেক্ষেত্রে চালকের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে ৷

বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে কলকাতাতেও। সিজিআর রোড ও ডুমায়ুন অ্যাভিনিউয়ের সংযোগস্থলের রাস্তা আটকে রাখেন ট্রাক ও লরি চালকরা। পরে বন্দর এলাকার রামনগর মোড়, অ্যাসবেস্টস মোড়, হাইড রোড, সিক লেনেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ধর্মতলা বা হেস্টিংসের দিক থেকে আসা গাড়িগুলিকে খিদিরপুর ও ডায়মন্ড হারবার রোডের সংযোগস্থল থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, গার্ডেনরিচের দিক থেকে আসা গাড়িগুলিকে ঘোরানো হয় ব্রেস ব্রিজ দিয়ে। এর ফলে সকাল থেকে চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

এই ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, পাপ করেছে মোদি সরকার। সংসদে বিরোধীদের সাসপেন্ড করে দিয়ে অন্যায়ভাবে নিজেদের দালালদের হট্টগোলের মধ্যে বিলটা পাশ করানো হয়েছে। সবই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু অমিত শাহের মতো কিছু বিজ্ঞ অগণতান্ত্রিকভাবে এই বিলগুলি পাশ করিয়েছে। সারা দেশজুড়ে এই ট্রাকচালকদের প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে খেটে খাওয়া মানুষের মুখে মোদি বিরোধী আওয়াজ উঠেছে।

উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের বামনগাছিতেও চলে ট্রাক ও লরি চালকদের সমর্থনে প্রতিবাদ। এখানে রাস্তায় নামেন ম্যাটাডোর চালকরা। সকাল ১০টায় যশোর রোডে বামনগাছি মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মিনি ট্রাক ড্রাইভার্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অ্য়াসোসিয়েশনের সদস্যরা। অবিলম্বে কেন্দ্রের কালা আইন বাতিল করতে হবে বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে একঘণ্টা পর অবরোধ ওঠে। এই ঘটনায় অফিস টাইমে খাস কলকাতা অবরুদ্ধ, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। লরি ও ট্রাক চালকরা বলছেন কেন্দ্রের বর্তমান পরিবহন নীতির পরিবর্তন না হলে তাঁরা নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে এতটুকু সরবেন না।

 

Previous articleনেহরুর চিন নীতির সমালোচনায় জয়শংকর, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে ‘বাস্তববোধহীন’ বলে কটাক্ষ
Next articleরাজ্যে বাড়বে পেঁয়াজের উৎপাদন, ‘বিশেষ’ বীজের যোগানে উদ্যোগ সরকারের