“আমরা কোনও ভাষার বিরোধী নই, কিন্তু আমাদের মাতৃভাষাকে আমরা ভালোবাসি। মাতৃভাষাই আমাদের পরিচয়”। বুধবার চতুর্থ দমদম সঙ্গীত মেলার (Dumdum Sangeet Mela) উদ্বোধনে এমনটাই জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা দমদমের বিধায়ক ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। এদিনের অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাংসদ সৌগত রায় ও বিধায়ক তাপস রায়। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর আগে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন ব্রাত্য বসু সহ অনান্যরা। সেখানেই ব্রাত্য বসু সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান, আমি গানের একজন উদ্যোক্তা মাত্র। আর সেকারণেই আমি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গানের বিষয়ে সবটা বলতে পারব না। আমরা মনে করি সংস্কৃতির মাধ্যমে মানুষকে একত্র করার। পুজো যেমন একটা সংস্কৃতি ঠিক তেমনই এই অনুষ্ঠানও সাংস্কৃতিক বহিঃপ্রকাশ। এদিনের সঙ্গীত মেলার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা।
তবে সঙ্গীত মেলা নিয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে এমন অভিযোগ সামনে এনেছেন বিরোধীরা, আর সেই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদরা ব্রাত্য বসুকে প্রশ্ন করলে তিনি পরিষ্কার জানান, বিরোধীদের যদি মনে হয় সঙ্গীত মেলা নিয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে, তাহলে বলব এসব অপপ্রচার। পারলে একটা সঙ্গীত মেলা করে দেখাক, তাহলে বুঝব। অন্যদিকে, এদিনের অনুষ্ঠানে তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্রের প্রাক্তন বন্ধু তথা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাইয়ের নয়া অভিযোগ ‘ফোনে আড়ি পাতা’ প্রসঙ্গ উঠে আসে। সেই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সাংসদ সৌগত রায় বলেন, মহুয়া কোনও সরকারি পদে নেই। সুতরাং উনি কারও ফোনে আড়ি পাতছেন এটা কীভাবে সম্ভব? ওঁকে যথেষ্ট কষ্ট দিয়েছে আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। পাশাপাশি জোর করে মহুয়ার সাংসদ পদও ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। মহুয়াকে নিয়ে আর বলা উচিত নয়, ওঁর যা বলার উনি নির্বাচনী ময়দানে বলবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উদ্যোগে শুরু হয় এই সঙ্গীত মেলা। তবে এদিন ব্রাত্য সাফ জানিয়েছেন বাংলা গানের কথা মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ। আমরা সঙ্গীত মেলার মাধ্যমে শ্রোতাদের কাছে গান পৌঁছে দিতে চাই। এদিকে দমদমের এই সঙ্গীত মেলায় শুধুই গান নয়, গানের পাশাপাশি মেলা প্রাঙ্গণে অনেক ধরনের স্টল রয়েছে। তবে যদি কেউ যদি তাঁর সন্তানকে গান শেখাতে চান সেক্ষেত্রে গানের স্কুলের স্টলও রাখা হয়েছে। এছাড়া বাদ্যযন্ত্র ও খাবারের স্টল তো আছেই। এছাড়াও চলতি বছরের অনুষ্ঠানে রয়েছে একাধিক চমক। বুধবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে। অনুষ্ঠানে একদিকে যেমন বাংলার প্রতিভাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে তেমনই বাংলাত প্রবীণ ও মুম্বাইয়ের বিশিষ্ট শিল্পীদেরও আমত্রন জানানো হয়েছে। সৌরেন্দ্র- সৌম্যজিৎ, সোমলতা আচার্য, ফসিলস, কার্ত্তিক দাস বাউল, জলি মুখোপাধ্যায়, শিলাজিৎ, ইমন, জলের গান ব্যান্ড সহ বিশিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন দিনে। আগামী রবিবার অর্থাৎ ৭ জানুয়ারি অবধি দমদমের সেন্ট মরিস স্কুল গ্রাউন্ডে এই অনুষ্ঠান চলবে।