সংসদ বিরোধী শূন্য করে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে একের পর এক আইন পাশ করিয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। তবে আইন পাশ করালেও জনরোষের মুখে পড়ে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার তা প্রত্যাহার করে নিল কেন্দ্র। ২০২১ সালের নভেম্বরে প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছিল তিনটি ‘বিতর্কিত’ কৃষি আইন। এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারি ট্রাক চালকদের আন্দোলনে ন্যায় সংহিতার নির্দিষ্ট একটি ধারা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদির সরকার। ফলে সংসদে সংখ্যার জোরে স্বেচ্ছাচারিতা চালালেও মাঠে-ময়দানে আন্দোলনের সামনে কি মাথা ঝোঁকাতে হচ্ছে মোদির সরকারকে।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ন্যায় সংহিতা বিল পাস করিয়ে তাকে আইনে পরিণত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার আগে অবশ্য গণ সাসপেনশনের মাধ্যমে বিরোধীশূন্য করা হয়েছে সংসদ। কিন্তু সেই আইন পাশ হলেও গত কয়েক দিন ধরে ট্রাকচালকদের আন্দোলনে স্তব্ধ হয়ে যায় সারা দেশের পণ্য পরিবহণ। যার আঁচ পড়েছিল স্বয়ং মোদির রাজ্য গুজরাতের বন্দর এলাকাতেও। শেষমেশ বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা পরিবহণ সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসে আশ্বাস দেন, ন্যায় সংহিতার ১০৬/২ ধারা আলোচনা না করে কার্যকর করা হবে না। যে ধারায় বলা হয়েছে, ট্রাকচালকেরা কাউকে চাপা দিয়ে পালিয়ে গেলে ১০ বছরের জেল ও সাত লক্ষ টাকা জরিমানা হবে। ট্রাকচালকেরা ‘অন্যায়’ সম্পর্কে বলেছেন, দুর্ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাঁদের উপায় থাকে না। নচেৎ গণপিটুনিতে তাঁদেরও প্রাণ যাবে।
সাধারণ মানুষের মন না বুঝে শুধু সংখ্যার দম্ভে সরকার চালানো বিজেপির কাছে এই ঘটনা নিশ্চিতভাবে লজ্জার। আর এই ঘটনা প্রসঙ্গে লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরীর কথায়, “সঠিক দাবিতে সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলন হলে খাতায়কলমে প্রতাপশালী নরেন্দ্র মোদী সরকারকেও মাথা নিচু করতে হয়, তা প্রমাণিত হল।” বাম কৃষক নেতা হান্নান মোল্লার বক্তব্য, “অনেক দাবিতে আন্দোলন করলে তা দানা বাঁধে না। যদি নির্দিষ্ট দাবি থাকে এবং আদায় করবই, এই মেজাজ থাকে, তা হলে সেই আন্দোলনের জয় অনিবার্য। কৃষক আন্দোলন তা দেখিয়েছিল। ট্রাকচালকদের আন্দোলনে তা ফের এক বার প্রমাণিত হল।”