আজ কী ঘটেছিল?

রাহুল দেববর্মন(১৯৩৯-১৯৯৪) এদিন সুরলোকে চলে গেলেন। সুরকার, গায়ক এই মানুষটি তখনকার ইন্ডাস্ট্রির চেয়ে একশো ভাগ এগিয়েছিলেন। সত্তরের দশক ছিল আর ডি-র দশক। আর ডি বর্মন মানে যেমন এক মুঠো ঝলমলে উচ্ছ্বাস তেমনই আর ডি বর্মন মানে সংযম, যা কৃতী সুরকারের অন্যতম পরিচয়। যেমন, ‘মুসাফির হুঁ ইয়ারো’ গানটির সুর করছেন যখন আর ডি তখন সারারাত গাড়ি করে মুম্বইয়ের পথে পথে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন তিনি। তার পর যে গান হল তাতে রিদিমের একটাই প্যাটার্ন থাকল। ইন্টারলিউডে গানের মুখড়া বাজল। ব্রেক করে অন্য কোনও যন্ত্র এনে গানের মেলোডি নষ্ট করতে চাননি আর ডি। এই সংযমটাই শিক্ষার বলে মনে করেন অনেক শিল্পী ও সুরকার। এক সময়ে বছরে সতেরোটা ছবির জন্য গান তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু আত্মবিশ্বাস, গান নিয়ে পড়াশোনার ফলে নিজের মধ্যে যে ক্ষমতার বলয় তৈরি করেছিলেন তিনি, সেই বলয় তাঁকে বরাবর বাজারি নিয়মকে ভেঙে অন্য রাস্তায় গান বাঁধার স্বপ্নকে সুরে ভাসিয়েছিল। সেই সুরে দিকদিগন্ত আজও পঞ্চমমুখর!

১৯২৭ ‘পথের দাবী’ বাজেয়াপ্ত করল ব্রিটিশ সরকার। প্রথমে ‘পথের দাবী’ প্রকাশ করতেই রাজি ছিলেন না কথাসাহিত্যিক। কিন্তু বঙ্গবাণী পত্রিকার মালিক ছিলেন নাছোড়বান্দা। জোর করেই সম্মতি আদায় করেন। তিন বছর তিন মাস ধারাবাহিকভাবে সেই পত্রিকায় প্রকাশিত হয় উপন্যাসটি। ১৯২৬ সালের মাঝামাঝি বই আকারে বের হয়। ‘পথের দাবী’র নায়ক সব্যসাচী ঝড় তোলেন পাঠকের মনে। তারপরেই ব্রিটিশ-বিরোধী উপন্যাসটিকে নিষিদ্ধ করতে আসরে নামেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্ট। মৃদু আপত্তি শোনা গিয়েছিল বাংলার অস্থায়ী মুখ্যসচিব প্রেন্টিস সাহেবের গলায়। কিন্তু বিপ্লবীদের মনোবল বাড়ার সম্ভাবনাকে অঙ্কুরেই বিনাশ করতে চেয়েছিলেন টেগার্ট। তার আগেই অবশ্য বিক্রি হয়ে গিয়েছিল বইয়ের প্রথম সংস্করণ, তিন হাজার কপি।

১৮৬১ মেঘনাদবধ কাব্য : প্রথম খণ্ড এদিন প্রকাশিত হয়। দু’খণ্ড ও নয় সর্গে রচিত মাইকেল মধুসূদন দত্তের মহাকাব্য এটি। মধুসূদনের লক্ষ্য ছিল এমন একটি কাব্য রচনা করা যাতে ভারতবর্ষ এবং ইউরোপের মহাকাব্যের ঐতিহ্যের সমন্বয় ঘটবে এবং যা স্থায়ী ধ্রুপদী সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করবে। এই কাব্যের মাধ্যমে তিনি তাঁর এ-স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেন। মহাকাব্যটি রচনার জন্যে মধুসূদন অমিত্রাক্ষর ছন্দ নামে এক নতুন বাংলা ছন্দ নির্মাণ করেন। এ-ছন্দে তিনি মধ্যযুগের চৌদ্দ মাত্রার পয়ার ছন্দ বজায় রেখেছেন, কিন্তু যতির সুনির্দিষ্ট স্থান বদল করে পঙ্‌ক্তির যে-কোনও জায়গায় রাখার স্বাধীনতা নিয়েছেন, আর সেইসঙ্গে নিয়েছেন এক পঙ্‌ক্তি থেকে আর এক পঙ্‌ক্তিতে অবলীলায় যাওয়ার প্রবহমানতা।

১৯৩২ সাগর সেন (১৯৩২-১৯৮২) এদিন কলকাতার বরানগরে জন্মগ্রহণ করেন। প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে আকাশবাণীতে তাঁর গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রথম রেকডিং হয়। ১৯৬৮ সালে রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য ‘মায়ার খেলা’য় তাঁর গাওয়া ‘আমি জেনে শুনে বিষ করেছি গান’ তাঁকে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেয়। স্বকীয় উপস্থাপনা শৈলীতে বেশ কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত অন্য এক মাত্রায় নিজস্বতা পেয়েছে। সহজিয়া রীতিতে আর আবেগাপ্লুত গায়কিতে তাঁর নিবেদিত সঙ্গীতের মূর্ছনা শ্রোতাদের বিভোর করে। পরবর্তী সত্তর ও আশির দশকে তৎকালীন গ্রামোফোন কোম্পানি অব ইন্ডিয়া (বর্তমানের সারেগামা ইন্ডিয়া) থেকে তাঁর বহু সঙ্গীতের রেকর্ড প্রকাশিত হয় ।

১৮০৯ লুই ব্রেইল (১৮০৯-১৮৫২) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। তিন বছর বয়সে অন্ধ হয়ে যান। ২০ বছর বয়সে অন্য অন্ধ ব্যক্তিদের শিক্ষা দিতে এগিয়ে আসেন। আবিষ্কার করেন ব্রেইল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ৬টি বিন্দু দিয়ে অক্ষর সংখ্যা ইত্যাদিকে সূচিত করা হয়। এর ফলে অন্ধ ব্যক্তিরাও নিজে নিজে পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। ২০১৯ থেকে আজকের দিনটিকে ‘ব্রেইল দিবস’ হিসেবে পালন করছে রাষ্ট্রসংঘ। উদ্দেশ্য, ব্রেইল পদ্ধতি জনপ্রিয় করে তোলা।

১৯৬০ আলবার্ট কাম্যু (১৯১৩-১৯৬০) এদিন প্রয়াত হন। ১৯৫৭-তে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে, নোবেল ইতিহাসের দ্বিতীয়-কনিষ্ঠতম প্রাপক হিসেবে, তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর রচনাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘দ্য স্ট্রেঞ্জার’, ‘দ্য প্লেগ’, ‘দ্য মিথ অফ সিসিফাস’, ‘দ্য ফল’ এবং ‘দ্য রেবেল’।

Previous articleপ্রতি কিমিতে খরচ ২৫১ কোটি! ব্যাপক দুর্নীতিতে বন্ধের পথে মোদির সাধের ‘ভারতমালা’
Next articleহিরার দেশ হয়েও তার ঔজ্জ্বল্য নেই দক্ষিণ আফ্রিকায়!