Thursday, November 6, 2025

বিলকিস মামলায় মুখ পু.ড়ল গুজরাট সরকারের! সুপ্রিম রায়ে শেষমেশ জেলেই ফিরছে ১১ আ.সামী

Date:

বিলকিস বানো (Bilkis Bano) গণধর্ষণ মামলায় বড়সড় ধাক্কা খেল ডবল ইঞ্জিন গুজরাট সরকার (Gujrat Govt)। সোমবার দেশের শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দিল, ১১ জন দোষী সাব্যস্তকে আগাম মুক্তি দেওয়ার কোনও ক্ষমতাই গুজরাট সরকারের হাতে নেই। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) বিলকিস বানো মামলার শুনানি চলছিল। বিলকিস বানোকে গণধর্ষণে অভিযুক্ত ১১ জনকে ২০২২ সালে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিলকিস বানো। সোমবার শীর্ষ আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল এই মামলার শুনানি চলবে। পাশাপাশি গুজরাট সরকারের নির্দেশে মুক্তি পাওয়া দোষী সাব্যস্তদের জেলেই থাকতে হবে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই এক্তিয়ার বহির্ভূত। খুব শীঘ্রই আসামীদের জেলে ফেরার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময়কালে গণধর্ষিত হন বিলকিস বানো। সেই সময় ৫ মাসের গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। তাঁর চোখের সামনেই ৩ বছরের শিশুকন্যা-সহ পরিবারের ৭ সদস্যকে কুপিয়ে খুন করা হয়। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস। ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের বিশেষ সিবিআই কোর্ট অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে বম্বে হাইকোর্টও সেই রায় বহাল রাখে। ১৫ বছর কারাবাসের পর, ১১ আসামীর মধ্যে একজন সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির আবেদন করেছিলেন। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট দায় ঠেলে দিয়েছিল গুজরাট সরকারের কোর্টে। তারপরই গুজরাট সরকারকে আসামীদের সাজা মকুবের বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

এরপরই গুজরাট সরকার বিষয়টি বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটিই ১৯৯২ মওকুফ নীতিতে ১১ জনের মুক্তির সুপারিশ করে। কমিটির তরফে বলা হয়, ১১ জনই সংস্কারী ব্রাহ্মণ। ১১ বছর সাজা ভোগ করেছে তাঁরা এবং জেলেও তাঁরা ভাল আচরণ করেছেন। ২০২২ সালে স্বাধীনতা দিবসের দিন গুজরাট সরকার অভিযুক্তদের মুক্তি দেয়। বীরের সম্মানে তাদের স্বাগত জানানো হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিলকিস বানো গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।

তবে শুধু বিলকিসই নন, ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে দেশের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সিপিএমের সুভাষিণী আলি, সাংবাদিক রেবতী লাল এবং অধ্যাপক রূপরেখা বর্মা সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। প্রায় বছর খানেকেরও বেশি সময় ধরে সেই শুনানি চলার পর সোমবার সেই মামলার রায় শোনাল দেশের শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, গত ১২ অক্টোবর বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়া রায় স্থগিত রেখেছিলেন। আদালত সাফ জানিয়েছিল, মেয়াদ শেষের আগেই অপরাধীদের মুক্তি দেওয়া হবে কিনা তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর সোমবার সকালেই গুজরাট সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে ১১ দোষীকে ফের জেল হেফাজতেই পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি এই মামলার শুনানি চলবে বলে জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।

 

 

 

Related articles

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...

দিঘার জগন্নাথ ধামে প্রথম রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল 

দিঘার জগন্নাথ ধামে এবারই প্রথম পালিত হল রাস উৎসব, আর সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তসমুদ্র। উৎসবের...

বেঁচে আছেন, তাই জানতে পারলেন ‘দোষী নন’: আজব বিচার উত্তরপ্রদেশে

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের (Aligarh) মিঠু সিংয়ের জীবনে যেন সেটাই সত্যি হতে বসেছিল। অবশেষে ৫৫...
Exit mobile version