কূটনৈতিক চাপানোতরের মাঝেই মালদ্বীপ রাষ্ট্রদূতকে তলব দিল্লির

পাঁচ মিনিটেই সেই সাক্ষাৎকার শেষ হয়ে যায়। তবে ইব্রাহিম সাহিবের শরীরি ভাষায় মালদ্বীপের পক্ষে সুখবরের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

ভারত-মালদ্বীপ কূটনৈতিক চাপানোতরে নতুন মাত্রা যোগ করে এবার ভারতে নিযুক্ত মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতকে (ambassador) ডেকে পাঠানো হল পররাষ্ট্র মন্ত্রকের (Ministry of External Affairs) তরফে। মন্ত্রকের তরফে মালদ্বীপ রাষ্ট্রদূতকে কী বলা হয়েছে তা প্রকাশ করা না হলেও গোটা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অপমানের প্রেক্ষিতেই, অনুমান কূটনৈতিক মহলের। তবে পরিস্থিতি বাগে পেয়ে ইটের জবাব পাটকেলে দিচ্ছে ভারত, এমনটাও মনে করা হচ্ছে। দুদেশের জটিলতার মধ্যে মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে বসে ভারতীয় হাইকমিশনার মুনু মহাওয়ার।

ভারতের লাক্ষাদ্বীপের পর্যটন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পোস্ট ঘিরে কুরুচিকর এবং অপমানজনক মন্তব্য নিয়ে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরে। পরিস্থিতি মেরামত করতে মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র নিন্দা করেন এই ঘটনার। এবং দাবি করা হয় তাঁদের মতামত ব্যক্তিগত, তা মালদ্বীপের সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে না। দ্রুত দুই উপমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের আরেক সদস্যকে বরখাস্ত করে মহম্মদ মুইজু (Mohamed Muizzu) প্রশাসন। অভিযুক্ত এক মন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পোস্ট মুছে দিলেও চিড়ে গলেনি। ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে মালদ্বীপ পররাষ্ট্র মন্ত্রককে মেলে অভিযোগ জানানো হয়।

তবে সোমবার সপ্তাহের শুরুতে সেই তরজা নতুন মোড় নিল মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে। সকালেই রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম সাহিব দেখা করেন দিল্লির সাউথ ব্লকে (South Block)। তবে পাঁচ মিনিটেই সেই সাক্ষাৎকার শেষ হয়ে যায়। তবে ইব্রাহিম সাহিবের শরীরি ভাষায় মালদ্বীপের পক্ষে সুখবরের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। কূটনীতিকদের অনুমান অক্টোবরে মালদ্বীপে ভারতের হাই কমিশনার (Indian High Commissioner) মুনু মহাওয়ারকে ডেকে পাঠানোর বদলা নিল ভারত সরকার। অক্টোবরে ক্ষমতায় আসার পরই মালদ্বীপ ও তার এক্তিয়ারে থাকা জলভাগ থেকে ভারতীয় নৌসেনা সরিয়ে নেওয়ার দাবি করে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজু। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রককে এই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার পরেই ডেকে পাঠানো হয় হাই কমিশনারকেও।

আবার দুপুরেই মালদ্বীপের ভারতীয় হাইকমিশনার মুনু মহাওয়ার পূর্ব নির্ধারিত একটি বৈঠকে যোগ দেন মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ড: আলি নাসের মহম্মদের সঙ্গে। দুদেশের বর্তমান সম্পর্কে নিয়ে আলোচনার কথা জানানো হয় বলে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে। দুদেশের সম্পর্কের চাপানোতরের মাঝেই সোমবার চিনের রাষ্ট্রপতি শিন জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে চিন সফরে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মুইজু। তবে রাষ্ট্রনেতাদের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, সামাজিকভাবে মালদ্বীপের সঙ্গে তলানিতে ভারতের সম্পর্ক। মালদ্বীপের ফ্লাইট ও হোটেল বাতিলের পাশাপাশি একটি ভারতীয় বেসরকারি পর্যটন সংস্থাও নিজেদের মালদ্বীপের সব সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Previous articleসাসপেন্ড হওয়া সঞ্জয় সিং-এর কমিটিকে পাল্টা হুঁশিয়ারি কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের
Next articleভাঙড় ডিভিশনের ৪ থানার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী