দুর্ঘটনা কমাতে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে নীতি প্রকাশ পরিবহন দফতরের

সেফ করিডোর হিসাবে দুটি রাস্তাকে চিহ্নিত করে পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু করা হয়েছে আইআইটি খড়গপুরের সহযোগিতায়।

একদিকে যখন দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গাড়িচালকদের ওপর দোষ চাপিয়ে দায় ঝাড়তে চাইছে কেন্দ্র সরকার, সেখানে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে নতুন নীতি প্রকাশ করল রাজ্য পরিবহন দফতর (transport department)। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় মূলত গতি (speed) নিয়ন্ত্রণের ওপরই জোর দেওয়া হয়েছে। সেই নীতি সংকলন নিয়ে একটি বইও প্রকাশ করা হল। নতুন নীতিকে প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকর করতে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে আইআইটি খড়গপুরের।

রাজ্য সরকারের পরিবহন দফতরের পথ নিরাপত্তার প্রধান লক্ষ্য সম্পূর্ণ নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন সড়ক পরিবহন। বর্তমানে দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যুর ঘটনার শতকরা হার ৫৩.৩। অর্থাৎ ১০০টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রায় ৫৩টি ক্ষেত্রে। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই সংখ্যাকে শূন্যে নামিয়ে আনতে চাইছে। ইতিমধ্যে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় দেশের মধ্যে একাদশ স্থানে রয়েছে এই রাজ্য। দেশের পথ নিরাপত্তার মানচিত্রে রাজ্যকে আরও সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যেতে একটি বই প্রকাশ করল পরিবহন দফতর। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই বইয়ের নাম – স্পিড ম্যানেজমেন্ট ফর এনহ্যান্সিং রোড সেফটি ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল: পলিসি ইন্টারভেনশন অ্যান্ড রোড ম্যাপ (Speed Management for Enhancing Road Safety in West Bengal:Policy Interventions and Road Map)।

রাজ্যের পরিবহন দফতরের এই নীতি সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্টের রোড সেফটি কমিটির সুপারিশক্রমে প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নীতিতে সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ-কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আপৎকালীন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে, সড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ট্রাফিক নিয়মাবলী নিয়ে ধারণা তৈরি করা হবে। দুর্ঘটনার হার বেশি এরকম রাস্তাকে চিহ্নিত করে ‘সেফ করিডোর’ প্রকল্পের আওতায় এনে ঝুঁকিহীন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই নীতি তৈরিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর ও শিক্ষা দফতরেরও সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে।

পথ নিরাপত্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ – নীতিতে ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে। পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যতে আনতে দুর্ঘটনাপ্রবণ জায়গাকে ব্ল্যাক স্পট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেফ করিডোর (Safe Corridor) হিসাবে দুটি রাস্তাকে চিহ্নিত করে পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু করা হয়েছে আইআইটি খড়গপুরের (IIT Kharagpur) সহযোগিতায়। মন্ত্রীর কথায়, দুর্ঘটনায় সব ক্ষেত্রে চালকের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়, দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আর এখানেই প্রকৃত বাস্তবমুখি পরিকল্পনা তৈরিতে কেন্দ্রের নীতি থেকে এগিয়ে রাজ্য প্রশাসন।

Previous articleপ্লাস্টিকের বোতলে জল পান! জানেন কোন বিপদ ডেকে আনছেন শরীরে?
Next article৪ হাজার কোটি টাকার গ্রামীণ রাস্তা, বিপুল কর্মসংস্থান: জয়নগরে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর