‘সুচেতনা’ থেকে ‘সুচেতন’, বুদ্ধদেবের সন্তান পেলেন নতুন সরকারি ‘পরিচয়’

লিঙ্গ পরিবর্তনের পথে সরকারি স্বীকৃতির প্রথম ধাপ পেরোলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সন্তান সুচেতন। হাতে পেলেন ‘রূপান্তরকামী’ (transgender) পরিচয়পত্র। সেই সঙ্গে পরিচয়পত্রে এলো তাঁর নাম ‘সুচেতন’ । আর এক ধাপ পেরোলেই নিজের স্বাধীন লিঙ্গ চিন্তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন তিনি।

ছয়মাস আগে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়া শুরু করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সন্তান। এই পথে তিন ধরনের প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেন তিনি। প্রথমত নির্দিষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে শারীরিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয় লিঙ্গ পরিবর্তনের স্বেচ্ছাকে প্রতিষ্ঠা করে নাম পরিবর্তনের পথ তৈরি করতে। সব শেষে যাবতীয় প্রমাণ একত্র করে প্রশাসনের থেকে দুই ধাপে পরিচয়পত্র (identity card) পাওয়ার প্রক্রিয়া।

নির্দিষ্ট শারীরিক পরিবর্তনের পর ডাক্তারি প্রেসক্রিপশন ও নাম বদলের এফিডেভিট (affidavit) নিয়ে রাজ্য সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ বিভাগের কাছে পরিচয়পত্রের আবেদন করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সন্তান। সেক্ষেত্রে অন্যান্য লিঙ্গ পরিবর্তনকামীরা যেভাবে সরকারি জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখিন হন সেভাবেই প্রশ্নের ধাপ পেরোন সুচেতন। এরপরই জানুয়ারির à§« তারিখ নতুন পরিচয়পত্র পান তিনি। তাঁর পরিচয়পত্রে স্পষ্ট লেখা ‘ট্রান্সজেন্ডার’। এবং নাম সুচেতন ভট্টাচার্য। পিতার নাম বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ঠিকানা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পাম এভিন্যুয়ের বর্তমান ফ্ল্যাট।

এরপর এই ‘ট্রান্সম্যান’ (transman) পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে সুচেতনকে। সেক্ষেত্রেও রয়েছে বেশ কিছু শারীরিক পরিবর্তন ও আইনি পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। সুচেতন হওয়ার শেষ ধাপ সম্পূর্ণ হলে আধুনিক মনস্ক বলে পরিচিত বাম মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকেই একটা বিপ্লব শুরু হওয়ার সম্ভাবনা। যুগ ও সময়ের সঙ্গে আমাদের রাজ্য তথা গোটা দেশ এগিয়ে গেলেও, চাঁদ-সূর্যের দিকে রকেট ছুঁড়লেও সামাজিক অনেক ব্যাধিই এখনও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। যার মধ্যে অন্যতম ব্যক্তির লিঙ্গচিন্তা নিয়ে মুক্ত মানসিকতা। এই শহরে হয়তো সুচেতনই পথ দেখাবে আরও অনেকের মনের মধ্যে আলোড়ন তৈরি করা এই পরিবর্তনের চিন্তা।