বছর চারেকের সন্তানকে ঠিক কী কারণে খুন করলেন বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) এক বেসরকারি সংস্থার সিইও সূচনা শেঠ (Suchana Seth)? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে। সময় যত গড়াচ্ছে ততই একের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে। আর যা দেখেই মাথা খারাপ হওয়ার অবস্থা। তবে তদন্তকারীদের একেবারেই সূচনা সাহায্য করছেন না বলেই অভিযোগ পুলিশের। গত ৩ দিন ধরেই তদন্তকারীদের একাধিক উপায়ে সূচনা বিভ্রান্ত করছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এবার পুলিশের হাতে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর যা সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এবার গোয়ায় (Goa) সূচনা শেঠের ঘর থেকে একটি দলা পাকানো টিস্যু পেপার (Tissue Paper) উদ্ধার করেছেন বলে খবর। আর সেই পেপার ঘিরেই বাড়ছে জল্পনা। পুলিশ জানিয়েছে, টিস্যু পেপারে আইলাইনার দিয়ে ৫টি লাইন লিখেছিলেন তিনি। যেখানে তার বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলার রায়ে আদালতের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর ছেলেকে প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে প্রতি রবিবার দেখা করার নির্দেশ দেয় আদালত। আর সেই রায়েই নাকি চরম অসন্তুষ্ট ছিলেন সূচনা। তবে আচমকা কেন এসব কথা টিস্যুতে লিখলেন সূচনা? কেনই বা আইলাইনার ব্যবহার করা হল, এসব নিয়েই প্রশ্ন জাগছে তদন্তকারীদের মনে। পাশাপাশি সূচনার ঘর থেকে কাফ সিরাপের খালি শিশিও পেয়েছে পুলিশ।

তবে সূচনার পরিবার সূত্রে খবর, স্বামীর সঙ্গে ছেলের দেখা হোক সেটা একেবাই না পসন্দ ছিল সূচনার। সেই জন্যই ছেলেকে নিয়ে বেঙ্গালুরু ছেড়ে গোয়ায় চলে যান তিনি। এছাড়াও পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৬ জানুয়ারি প্রাক্তন স্বামী ভেঙ্কট রমনকে মেসেজ করে সূচনা জানতে চেয়েছিলেন, পরের ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ভেঙ্কট আসবেন কিনা। কিন্তু সেই সময়ে বেঙ্গালুরুতে ছিলেন না সূচনা। তদন্তকারীদের অনুমান, সূচনার এই পদক্ষেপ আসলে ভুয়ো। কারণ ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত গোয়ায় থাকার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, ছেলের মৃতদেহ যে ব্যাগে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন সূচনা সেই ব্যাগ থেকেই উদ্ধার হয়েছে আইলাইনার দিয়ে হাতে লেখা চিঠিটি। এদিকে পুলিশ আরও জানিয়েছে, সূচনা তাঁর আত্মীয়-পরিজনদের একাধিকবার বলেছিলেন, ছেলের মুখ দেখলেই তাঁর স্বামী বেঙ্কট রামনের মুখ ভেসে ওঠে। সেটা তিনি একেবারেই সহ্য করতে পারতেন না।

এদিকে উদ্ধার হওয়া টিস্যু পেপারের লেখার সঙ্গে সূচনার হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে পুলিশ। ফরেন্সিক ল্যাবে হস্তাক্ষর পরীক্ষার জন্য তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর প্রমাণ হাতে আসছে তদন্তকারীদের। আর তা খতিয়ে দেখতে গিয়েই চোখ কপালে উঠছে তদন্তকারীদের। তবে শ্বাসরোধ করে খুনের পর ব্যাগে ভরে ছেলেকে গোয়া থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিলেন সূচনা। সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, জেরার মুখে সূচনা দাবি করেছেন, তিনি সন্তানকে খুন করেননি। ঘুম থেকে উঠে দেখেছিলেন, শিশুটি মৃত।
