ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলতে থাকা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবার একশো দিনে পা রাখল। মর্মান্তিক এই যুদ্ধ থামাতে ও শান্তির আবেদন জানিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও পদযাত্রা করলেন হাজার হাজার মানুষ। গাজার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়ে এই প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হন, জাপান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ইটালি, গ্রিস, ব্রিটেন থেকে শুরু করে আমেরিকার নাগরিকেরা।

আমেরিকান মুসলিম টাস্ক ফোর্সের ডাকে শনিবার সকাল থেকে প্যালেস্টাইনের পতাকা আর যুদ্ধবিরোধী ব্যানার, ফেস্টুন হাতে ভিড় করেন শয়ে শয়ে মানুষ। তাঁরা আবেদন জানান, গাজায় ইজরায়েলি হানা বন্ধ করার। যুদ্ধ বন্ধের দাবির পাশাপাশি ইজরায়েল সরকারকে আমেরিকার অন্ধ সমর্থনের বিরোধিতাও করেন তাঁরা। ইজরায়েলের তরফে গাজার মাটিতে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই ইজরায়েলকে অস্ত্র ও অর্থের যোগান দিয়ে চলেছে আমেরিকা। সেই সাহায্য অবিলম্বে বন্ধের দাবি ওঠে শনিবারের মিছিলে। ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাঁরা মার্কিন সরকারকে চিঠি দিয়ে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। প্যালেস্টাইনিদের সমর্থনে শনিবার মিছিল বেরিয়েছিল লন্ডনের রাস্তায়। এ ছাড়া, কুয়ালা লামপুরে ইজরায়েলের বন্ধু দেশ আমেরিকার দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। জাকার্তায় আমেরিকান দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। সেখানে ইজরায়েলকে বয়কট এবং অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের ডাক উঠেছে।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামাসের হামায় প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ১২০০ মানুষ। তারপর থেকে ইজরায়েলের পাল্টা হামলায় এখনও পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। ওয়াশিংটনে এ দিনের মিছিলে ভিডিয়ো লিঙ্কের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের কথা তুলে ধরেছিলেন গাজার যুদ্ধবিধ্বস্তেরা। এঁদের মধ্যে ছিলেন গাজার সাংবাদিক ওয়ায়েল অল-দাহদো। ইজরায়েলি হানায় স্ত্রী, মেয়ে, দুই ছেলে, এক নাতিকে হারিয়েছেন। নিজেও জখম হয়েছেন। তিনি বলছিলেন, ‘‘গাজার মানুষের কাছে খাবার, পানীয় জল, শৌচাগার, মাথার উপরে ছাদ, ওষুধ, পোশাক কিছুই নেই। ভদ্র ভাবে জীবন কাটানোর জন্য যা যা দরকার সে সব তো দূরের কথা, বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম যা প্রয়োজন সে টুকুও নেই।’’
