কাজ না করলে সরিয়ে দেব: অফিসারদের চরম হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

দুয়ারে সরকার হওয়ার পরেও অনেকেই সন্তুষ্ট হচ্ছেন না। পরিষেবা ঠিকঠাক দেওয়া হচ্ছে না। বৈঠকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা।

জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বিভাগীয় সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে কড়া মনোভাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে কার্যত অফিসারদের চরম হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা ভাল কাজ করবেন না, তাদের আমি সরিয়ে দেব।” নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, Sec ৫৬ (j) রুল অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে অফিসারদের বিরুদ্ধে, বৈঠকে এমনটাই বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুয়ারে সরকার হওয়ার পরেও অনেকেই সন্তুষ্ট হচ্ছেন না। পরিষেবা ঠিকঠাক দেওয়া হচ্ছে না। বৈঠকে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা।
জানা গিয়েছে, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনের নামে কর্মচারীদের একাংশের অসহযোগিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, সরকারি কর্মচারীরা কাজে ফাঁকি দিলে বা অসহযোগিতা করলে আর বরদাস্ত করা হবে না। তিনি এদিন বৈঠকে বলেন, ‘‌কাজে ফাঁকি দিলে বা অসহযোগিতা করলে পারফর্মেন্স রিভিউ করে দেখো। যদি খারাপ পারফরমেন্স হয়, চাকরি থেকে বের করে দাও। আমি এমনই রাফ অ্যান্ড টাফ।’‌ এদিনের বৈঠকে মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী সহ সব দপ্তরের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন ডিজি রাজীব কুমার, কলকাতা পুলিশের সিপি বিনীত গোয়েল। ভার্চুয়ালি ছিলেন সব জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনাররা।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ২০ জানুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে জনসংযোগ কর্মসুচি। গ্রামে গ্রামে বুথ স্তরে গিয়ে সরকারি আধিকারিকদের মানুষের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। তাঁর নির্দেশ দরকার হলে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সবার ছুটি বাতিল করে দেওয়া হোক। কিন্তু কাজে ফাঁকি আর আমি মেনে নেব না। মুখ্যসচিবকে তাঁর নির্দেশ, ‘‌সার্ভিস রুল দেখুন। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারের এবিষয়ে নিয়ম কানুন দেখুন। যাঁরা কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’‌

নবান্ন সূত্রে খবর, সরকারি কর্মচারীদের সারাবছরের কাজের খতিয়ান দেখে প্রয়োজনে আগাম অবসর নিতে বাধ্য করা হতে পারে। তবে, এধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আইন ভাল করে খতিয়ে দেখতে হবে। যেমন সার্ভিস রুলের সেকশন ৫৬ জে ধারায় চাকরি যাওয়ার কথা বলা নেই। তবে সার্ভিস ব্রেক হতে পারে। এর ফলে অবসরকালীন সুবিধা পাওয়া ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।পাশাপশি মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হবে জনসংযোগ কর্মসূচি। পোলিং স্টেশন ভিত্তিক এই জনসংযোগ প্রোগ্রাম হবে।এদিনের বৈঠকে এই কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তিনি জানিয়েছেন. এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য মানুষের সমস্যার সমাধান। ২০ জানুয়ারি থেকে সব জেলায় বুথ স্তরে এই সরকারি কর্মসূচি শুরু হবে। বুথ স্তরে গিয়ে সরকারি অফিসাররা মানুষের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, যারা এসসি নন, তাদের কেন এসসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে? যারা এসটি নয়, তাদের কেন এসটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে? ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরকে আরও সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, জমির পাট্টা নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। সেগুলো সমাধান করতে হবে। যদিও অফিসারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা কাজ করবেন, তাদের প্রশংসাও করা হবে।

Previous articleলোকসভা ভোটের আগে নবান্নে ‘দিদি’-র কাছে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’! জল্পনা তুঙ্গে
Next articleশীতের দুপুরে বন্ধ নিউমার্কেট! হকার-ব্যবসায়ী জটিলতার প্রতিবাদ