চাকরির প্রশিক্ষণে তৈরি হওয়া দেশের সব কোচিং সেন্টারের জন্য কড়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক (Education Ministry)। সেই নির্দেশিকায় পড়ুয়াদের বয়স বা অন্তত মাধ্যমিক উত্তীর্ণ বিষয়টি যেমন বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তেমনই কোন ধরনের বিজ্ঞাপন একেবারেই করা যাবে না, তাও বলা রয়েছে। একাধিক রাজ্যে পড়ুয়াদের আত্মহত্যা ও কোচিং সেন্টারগুলিতে চলতে থাকা বেনিয়মে বাড়বাড়ন্তে পর অবশেষে হুঁশ ফিরল কেন্দ্র সরকারের।

কয়েক দশক ধরে দেশের বেশ কিছু শহর যেমন রাজস্থানের কোটা, জয়পুর, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর ও বিহার, উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে চাকরি দেওয়ার কোচিং সেন্টার। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছেলেমেয়েরা সেখানে সরকারি চাকরি, ডাক্তারিতে বা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির প্রশিক্ষণ (admission training) নিতে যায় – ধারণটা এমন হয়েছে যেন এই সব শহরে গেলে চাকরি পাক্কা। তবে দীর্ঘদিন ধরেই এই সব সেন্টারে পড়াশোনা নিয়ে বহু বেনিয়ম প্রকাশ্যে এসেছে। ২০১৯ সালে বিশাল বেহল পরিচালিত ঋত্ত্বিক রোশন অভিনিত ‘সুপার থার্টি’ (Super 30) সিনেমাতেও কোচিং সেন্টারের পিছনে চলা অনৈতিক কাজকর্মকে তুলে ধরা হয়েছিল। তারপরেও এগুলির ওপর ছিল না কোনও নিয়ন্ত্রণ। সম্প্রতি পরপর বেশ কয়েকটি আত্মহত্য়ার ঘটনার পর অবশেষে কড়া হল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক।

মন্ত্রকে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে চাকরি দেওয়ার কোচিংয়ে ১৬ বছরের আগে কোনও পড়ুয়াকে ভর্তি নেওয়া যাবে না। ভর্তি করার সময় ব়্যাঙ্কের প্রতিশ্রুতি, এমনকি ভালো নম্বরের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া যাবে না পড়ুয়াদের অভিভাবককে। এমন কোনও বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না যাতে পুরোনো পড়ুয়াদের ফলাফল প্রকাশিক থাকে। এমন কোনও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা যাবে না যাতে কোনওভাবে বিভ্রান্তি (misleading) না ছড়ায়।

পাশাপাশি কোচিং সেন্টারে যে শিক্ষকদের নিয়োগ করা হবে তাদের নূন্যতম যোগ্যতা স্নাতক (graduate) হতে হবে। কোচিং সেন্টার সম্পর্কে সব তথ্য উপযুক্ত ওয়েবসাইটে যথাযথভাবে দেওয়া এবং তা আপডেট রাখতেও হবে। সেখানেই শিক্ষক, পরিষেবা, ও হস্টেল সম্বন্ধেও দিয়ে রাখতে হবে। যে কোনও পড়ুয়ার মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটাও নজর রাখতে হবে সংস্থাকেই। তার জন্য পর্যাপ্ত কাউন্সিলর নিয়োগেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম ভাঙলে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এমনকি সেন্টারের লাইসেন্স বাতিলও (license cancellation) হতে পারে। যদিও এই বিপুল পরিমাণ কোচিং সেন্টার আদৌ কতটা মানবে এই গাইডলাইন, বা তার ওপর নজরদারিই বা চালবে কে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
