দিশাহীন-ভাঁওতাবাজি, কেন্দ্রের বাজেটকে কটাক্ষ তৃণমূলের

দেশের সাধারণ মানুষের, দরিদ্র জনসাধারণের কোনও উপকার হবে না এই বাজেটে। ছাত্র-যুব-মহিলা-শ্রমিক-কৃষক সমাজকে কোনও দিশা দেখাতে পারেনি কেন্দ্র।

লোকসভা ভোটের (Loksabha Election) আগে আবার সুপরিকল্পিত এবং বড়মাপের ভাঁওতা নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকারের। বাড়ল না আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা, হতাশ চাকুরিজীবী, মধ্যবিত্তরা। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বাজেটের (Budget) তীব্র সমালোচনা করে মন্তব্য করেছেন, সম্পূর্ণ অন্তঃসারশূন্য একটি বাজেট। সমস্ত দিক দিয়ে নিজেদের অক্ষমতাই স্পষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র। দেশের সাধারণ মানুষের, দরিদ্র জনসাধারণের কোনও উপকার হবে না এই বাজেটে। ছাত্র-যুব-মহিলা-শ্রমিক-কৃষক সমাজকে কোনও দিশা দেখাতে পারেনি কেন্দ্র।

এবারের কেন্দ্রীয় বাজেট যে আসলে একটা ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয় তা স্পষ্ট করে দিয়ে ট্যুইট করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “অন্তঃসারশূন্য বাজেট। কথার জাগলারি, ভাষার সস্তা চটক। সাধারণ মানুষের স্বস্তি নেই, প্রাপ্তিও নেই। বাংলার প্রতি বঞ্চনা অব্যাহত। কথা না রাখা ভাঁওতাবাজির বাজেট। শুধু তিন মাসের ব্যয়বরাদ্দ অনুমোদনের কাজ করতে গিয়ে তার বাইরের অবাস্তব নাটকের চিত্রনাট্য অর্থমন্ত্রীর।”

তৃণমূলের রাজ্যসভায় তৃণমূলের চিফ হুইপ সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, বিজেপির ইলেকশন ম্যানিফেস্টো এই বাজেট। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, সম্পূর্ণ দিশাহীন এই বাজেটে মধ্যবিত্তদের কথা চিন্তা করেনি বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার। লোকসভায় তৃণমূলের আরেক সাংসদ মালা রায় বলেন, নির্বাচনে জেতার জন্যই মহিলাদের কথা বলা হয়েছে বাজেটে। সম্পূর্ণ দিশাহীন বাজেট, রাজনৈতিক কথাবার্তা ছাড়া আর কিছুই নেই এই বাজেটে।

সাধারণ মানুষকে যেটা সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছে, দ্বিতীয় মোদি সরকারের শেষ অন্তর্বর্তী বাজেটে বাড়ল না আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে আয়কর ছাড়ের ৭ লক্ষ টাকার যে ঊর্ধ্বসীমা ছিল, তা-ই অপরিবর্তিত থাকল ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষেও। ২৫ বছরের কম বয়সী গ্র্যাজুয়েট যুবক-যুবতীদের ৪২ শতাংশ কর্মহীন। ২০২৩ সালে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ২০-২৪ বছরের মধ্যে শিক্ষিত যুবক – যুবতীদের ৪৫ শতাংশ চাকরি হারিয়েছেন। দেশের তিন চতুর্থাংশ মানুষ পুষ্টিকর খাবার পায় না। কৃষকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেননি নরেন্দ্র মোদি। বেড়েছে কৃষক আত্মহত্যা।

সবমিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্র সরকারের থেকে যে প্রত্যাশা সাধারণ মানুষ করেছিল, কার্যত তা পূরণ করতেও ব্যর্থ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। কার্যত এই বাজেট কেন্দ্রের গেরুয়া সরকারের দেউলিয়া অবস্থাকেই প্রতিফলিত করছে। লক্ষণীয়, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা না বাড়ালে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ও সঞ্চয় কোনওটিই বাড়বে না। সেক্ষেত্রে সামগ্রিক দেশের অর্থনীতি আবারও মুখ থুবড়ে পড়ার সম্ভাবনা। সবমিলিয়ে দেশের আর্থিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনাকে আরও উৎসাহিত করল এবারের কেন্দ্রীয় বাজেট।

 

 

 

Previous articleঝাড়খণ্ডে বেপাত্তা চার বিধায়ক, রাজ্যপালকে ৪৩ জনের সমর্থনের কথা জানালেন চম্পাই সোরেন
Next articleমানুষের ভোটে জিতবে মহুয়াই: প্রাক্তন সাংসদকে পাশে নিয়ে ঘোষণা মমতার