ঘোড়া কেনাবেচার শো ফ্লপ! বিজেপিকে ঘোল খাইয়ে ঝাড়খণ্ডের নয়া মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ চম্পাইয়ের

থেমে গেল ঘোড়া কেনাবেচার সমস্ত চক্রান্ত। বিজেপির (BJP) অশ্বমেধের ঘোড়া থামিয়ে দীর্ঘ টালবাহানা শেষে শেষ হাসি হাসলেন জেএমএম (JMM) নেতা চম্পাই সোরেন (Champai Soren)। প্রত্যাশামতো শুক্রবার বেলা গড়াতেই নয়া মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister Jharkhand) পেল ঝাড়খণ্ড। এদিন বেলা ১২ টার পর রাজভবনে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথগ্রহণ করেন জেএমএম নেতা চম্পাই সোরেন। শেষমেশ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন জেএমএম নেতা চম্পাই সোরেন। এদিন সকাল থেকেই রাজভবনের (Rahbhawan) সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন জেএমএম কর্মী সমর্থকরা। দলের নেতা চম্পাইয়ের সমর্থনে সকাল থেকেই স্লোগান দিতে শোনা যায় তাঁদের। এদিন ঝাড়খণ্ডের সপ্তম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথবাক্য পাঠ করেন চম্পাই সোরেন। রাঁচির রাজভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণাণ। তবে শুধু চম্পাই নন, এদিন তাঁর সঙ্গেই মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক (Congress) আলমগির আলম ও আরজেডির (RJD) সত্যানন্দ ভোক্তা।

দিনকয়েক আগেই বিহারের মতোই ঝাড়খণ্ডেও অপারেশন লোটাসের সমস্ত প্ল্যান রেডি ছিল। কিন্তু জেএমএমের সামনে কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গেল এনডিএ। লোকসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরকে কার্যত ছুঁড়ে ফেলে দিল ঝাড়খণ্ড। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতভর নাটকের পর রাতেই চম্পাই সোরেনকে সরকার গঠনের আহ্বান জানান রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণাণ। তবে, মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেও মাথাব্যাথা এখনই যাচ্ছে না চম্পাইয়ের। আগামী ১০ দিনের মধ্যে চম্পাই সোরেনকে বিধানসভায় তাঁর সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। আর এমন খবর সামনে আসতেই ফের নয়া জল্পনা শুরু হয়েছে ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে। তবে কী এই সময়ের মধ্যে কোনোরকমভাবে পাশা উল্টে দিতে পারে বিজেপি? সেই আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এদিকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি হেমন্ত সোরেনের দলের চার বিধায়কের। ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে ‘টাইগার’ নামে পরিচিত চম্পাই। হেমন্তের বিদায়ী মন্ত্রিসভার পরিবহণ মন্ত্রীর পদে ছিলেন তিনি। সেরাইকেলা-খরসওয়াঁ জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম জিলিঙ্গোরাতে জন্ম চম্পইয়ের। কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ার কারণে পড়াশোনার পাশাপাশি, বাবার সঙ্গে খেতেও কাজ করতেন। তবে পড়াশোনা বেশি দূর করেননি তিনি। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করার পরেই লেখাপড়ায় পাঠ চুকিয়ে জেএমএম প্রতিষ্ঠাতা শিবু সোরেনের ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রাজনীতিতে।

বুধবার হেমন্ত সোরেনকে ইডি গ্রেফতার করার পর ক্রমশই বদলাতে শুরু করে ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক পটভূমি। হেমন্তের জায়গায় কে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন তা নিয়ে শুরু হয় জোর জল্পনা। হেমন্তের ইচ্ছে ছিল স্ত্রী কল্পনা সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী করার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। কল্পনার মুখ্যমন্ত্রী পদে বাধা হয়ে দাঁড়ান জোট এবং সোরেন পরিবারই। শেষ পর্যন্ত শিবু সোরেনের আদর্শে দীক্ষিত চম্পাই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যান। তবে সবরকম চেষ্টা চালালেও লোকসভা নির্বাচনের আগে ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে শেষমেশ বিজেপি কোনওরকমভাবে খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে কী না সেদিকে নজর থাকবে।

 

 

 

Previous articleবাংলার বকেয়ার দাবিতে রেড রোডে ধর্নায় তৃণমূল সভানেত্রী, চলবে কাজও
Next articleনির্বিঘ্নেই শেষ হল মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিন