Monday, August 25, 2025

মোদির ‘বিকশিত ভারতে’ গরিবের জন্য বরাদ্দ শুধুই ‘বিষ’! সংসদে সরব সুখেন্দু

Date:

লোকসভা ভোটকে মাথায় রেখে ‘বিকশিত ভারতের’ ঢালাও প্রচার চালাচ্ছে মোদি সরকার। বাজেট অধিবেশন উপলক্ষ্যে সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণে বারবার শোনা গিয়েছে, ‘অমৃত’ ও ‘বিকশিত ভারতের’ কথা। এই প্রসঙ্গ তুলেই সোমবার রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষনের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপনে মোদি সরকারকে তথ্য তুলে ধরে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক সুখেন্দু শেখর রায়। কটাক্ষ করে বললেন, “চারিদিকে এত অমৃতের মধ্যে থেকে জানতে ইচ্ছে করছে যারা অমৃত পান করছেন তারা তো সুখে আছেন কিন্তু যারা এই সরকারের আমলে বিষ পান করছেন তাঁদের কি অবস্থা।”

তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক সুখেন্দু শেখর রায় এদিন রাজ্যসভায় বলেন, “মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণে বেশ কয়েকটি নতুন শব্দ শোনা গেল। যেমন, তিনি তার বক্তব্যে ছয় বার বিকশিত ভারত শব্দটি ব্যবহার করেছেন এবং ১০ বার অমৃত শব্দের ব্যবহার করেছেন।” এই প্রেক্ষিতেই রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে সুখেন্দুশেখর এর প্রশ্ন, “চারিদিকে এত অমৃতের মধ্যে থেকে জানতে ইচ্ছে করছে যারা অমৃত পান করছেন তারা তো সুখে আছেন কিন্তু যারা এই সরকারের আমলে বিষ পান করছেন তাঁদের কি অবস্থা।” এরপরই তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে দেশের যুবসমাজকে লক্ষ লক্ষ চাকরি দেওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ জানতে চান, “কত লক্ষ চাকরি দিয়েছে বিজেপি সরকার? তার সঠিক সংখ্যাটা কত?” শুধু তাই নয় তিনি বলেন, “নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতি মতো যেখানে বছরে দু কোটি চাকরি অর্থাৎ গত ১০ বছরে কুড়ি কোটি চাকরি দেওয়ার কথা সেখানে শুধুমাত্র কয়েক লক্ষ চাকরির কথা কেনো বলা হচ্ছে। যেখানে দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে বলে কেন্দ্রের তরফে প্রচার করা হচ্ছে সেখানে কেন বলা হচ্ছে না এখনো কত শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার মধ্যে পড়ে রয়েছে”।

অক্সফাম রিপোর্ট তুলে ধরে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রশ্ন করেন, “দেশের ১ শতাংশ ধনীব্যক্তি দেশের ৪০ শতাংশর বেশি সম্পত্তির অধিকারী।” তাঁর কটাক্ষ, “নরেন্দ্র মোদি বারবার নারী শক্তির জয়গান গেয়েছেন অথচ দেশের মহিলা শ্রমিকদের উপার্জন সব থেকে কম।” সুখেন্দু শেখর অভিযোগ করেন, “ব্যবসায়ীদের ট্যাক্সে ছাড় দিতে গিয়ে করের বোঝা চাপানো হয়েছে সাধারণ মধ্যবিত্তের ঘাড়ে। দেশের ধনীরা আরো ধনী হয়েছে গরিবরা হয়েছে আরো গরীব।” তাঁর এদিনের বক্তব্যে উঠে আসে রাজ্যকে কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা, কেন্দ্রীয় এজেন্সির ব্যবহার এবং ১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে সেই বিষয়টিও। তিনি বলেন, “রাজ্যের ২১ লক্ষ শ্রমিক টাকা পায়নি যা দিচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।” মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটির সঙ্গে। সে প্রসঙ্গে সুখেন্দুশেখর রায়ের বক্তব্য, অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি একটা কমিটির চেয়ারম্যান। যে কমিটি ঠিক করবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তার আশঙ্কা এর মাধ্যমে দেশে রাষ্ট্রপতি শাসনের দরজা খুলতে চলেছে। যেভাবে ১৪৬ জন সংসদকে সাসপেন্ড করে একের পর এক বিল পাস করিয়ে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার তার বিরুদ্ধেও এদিন রাজ্যসভায় সোচ্চার হন সুখেন্দুশেখর রায়।

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...
Exit mobile version