শ্রমিকদের ধ্বংস করেছে বামেরা, কালাকানুন করেছে বিজেপি! ধর্না মঞ্চ থেকে তোপ তৃণমূলের

আগের বাম সরকার ৩৪ বছর ধরে বাংলার শ্রমিকদের বঞ্চনা করেছে। বাম আমলে চা বাগান শ্রমিকদের বছরে মাইনে বাড়ত ৩-৪ টাকা।

দীর্ঘ ৩৪ বছরে সিপিএম তথা বামেরা বাংলার শ্রমিকদের ধ্বংস করে দিয়েছে। নিজেদের শাসনকালে দিনের পর দিন শ্রমিকদের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে। বুধবার রেড রোডে তৃণমূলের ধর্না মঞ্চ থেকে বামেদের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও মানস ভুঁইয়া। এদিন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে তৃণমূলের ধর্না মঞ্চের নেতৃত্বে ছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়। ছিলেন সুব্রত বক্সি, অরূপ বিশ্বাস, মানস ভুঁইয়া, মলয় ঘটক, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, দোলা সেন, বিশ্বজিৎ দাস, শ্রীকান্ত মাহাতো, নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, প্রতাপ নায়েক প্রমুখ।

ধর্না মঞ্চ থেকে মলয় ঘটক বলেন, আগের বাম সরকার ৩৪ বছর ধরে বাংলার শ্রমিকদের বঞ্চনা করেছে। বাম আমলে চা বাগান শ্রমিকদের বছরে মাইনে বাড়ত ৩-৪ টাকা। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমিকদের মাইনে বহুগুণ বাড়িয়েছেন। জুটমিল শ্রমিকদের নূন্যতম ৩ হাজার টাকা মাইনে বাড়িয়েছেন। মন্ত্রীর অভিযোগ, দিল্লির সরকার শ্রম আইন পাল্টে দিচ্ছে, শ্রমিকদের আইনি অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় শ্রমকোড কার্যকরী করতে দেননি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষের একজোট হওয়ার সময় এসেছে।

কেন্দ্রের সরকারকে তোপ দেগে মানস ভুঁইয়া বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের একটাই উদ্দেশ্য, বাংলাকে কীভাবে খাটো করা যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কীভাবে অপমান করা যায়, বাংলার উন্নয়নকে কীভাবে থমকে দেওয়া যায়, বাংলার অর্থনীতিকে কীভাবে ধ্বংস করে দেওয়া যায়। তাঁর আরও সংযোজন, ৩৪ বছরের বাম রাজত্বেও শ্রমজীবী মানুষকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এখন বিজেপি-কংগ্রেস এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষের টুঁটি টিপে ধরতে চায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই উন্নয়নের পথ দেখিয়েছেন। ভারতে এখন শিল্পের কেন্দ্রস্থল বাংলা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পেও বাংলা দেশে প্রথম। এ প্রসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, যে কেন্দ্র একসময় বাংলাকে ৫ বার সেরার পুরস্কার দিয়েছে, হঠাৎ কী হল যে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিল? ১০০ দিন, আবাস যোজনা, মিড ডে মিল, সর্বশিক্ষা অভিযানের ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। কিন্তু মনে রাখবেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যত মারবেন, বাংলার মাটিতে লাখ লাখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি হবে। বাংলাকে কোনওভাবেই রোখা যাবে না।

ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সর্বনাশা শ্রম কোড চালু করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কিন্তু বাংলার মাটিতে কেন্দ্রের এই কালাকানুন চলবে না। দিল্লির বিজেপি সরকারকে না হারাতে পারলে দেশের মানুষ বাঁচবে না, শ্রমজীবী মানুষ বাঁচবে না। আমাদের এই লড়াই দেশ বাঁচানোর লড়াই। তাই অশুভের সঙ্গে আপোষহীন লড়াই চাই। বাংলার মানুষের হকের টাকা, কেন্দ্রের বাবার টাকা নয়।

রাজ্যের মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, গোটা দেশে গণতন্ত্র আজ ভুলুণ্ঠিত হওয়ার পথে। বিশ্বে রাষ্ট্রব্যবস্থা অনেক তৈরি হয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে পারেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে উন্নয়নের জোয়ার পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি মানুষের জাত-ধর্ম-বর্ণ কিংবা রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে রাজ্যের তৃণমূল স্তরের মানুষের কাছে সমস্ত প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিলে সেই কথা রাখেন। তিনি যা করেন, সেটা সবার জন্য। প্রকল্প তো সব সরকারই করে, কিন্তু কটা মানুষ সেই প্রকল্পের সুবিধা পেলেন, সেই খোঁজ কেউ নেন না। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সমস্ত মানুষের খেয়াল রাখেন।


Previous articleঅজিতের দখলে NCP, নতুন দল গড়ছেন শরদ পাওয়ার
Next articleদিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ বৈঠকে মায়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা!