সংসদে শেষ ভাষণ দিলেন দেব? সাংসদ অভিনেতার পোস্ট- মন্তব্যে জল্পনা তুঙ্গে

রীতিমতো তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন ঘাটাল কলেজে প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন তিনি মহিলাদের অ্যাডমিশন ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে তা ৬৫ শতাংশ করা হয়।

তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেবের (Dev) পোস্ট ঘিরে ফের জল্পনা। তাহলে কি সত্যিই ইস্তফা দিচ্ছেন দেব? লোকসভায় (Loksabha) তাঁর বরাদ্দ আসনের ছবি বুধবার পোস্ট করে ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ (TMC MP)তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী (দেব) লিখেছিলেন, ‘আর কয়েক ঘণ্টা’। তখনই সংশয় বেড়েছিল। কিছুদিন আগেই তিন সরকারি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ঘাটালের সাংসদ (Ghatal MP)। তারপর আবার গতকালই তাঁর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। একটি অডিও ক্লিপ ভাইরালও হয়। যদিও অভিনেতা সেই প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু বলেননি। তবে “যা বলার আমি দলকে জানিয়েছি” মন্তব্য নিয়েও জলঘোলা হয়। এর মাঝেই আজ সমাজমাধ্যমের পোস্টে দেব লিখলেন, ‘সংসদে আমার শেষ দিন। ধন্যবাদ দিদি। ধন্যবাদ ঘাটালবাসীকে।’

লোকসভা অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লিতে রয়েছেন দেব (Dev)। এদিন সংসদে নিজের বক্তব্যে সাংসদ অভিনেতা জানান, “আমি থাকি বা না থাকি, ঘাটাল আমার হৃদয়ে থেকে যাবে।” এরপরই চারিদিকে রটে যায় যে দীপক অধিকারী (দেব) তাঁর সমাপ্তি বক্তব্য রাখছেন। পাশাপাশি ১০ বছর সাংসদ হিসাবে কাজ করতে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বিচারিতার কথা তুলে ধরে দেব বলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য ১০ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও অর্থ দেয়নি। যা করার রাজ্য করেছে। তিনি পদে থাকুন বা না থাকুন ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান যে হবেই সেই দাবিও করেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে যে ভিডিও তিনি পোস্ট করেছেন, সেখানে তিনি বলেছেন, “আজকে আমার শেষ দিন সংসদে৷ আজকেও আমি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়েই বলতে চাইছি ৷ ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে ঘাটালের মানুষের অনেকদিনের স্বপ্ন ৷ আপনার মাধ্যমে আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে চাই, এটা কোনও তৃণমূল ও বিজেপির দলীয় কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয় ৷ এটা বাংলার সমস্যা বলে আমার মনে হয়৷ এখানে দলকে পাশে রেখে, পরবর্তীতে যেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান যে কার্যকর করা হয় ৷ মানুষ বন্যার জন্য যে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়, তাঁরা যেন সুফল পায় ৷ যে মানুষরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন, তাঁরা যেন সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পান।” কিন্তু ভোটে দাঁড়াবেন কী না তাই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি সাংসদ – অভিনেতা। শুধু বললেন, ” যা বলার দিদিকে জানিয়েছি। এখন কিছু বলবনা।”

এদিন অভিনেতা হিরণের (Hiran Chatterjee)অভিযোগ নিয়ে দেব বলেন, আগেও বলেছি যে যদি ওর কাছে কোনও প্রমাণ থাকে তাহলে ইডি বা সিবিআই -এর কাছে কেন যাচ্ছেন না। এইপ্রসঙ্গে বনি সেনগুপ্তকে ইডির তলবের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন “যদি সত্যি আমি টাকা নিয়ে থাকতাম তাহলে নিশ্চয়ই সেই নিয়েও ডাক পড়ত।” তিনি বলেন “আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি কেন সিনেমাও ছেড়ে দেব।” ঘাটাল কলেজের কথাও এদিন শোনা যায় তাঁর মুখে। রীতিমতো তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন ঘাটাল কলেজে প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন তিনি মহিলাদের অ্যাডমিশন ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে তা ৬৫ শতাংশ করা হয়। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। তাই এগুলোকে যদি বিরোধীরা ‘দুর্নীতি’ আখ্যা দিতে চান তাহলে কিছুই বলার থাকে না। দেব ঘাটাল হাসপাতালের দায়িত্ব পাওয়ার পর সেখানে অক্সিজেন প্ল্যান্ট গড়ে তোলা হয়েছে। ১৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ টা ব্লাড ব্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয় সাংসদ তহবিল থেকে রোগীর আত্মীয়দের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই সব কাজকে যদি দুর্নীতি বলা হয় তাহলে সত্যি কিছু বলার থাকে না। তবে বিজেপি যতই দেবের দলবদলের জল্পনা বাড়াক, সাংসদ জানান “রাজনীতি ছেড়ে দেব কিন্তু দল বদলাব না”।


Previous articleভারতের পরবর্তী লোকপাল হচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এ এম খানউইলকর
Next articleকোথায় আছেন ঈশান কিষাণ? অবশেষে মিলল খোঁজ