‘ইন্ডিয়া’ জিতলেও মন্ত্রী হব না: রাজনীতি থেকে নিজের অবসরের বয়স জানালেন অভিষেক

“ইন্ডিয়া ক্ষমতায় এলেও আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হব না,” শনিবার ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে অভিষেকের বক্তব্যে উঠে এলো প্রবীণ রাজনীতিবিদদের অবসরের প্রসঙ্গ। এবিষয়ে নিজের কথা টেনেই তিনি জানিয়ে দিলেন রাজনীতি থেকে কবে অবসর নিতে চলেছেন অভিষেক।

এদিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কারা সরকার গড়বে তা এখনই বলা মুশকিল।” তবে ‘ইন্ডিয়া’র সরকার গড়ার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের বিরুদ্ধে একের লড়াই এবং যৌথ বিরোধী প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই কথা শুনলে এখন ‘ইন্ডিয়া’ সরকার গড়ার বিষয়ে ভূমিকা নিতে পারত।’’ প্রসঙ্গক্রমে অভিষেক বোঝাতে চান, এ ব্যাপারে কংগ্রেসেরও ভূমিকা রয়েছে। তারাও একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ের পরিস্থিতিকে ‘সঙ্কুচিত’ করেছে। তাঁর বক্তব্য, আসন সমঝোতা যদি সারা দেশে সুষ্ঠু ভাবে হত, তা হলে নিশ্চিত ভাবেই পদ্মশিবিরকে বেগ দেওয়া যেত। পাশাপাশি অভিষেক স্পষ্ট জানান, বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়বে না তৃণমূল। একাই লড়বে। তবে এটাও ঠিক যে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জোটের রাস্তা অবশ্যই খোলা রয়েছে। এর সঙ্গেই আলোচনায় উঠে আসে, ইন্ডিয়া জিতলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রী হবেন… সে কথা থামিয়ে দিয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দৃপ্ত কণ্ঠে বলেন, “ইন্ডিয়া জিতলেও আমি মন্ত্রী হব না।”

এছাড়াও তৃণমূল পরিচালনার বিভিন্ন বিষয়ে মমতার ‘মতপার্থক্য’-এর বিষয়টি মেনে নেন অভিষেক। পাশাপাশি এটাও জানিয়ে দেন মমতার সঙ্গে তাঁর কোনও দুরত্ব নেই। তাঁর কথায়, ‘‘যদি দূরত্ব থাকত, তা হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার প্রতিনিধিদলে যেতাম না।’’ পাশাপাশিই বলেছেন, ‘‘যে কোনও দলের ক্ষেত্রেই মতপার্থক্য থাকাটা স্বাস্থ্যকর।’’ তাঁর কথায়, ‘‘একটা গ্লাসে যদি অর্ধেক জল থাকে, তা হলে কেউ বলবে অর্ধেক খালি, কেউ বলবে অর্ধেক ভর্তি। দুটোই ঠিক। শুধু দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক।’’ পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলার প্রশাসনে আসার বিষয়ে অভিষেককে প্রশ্ন করা হলে, অভিষেক স্পষ্ট জানান, নেত্রী একজনই, তিনি মমতা।  বন্দ্যোপাধ্যায়ই মুখ্যমন্ত্রী। আমি প্রশাসনে যাব কখনও যাব না। আমি সংগঠন দেখব।

রাজনীতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় উঠে আসে প্রবীণ রাজনীতিকদের অবসরের প্রসঙ্গও। বঙ্গ রাজনীতিতে কান পাতলে শোনা যায় প্রবীণদের অবসরে পাঠিয়ে নবিনদের জায়গা দিতে বেশি আগ্রহী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের সেনাপতি বলেন, “বয়স বাড়লে তাঁর কার্যক্ষমতা কমে এটাই স্বাভাবিক। তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম থাকে। এপ্রসঙ্গে নিজেই তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজও যে পরিশ্রম করেন অনেকের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করেন। উদাহরণ হিসেবে নরেন্দ্র মোদি, মহেন্দ্র সিং ধোনির কথাও তুলে ধরেন অভিষেক। নিজের উদাহরণ টেনে বলেন, আমার বয়স ৩৪ বলে আমি ৬০ দিন একভাবে রাস্তায় থাকতে পেরেছি। এটা ৬৪ বছর বয়স হলে পারতাম না। রাজনীতিতে ৩ টে জিনিস কাজ করে কর্মক্ষমতা, গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা। এরপর নিজের অবসরের কথা তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “আমি যদি ৬৫ বছরে অবসরের পক্ষে কথা বলে থাকি তবে আমি বলছি আমি ৬০ বছরের নীচে আমি অবসর নেব।”

Previous articleফের কলকাঠি নাড়া শুরু পাক সেনার, বার্তা জেনারেল মুনিরের
Next articleব্যাটিং ব্যর্থতা, কেরলের বিরুদ্ধে চাপে বাংলা