বাংলায় জোট ভাঙার জন্য দায়ী কংগ্রেস, লোকসভায় আসন বাড়বে তৃণমূলের: প্রত্যয়ী অভিষেক

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন বাংলায় একা লড়বে তৃণমূল। সেই কথার রেশ ধরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে জানালেন কংগ্রেসের কারণেই বাংলায় I.N.D.I.A. জোট ভেঙেছে। কারণ হিসেবে অভিষেক বলেন, জোট বৈঠকের প্রথম দিন থেকে তাঁর বলে আসছিলেন, একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিতে। কিন্তু কংগ্রেস তাতে রাজি হয়নি। বাংলায় এবার লোকসভা ভোটে কটা আসন পাবে তৃণমূল (TMC)? উত্তরে তৃণমূলের সেনাপতি জানান, গতবারে থেকে অবশ্যই আসন বাড়বে।

সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, “কে কত আসন পাবে, তা তো মানুষ ঠিক করবেন। আমি তো গণৎকার নই! গত বার তৃণমূল যত আসন পেয়েছিল, তার চেয়ে বেশি পাবে। সেটা ২৪ টাও হতে পারে আবার ৩৪ টাও হতে পারে।” পাশাপাশি তিনি এটাও জানান, “এখনই এভাবে বলাটা কঠিন তবে প্রচার শুরু হলে একটা অনুমান করা যায়। কিন্তু এটা ঠিক তৃণমূল যেখানেই লড়বে, জেতার জন্য লড়বে। ডায়মন্ড হারবারেও জেতার জন্য লড়ব, দার্জিলিঙেও জেতার জন্য লড়ব।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানান, লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে সভা থেকে তিনি প্রকাশ্য বলবেন, কটা আসন পাবে তাঁর দল।

ইন্ডিয়া জোট ভাঙার জন্য সরাসরি কংগ্রেস, বলা ভালো প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে দায়ী করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, তিনি যেদিন দিল্লিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ভোরে বৈঠক করেছেন, সেদিনও অধীর মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে লড়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন। অভিষেক জানান, I.N.D.I.A. জোটের প্রথম পাটনা বৈঠক থেকেই আসন ভাগাভাগির বিষয়টি ঠিক করতে চায় তৃণমূল। তাঁদের দাবি ছিল, যেখানে যে শক্তিশালী,  সেই দল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে, বাকিরা তাঁকে সমর্থন করবে। 1:1 ফর্মুলায় চেয়েছিল তৃণমূল। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। কারণ, তার মধ্যেই আসন সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত সময়সীমা দিয়েছিল তৃণমূল-সহ অন্যান্য কয়েক দল। তাহলে আটকালো কোথায়? অভিষেক জানান, কংগ্রেস ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তারা ভাবে সেই ৫টার মধ্যে ৩টে জিতলে তারা আসন নিয়ে দরাদরিতে এগিয়ে থাকতে পারবে। বাংলায় ২টোর জায়গায় ৫টা আসন দাবি করতে পারবে। অভিষেকের কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের বিরুদ্ধে একের লড়াই এবং যৌথ বিরোধী প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই কথা শুনলে এখন ‘ইন্ডিয়া’ সরকার গড়ার বিষয়ে ভূমিকা নিতে পারত।’’

অভিষেকের মতে, আসন সমঝোতা যদি সারা দেশে সুষ্ঠু ভাবে হত, তা হলে নিশ্চিত ভাবেই পদ্মশিবিরকে বেগ দেওয়া যেত।

একা লড়ে বাংলায় ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে কটা আসন পাবে তৃণমূল? উত্তরে দলের সর্বভারতীয় সাধআরণ সম্পাদক জানান, আগের বারের থেকে বেশি। “সেটা ২৪টা হতে পারে, ৩৪টাও হতে পারে।“ তাঁর কথায়, “তৃণমূল যেখানেই লড়বে, জেতার জন্য লড়বে। ডায়মন্ড হারবারেও জেতার জন্য লড়ব, দার্জিলিঙেও জেতার জন্য লড়ব।“ নির্বাচন ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি এই বিষয়ে ঘোষণা করবেন বলে জানান তৃণমূল সাংসদ। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে অভিষেক বলেন, “বিজেপি অনেক কথা বলেছিল। প্রায় মন্ত্রিসভা ঠিক করে ফেলেছিল। কিন্তু আমি একনাগাড়ে বলে গিয়েছিলাম, তৃণমূল ২০০ পার করবে। সভা-সমিতি সর্বত্র একই কথা বলেছিলাম। ভোটে পরে দেখা গিয়েছিল, তৃণমূল জিতেছিল ২১৩টি আসন। যদিও এখন তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ২২৩।’’

তৃণমূলের সেনাপতির কথায় প্রতিটা ভোট এক এক রকমের পরিস্থিতি নিয়ে আসে। এক এক রকম রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হয়।

: আনন্দবাজার অনলাইনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন অনিন্দ্য জানা।

Previous articleপাঞ্জাব-চণ্ডীগড়ে একা লড়াই! লোকসভা ভোটে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় কেজরিওয়াল
Next articleফের কলকাঠি নাড়া শুরু পাক সেনার, বার্তা জেনারেল মুনিরের